ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২

সাইকোলজি বলছে: এই ৭টি আচরণ যার মধ্যে থাকবে, তিনিই হবেন আপনার জীবনের সুখী সঙ্গিনী

প্রকাশিত: ১৭:৩৩, ১৪ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ২০:০০, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

সাইকোলজি বলছে: এই ৭টি আচরণ যার মধ্যে থাকবে, তিনিই হবেন আপনার জীবনের সুখী সঙ্গিনী

ছবি: প্রতীকী

সুখী পরিপূর্ণ সম্পর্ক মানেই কেবল একসাথে পছন্দের গান শোনা বা প্রিয় পিজার টপিং (ছোট-ছোট বিষয়ে মিল থাকা) মিলে যাওয়া নয়। বরং সম্পর্কের প্রকৃত গভীরতা তৈরি হয় কিছু মনস্তাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য আচরণ দিয়ে, যা সাময়িক আকর্ষণকে রূপ দেয় আজীবন বন্ধনে। 

মনোবিজ্ঞানের ভিত্তিতে চিহ্নিত এমন ৭টি গুরুত্বপূর্ণ আচরণ তুলে ধরা হলো, যা কোনো নারীর মধ্যে থাকলে তা হতে পারে আপনার জীবনের সবচেয়ে পরিপূর্ণ সুখের সম্পর্কের ভিত্তি:

তিনি আপনার ব্যক্তিগত বিকাশে উৎসাহ দেন

একজন নারীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুণ হলো, তিনি যদি আপনার স্বপ্ন, আগ্রহ বা ক্যারিয়ারে সাহস জোগান। আপনি যখন নতুন কিছু শিখতে চান বা ক্যারিয়ারে ঝুঁকি নিতে চান, তখন তিনিই হন আপনার সবচেয়ে বড় সমর্থক। মনোবিজ্ঞানী কার্ল রজার্সের “Unconditional Positive Regard” ধারণার সঙ্গে এটি সম্পৃক্ত। তিনি বলেছিলেন, মানুষ তখনই সবচেয়ে ভালোভাবে বিকশিত হয়, যখন তাকে নিঃশর্তভাবে গ্রহণ সম্মান করা হয়।

তিনি সবসময় খোলামেলা কথা বলেন

সুখী সম্পর্ক গড়ে ওঠে যখন দুজনই খোলামেলা সম্মানজনকভাবে মত প্রকাশ করতে পারেন। কোনো বিষয় নিয়ে দ্বিমত হলে তা চেপে না রেখে, তিনি তা আলোচনা করেন সহানুভূতি সততার সঙ্গে। মনোবিজ্ঞানী জন গটম্যানের গবেষণা অনুযায়ী, যারা কলহের সময় শান্তভাবে কথা বলেন, তারা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হন।

তিনি সবসময় মানসিকভাবে সমর্থন দেন

সুসম্পর্কে আবেগের স্থান থাকে অপরিসীম। সঙ্গী এমন হওয়া উচিত, যিনি আপনার ভালো-মন্দ আবেগগুলো নির্দ্বিধায় গ্রহণ করেন এবং পাশে থাকবেন কোন সমালোচনা না করেই। এটি “Secure Attachment”-এর ধারণার সঙ্গে সম্পর্কিত, অর্থাৎ যে সম্পর্কের ভিত মজবুত, সেখানে মানুষ নিজেকে প্রকাশ করতে ভয় পায় না।

তিনি আপনাকে বিশ্বাস করেন এবং নিজেও বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করেন

একটি মজবুত সম্পর্কের চাবিকাঠি হলো পারস্পরিক বিশ্বাস। যখন একজন নারী আপনার সিদ্ধান্তকে সম্মান করেন, গোপন কিছু রাখেন না এবং তিনি নিজেও আপনাকে বিশ্বাস করে, তখনই তৈরি হয় গভীর সখ্যতা।মনোবিজ্ঞানী আল্টম্যান টেলরের “Social Penetration Theory” বলছে, সম্পর্ক গভীর হয় যখন উভয় পক্ষ ধাপে ধাপে নিজেদের মনের কথা ভাগাভাগি করে।

তিনি সহানুভূতিশীল এবং সহমর্মী

সহানুভূতি মানে কেবল "আমি বুঝতে পারছি" বলা নয়বরং সত্যিই অন্যের অনুভূতির ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করা। এমন একজন নারী, যিনি আপনার সুখে আনন্দ পান এবং দুঃখে আপনার কষ্ট অনুভব করেন, তিনিই সম্পর্কের প্রকৃত সৌন্দর্য। এটি “Compassionate Love”-এর ধারণার সঙ্গে সম্পর্কিত, যা ইতিবাচক মনোবিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

তিনি আপনাদের একসাথে সময় কাটানোতে গুরুত্ব দেন

একসঙ্গে ইতিবাচক অভিজ্ঞতা অর্জন করলে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়। কোনো ট্রিপে যাওয়া, নতুন রেসিপি রান্না করা, অথবা একসাথে একটি সিরিজ দেখাএমন অভিজ্ঞতা দীর্ঘ মেয়াদে ঘনিষ্ঠতা বাড়ায়। পজিটিভ সাইকোলজির মতে, সম্পর্কের মান নির্ভর করে একে অপরের সঙ্গে কীভাবে সময় কাটানো হয় তার ওপর।

তিনি হাস্যরস ইতিবাচকতা পছন্দ করেন

জীবনের টানাপোড়েনে একজন সঙ্গী যদি রসিকতা আনন্দ নিয়ে পরিস্থিতি হালকা করতে পারেন, তাহলে তা সম্পর্কের জন্য আশীর্বাদ। তিনি যদি সময়মতো হাসাতে পারেন, তা মানসিক চাপ কমায় এবং সম্পর্ককে প্রাণবন্ত করে তোলে। গবেষণায় দেখা গেছে, হাসি আমাদের শরীরেএন্ডোরফিননামের হরমোন ছাড়ে, যা মন ভালো রাখতে সাহায্য করে।

সম্পর্ক কখনো নিখুঁত হয় না, কিন্তু যদি এই ৭টি আচরণ কোনো নারীর মধ্যে দেখেনতাহলে ধরে নিতে পারেন আপনি খুবই ভাগ্যবান। তবে মনে রাখবেন, সম্পর্ক হলো দুই পক্ষের সমান অংশগ্রহণে গড়া একটি জার্নি।

তাই শুধু এমন কাউকে খুঁজে পাওয়াই যথেষ্ট নয়নিজেকেও হতে হবে এমন একজন, যিনি খোলামেলা, সহানুভূতিশীল এবং বিশ্বাসযোগ্য। তবেই সম্ভব সবচেয়ে সুখী সম্পর্ক গড়ে তোলা।

 

সোর্স: https://geediting.com/gen-the-happiest-relationship-of-your-life-will-be-with-a-woman-who-displays-these-7-behaviors-according-to-psychology/

রবিউল হাসান

×