
ছবি: সংগৃহীত
সুন্দর ও স্বাস্থ্যবান চুল কেবল জিনগত গুণ কিংবা দামি পার্লারের ট্রিটমেন্টে নির্ভর করে না—এটি নির্ভর করে প্রতিদিনের যত্ন ও অভ্যাসের ওপর। চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত সুস্থ রাখতে হলে চাই সচেতনতা, নিয়মিত যত্ন ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারা। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিনের কিছু সহজ কিন্তু কার্যকর অভ্যাস গড়ে তুললেই চুলের সৌন্দর্য ও স্বাস্থ্য দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকে।
চলুন জেনে নিই, দৈনন্দিন জীবনে কোন ৫টি অভ্যাস চুলের সুস্থতায় দারুণ কার্যকর:
১. স্ক্যাল্প কেয়ারে গুরুত্ব দিন: গোড়া থেকেই শুরু
সুস্থ চুলের জন্য চাই সুস্থ স্ক্যাল্প। যেভাবে স্বাস্থ্যবান গাছের জন্য উর্বর মাটি প্রয়োজন, ঠিক তেমনি চুলের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন পরিষ্কার ও পুষ্টিকর স্ক্যাল্প। খুশকি, চুলকানি ও প্রদাহ এড়াতে স্ক্যাল্পের যত্ন জরুরি।
যা করবেন প্রতিদিন:
প্রতিদিন ২–৫ মিনিট আঙুলের ডগা বা স্ক্যাল্প ব্রাশ দিয়ে হালকা করে মাথার ত্বক ম্যাসাজ করুন। এতে রক্তসঞ্চালন বাড়ে ও চুলের গোড়া সক্রিয় হয়। মাথার ত্বক শুকনা বা খুশকিযুক্ত হলে, জোজোবা বা রোজমেরি তেল ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত শ্যাম্পু করা থেকে বিরত থাকুন। এতে স্ক্যাল্পের প্রাকৃতিক তেল উঠে যায়। সুলফেট-মুক্ত, মৃদু শ্যাম্পু ব্যবহার করুন ও প্রয়োজন অনুযায়ী চুল ধুতে থাকুন।
২. ভেতর থেকে চুলকে পুষ্টি দিন
আপনার খাদ্যাভ্যাসের ওপর অনেকটাই নির্ভর করে চুলের স্বাস্থ্য। প্রোটিন, আয়রন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন এ, সি, ডি ও ই—এই পুষ্টিগুলো চুলের ঘনত্ব, গঠন ও বৃদ্ধি বজায় রাখতে সাহায্য করে।
যা করবেন প্রতিদিন:
ডিম, গ্রিক দই, ডাল ও বাদামজাতীয় প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খান। পালং শাক, বেরি ও বীজ জাতীয় খাদ্য যুক্ত করুন যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিনে সমৃদ্ধ। প্রচুর পানি পান করুন। পানি স্বল্পতায় চুল রুক্ষ ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে মাল্টিভিটামিন বা হেয়ার সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন।
৩. চুল আঁচড়ানো ও হ্যান্ডলিংয়ে হোন কোমল
চুলের অনেক ক্ষতি হয় দৈনন্দিন ছোটখাটো আচরণে—যেমন আঁচড়ানো, শুকানো বা স্টাইলিংয়ের সময়। একটু সতর্ক হলেই চুলে ভাঙা ও ক্ষয় কমানো সম্ভব।
যা করবেন প্রতিদিন:
চুল আঁচড়ানোর সময় নিচের দিক থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে ওপরে উঠুন। এতে টান পড়ে না। ভেজা অবস্থায় চুল বেশি ভঙ্গুর হয়, তাই যতটা সম্ভব তখন চুল আঁচড়ানো এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে ওয়েট ব্রাশ ও ডিট্যাংলার ব্যবহার করুন। হিট টুল (স্ট্রেইটনার, কার্লার) ব্যবহার করলে অবশ্যই হিট প্রোটেকশন স্প্রে ব্যবহার করুন। সিল্ক বা সাটিনের বালিশের কভার ব্যবহার করুন, এতে ঘুমের সময় ঘর্ষণ কম হয় এবং চুল ভেঙে যায় না।
এই ছোট ছোট অভ্যাসগুলো নিয়মিত অনুসরণ করলে ধীরে ধীরে চুলে দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবে। সুস্থ চুলের জন্য যত্ন নিন ভিতর থেকে বাইরে পর্যন্ত—অভ্যাসে হোক আপনার চুলের সৌন্দর্য।
ফারুক