
ছবি: সংগৃহীত।
প্রাকৃতিক পরিবেশে সাপ থাকা স্বাভাবিক হলেও, নিজের বাড়ির আঙিনা বা বাগানে সাপের আনাগোনা নিশ্চয়ই কেউই চায় না। রাসায়নিক সাপ তাড়ানোর স্প্রে ব্যবহার না করেও কিছু প্রাকৃতিক উপায়ে সাপ দূরে রাখা যায়। প্রকৃতি নিজেই আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে কিছু গাছ, যেগুলোর গন্ধ বা রাসায়নিক উপাদান সাপদের জন্য বিরক্তিকর। চলুন জেনে নিই এমন ১০টি সাপ-তাড়ানো গাছ, যেগুলো আপনার আঙিনায় সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি সাপের উপদ্রব থেকেও রক্ষা করবে।
১. লেবুজাতীয় গাছ (Lemongrass)
লেমনগ্রাসের তীব্র গন্ধ সাপ সহ্য করতে পারে না। এতে থাকা সাইট্রোনেলা উপাদান সাপ দূরে রাখতে সাহায্য করে। এটি সহজে জন্মায় এবং বাগানের শোভাও বাড়ায়।
২. গাঁদা ফুল (Marigold)
গাঁদা ফুলের গন্ধ ও মাটিতে এর মূলের নির্গত রাসায়নিক পদার্থ অনেক কীটপতঙ্গ ও সাপের জন্য বিরক্তিকর। এটি একটি কার্যকরী প্রাকৃতিক প্রতিরোধক।
৩. তুলসী (Holy Basil)
তুলসী শুধুমাত্র ধর্মীয় বা ভেষজ দৃষ্টিকোণেই নয়, এর গন্ধও সাপদের অপছন্দের। বাড়ির উঠোন বা জানালার পাশে তুলসী গাছ লাগানো সাপ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।
৪. পেঁয়াজ ও রসুন (Onion & Garlic)
এই দুটি উপাদান থেকে নির্গত সালফারযুক্ত গন্ধ সাপকে তাড়াতে কার্যকর। গাছ হিসেবে লাগানো না গেলেও এগুলো বাগানের আশেপাশে ছড়িয়ে রাখলে সাপ দূরে থাকে।
৫. স্নেক প্ল্যান্ট (Snake Plant)
নাম শুনে বিভ্রান্ত হবেন না। এই গাছ সাপ তাড়ায় না ঠিকই, তবে সাপেরা এর ধারালো পাতার কারণে এর আশেপাশে আসতে চায় না। ঘর বা বারান্দায় রাখার জন্যও উপযুক্ত।
৬. মিন্ট বা পুদিনা (Mint)
পুদিনার তীব্র ঘ্রাণ সাপদের কাছে অপছন্দনীয়। এটি বাগানে রোপণ করলে শুধু সাপ নয়, অন্যান্য কীটপতঙ্গও দূরে থাকবে।
৭. ভার্বেনা (Wormwood বা Artemisia)
এই গাছের গন্ধ সাপের জন্য অত্যন্ত বিরক্তিকর। এর পাতা থেকে নির্গত তীব্র সুগন্ধ সাপ দূরে রাখতে সাহায্য করে।
৮. ক্যাকটাস (Cactus)
ক্যাকটাসের কাঁটা সাপদের চলাফেরার পথে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে সাপেরা সাধারণত এমন গাছের পাশ দিয়ে চলাফেরা করতে চায় না।
৯. আকন্দ গাছ (Calotropis)
এই উদ্ভিদের দুধের মতো সাদা রস ও গন্ধ সাপ সহ্য করতে পারে না। তবে এটি বিষাক্ত হওয়ায় সতর্কতার সাথে লাগানো উচিত।
১০. আলোভেরা (Aloe Vera)
অ্যালোভেরা গাছের তীক্ষ্ণ পাতার গঠন ও গন্ধ সাপের জন্য বিরক্তিকর। এছাড়া এটি ওষুধি গাছ হিসেবেও বহুল পরিচিত।
প্রাকৃতিক উপায়ে সাপ তাড়ানোর এই গাছগুলো শুধু আপনার আঙিনাকে সুরক্ষিত রাখবে না, বরং পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যকর একটি পরিবেশও গড়ে তুলবে। তাই রাসায়নিকের পরিবর্তে প্রকৃতির কাছেই ফিরুন, আর নিজের ও পরিবারের জন্য তৈরি করুন নিরাপদ এক পরিসর।
নুসরাত