
ছবি: সংগৃহীত
কোষ্টকাঠিন্য বর্তমানে একটি কমন সমস্যা। নিয়মিত পেট পরিষ্কার না হলে শরীরে দেখা দেয় অস্বস্তি ও নানা রকম রোগব্যাধি। যেমন পাইলস, এনালফিশার, মলদ্বার বের হয়ে আসা, মানসিক চাপ বৃদ্ধি, প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া, খাদ্যনালীর সমস্যা এমনকি আলসার বা ক্যান্সারও হতে পারে। কোষ্টকাঠিন্য থেকে মস্তিষ্কে টিউমার ও কোলন ক্যান্সারও হতে পারে।
কোষ্টকাঠিন্যের মূল কারণ হলো পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া, আঁশযুক্ত খাবার ও শাক সবজি কম খাওয়া, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, কম চলাফেরা করা, অন্ত্রনালিতে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, মস্তিষ্কে টিউমার, রক্তক্ষরণ, দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা ও কিছু ক্রনিক রোগ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো থাইরয়েডের সমস্যা, কিডনির সমস্যা, অনিয়মিত জ্বর।
কিছু ঘরোয়া উপায়ে এই ধরনের সমস্যা থেকে স্থায়ী মুক্তি পাওয়া যায়। এগুলো হলো:
১. আপনার জন্য উপযুক্ত খাদ্যতালিকা জানা জরুরি। নিয়মিত এই তালিকা মেনে খাবার খেলে এই সমস্যা দূর করা যাবে।
২. সকলে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি ধীরেধীরে পান করুন। এর আধা ঘন্টা পর এক চা চামচ কাঁচা তিল চিবিয়ে খান। তারপর একটি আপেল ও ১০০ গ্রাম গাজর ভালোভাবে চিবিয়ে খান।
আপেল ও আপেলের খোসায় সেলুলোজ বা ইনসোলোবল ফাইবার রয়েছে। যা হজম প্রক্রিয়ায় সহায়ক। এটি পরিপাকতন্ত্রের কার্যকারিতাকে ঠিক রাখে। প্রতিদিন একটি করে আপেল খেলে দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে যাবে।
গাজরে রয়েছে প্রাকৃতিক ডায়েটরি ফাইবার যা কোষ্টকাঠিন্য দূর করতে কার্যকরি। প্রায় ১০০ গ্রাম গাজরে ১.২ গ্রাম ফাইবার থাকে। যারা গাজর চিবিয়ে খেতে পারেন না, তারা ব্লেন্ড করে খেতে পারেন।
৩. সকালে পানি, আপেল ও গাজার খাওয়ার পর নাস্তা করুন।
৪. দুপুরে খাওয়ার আগে দুটি পাকা কলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। কলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও পটাসিয়াম রয়েছে যা অন্ত্রের কার্যকারিতাকে বাড়ায়।
৫. দুপুরের খাবারে লাল চালের ভাত খাওয়ার চেষ্টা করুন। প্রতি ১ কাপ লাল চালের ৩.৫ গ্রাম ফাইবার থাকে, যা কোষ্টকাঠিন্য নিরাময়ে কার্যকরী।
৬. লাল মাংস ও চর্বি এড়িয়ে চলুন। খাবারে মাছ ও শাক সবজি বেশি রাখুন।
৭. খাবারের ৩০ মিনিট পর ১০০ গ্রাম টকদই খান। টকদইয়ে থাকে প্রোবায়টিক যা হজমের সমস্যা দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী। একমাস নিয়মিত টকদই গেলে হজম জনিত সমস্যা চিরতরে দূরে হয়ে যায়।
৮. খাবারে শসার সালাদ রাখুন।
৯. রাতে খাবারের আধাঘণ্টা পরে একগ্লাস উষ্ণ পানিতে মধু ও আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করতে পারেন। ডায়াবেটিস রোগীরা মধু এড়িয়ে চলুন। এতে পরিপাকতন্ত্র ভালো থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
এই নিয়ম অনুযায়ী সাতদিন খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
মায়মুনা