ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১ বৈশাখ ১৪৩২

১০০ জন মিলিয়নিয়ারের সাক্ষাৎকার থেকে পাওয়া কমন ৪টি অভ্যাস যা তাদের সফলতার চাবিকাঠি

প্রকাশিত: ১৩:৩৩, ১৩ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১৩:৩৪, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

১০০ জন মিলিয়নিয়ারের সাক্ষাৎকার থেকে পাওয়া কমন ৪টি অভ্যাস যা তাদের সফলতার চাবিকাঠি

ছবি: সংগৃহীত।

পেশাগত জীবনে লেখক এবং ‘The Richer Way’ পডকাস্টের হোস্ট হিসেবে তিনি এখন পর্যন্ত ১০০ জনেরও বেশি মিলিয়নিয়ারের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন।

এই পডকাস্ট শুরু করার পেছনে তার লক্ষ্য ছিল—মানুষকে তাদের আর্থিক পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে নিতে সহায়তা করা। তিনি জানতে চেয়েছিলেন, সফল ব্যক্তিরা কীভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আবার ঘুরে দাঁড়ান এবং কীভাবে তারা নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই তৈরি করেন।

এত এত উদ্যোক্তা, নির্বাহী ও শিল্প-নেতার সঙ্গে কথা বলে তিনি বুঝতে পেরেছেন—তাদের আলাদা করে তোলে কিছু সাধারণ গুণাবলি। এরা আত্মবিশ্বাসী, নেতৃত্বদানে দক্ষ এবং নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে অত্যন্ত মনোযোগী। ভাগ্যের অপেক্ষায় না থেকে তারা নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই গড়ে তোলেন।

এই চারটি অভ্যাস প্রায় সবার মধ্যেই লক্ষ্য করেছেন, যা তাদের সাফল্যের মূলভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে বলে মনে কারেন।

১. ব্যর্থতা ও অনিশ্চয়তাকে আলিঙ্গন করা

রিচার্ড ব্র্যানসন, ভার্জিন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা, বলেন, “নিয়ম মেনে হাঁটতে শেখা যায় না। শেখা যায় পড়ে গিয়ে, বারবার চেষ্টা করে।”

বারবারা করকোরান, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী, মনে করেন—নিজেকে প্রশ্ন না করে আত্মবিশ্বাস নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া উচিত। ভয় কাটাতে তিনি প্রায়ই “ফেইক ইট টিল ইউ মেইক ইট” দর্শন মেনে চলেন।

কিম কিওসাকি, Rich Dad কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা, বলেন—প্রথম চাকরি হারানোর পরই তিনি উপলব্ধি করেন, অন্যের অধীনে নয়, বরং নিজের জন্য কিছু গড়ার মধ্যেই রয়েছে তার প্রকৃত সামর্থ্য।

২. কঠোর নিয়মানুবর্তিতা অনুসরণ করা

জাসপ্রীত সিং, Briefs Media-এর CEO ও Minority Mindset-এর প্রতিষ্ঠাতা, বলেন, “সফল হতে চাইলে এমন সময়েও কাজ করতে হয়, যখন ইচ্ছা করে না। সবার আগে কাজে নামতে হয়, আর সবার পরে উঠে আসতে হয়।”

মার্ক জে. কোহলার, কর ও আইন বিশেষজ্ঞ, মনে করেন—অভিজ্ঞতা বা জ্ঞানের ঘাটতি কঠোর পরিশ্রম ও সদিচ্ছার মাধ্যমে সহজেই পূরণ করা সম্ভব।

৩. অতীতকে ভবিষ্যতের পথে বাধা হতে না দেওয়া

ডেরিক ফে ও লিনেট খালফানি-কক্স উভয়েই তাদের কঠিন শৈশবের স্মৃতি অকপটে শেয়ার করেছেন। ডেরিক বলেন, “আমার জীবনের যেসব ঘটনা আমাকে একসময় ভেঙে দিয়েছিল, সেগুলিই পরে আমাকে নতুনভাবে গড়তে সাহায্য করেছে।”

লিনেট বলেন, “আমার বাবা ছিলেন জুতো পালিশকারী এবং মা ক্যাশিয়ার ও সেক্রেটারি। আমরা ছিলাম পাঁচ বোন—পরিবারে সবসময় টানাটানি লেগেই থাকত।”

আজ তারা দু’জনেই সফল ও স্বনির্ভর এবং অন্যদের আর্থিকভাবে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করছেন।

৪. চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া সাহসিকতার সঙ্গে

সুজ অরম্যান, স্বনির্মিত মিলিয়নিয়ার ও আর্থিক উপদেষ্টা, বলেন, “ভয়, লজ্জা ও রাগ—এই তিনটি জিনিসই মানুষকে তার প্রকৃত সম্ভাবনা থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।”

২০২০ সালে একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা মোকাবিলা করার সময় তিনি উপলব্ধি করেন, ভয় জয় করতে না পারলে জীবন থমকে যেতে পারে। সেই অভিজ্ঞতা তাকে আরও দৃঢ় করে তোলে। তিনি বলেন, “যখন আপনি ভয়কে অতিক্রম করেন, তখনই সত্যিকার অর্থে বড় হয়ে উঠতে পারেন।”

এই চারটি অভ্যাস—ব্যর্থতাকে স্বীকার করা, কঠোর নিয়ম মেনে চলা, অতীতকে পেছনে ফেলে সামনে এগোনো, এবং সাহসের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ—এই সবই মিলিয়নিয়ারদের সাধারণ বৈশিষ্ট্য। এসব গুণ আপনাকেও সফলতার পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

সায়মা ইসলাম

×