
ছবিঃ সংগৃহীত
মানুষের মনোভাব বোঝা চিরকালই কঠিন। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন ১৫টি প্রেরণার কথা, যেগুলো মানুষের আচরণ ও প্রতিক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। এই প্রেরণাগুলো বোঝার মাধ্যমে আরও দক্ষ বক্তা, নেতা ও দলনেতা হওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
গবেষণাটি বলছে, মানুষ সব সময় এক বা একাধিক অভ্যন্তরীণ চালনার (drive) দ্বারা প্রভাবিত হয়। সুতরাং, কোনো শ্রোতাদের সামনে দাঁড়ালে বা কারো সঙ্গে যোগাযোগের সময় 'একই পদ্ধতি সবার জন্য কার্যকর'—এই ধারণা ভুল। বক্তাকে প্রথমেই বুঝে নিতে হবে, শ্রোতারা কোন প্রেরণায় চালিত হচ্ছে।
মানুষ কখনো ক্ষুধার্ত, গর্বিত, আশাবাদী বা হতাশ হতে পারে; কখনো বা হাসিখুশি, অভিমানী, রাগান্বিত কিংবা প্রেমে মগ্ন। এই আবেগগুলোর প্রতিটির পেছনে কোনো না কোনো প্রেরণা কাজ করে। গবেষণাটি ১৫টি প্রধান প্রেরণা চিহ্নিত করেছে:
হর্ড (সঞ্চয়), তৈরি, ভয়, ঘৃণা, ক্ষুধা, আরাম, কামনা, আকর্ষণ, ভালবাসা, লালন-পালন, কৌতূহল, খেলা, সংযুক্তি, মর্যাদা, এবং ন্যায়বিচার।
এই প্রেরণাগুলোর মধ্যে কিছু পরস্পরের সঙ্গে জোরালোভাবে সম্পর্কিত। যেমন, ভালবাসা ও লালন-পালন প্রায়শই একসঙ্গে কাজ করে। আবার খেলাধুলা ও মর্যাদা শিশুদের মধ্যে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত, যা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভয় ও আরামের মতো প্রেরণায় রূপ নেয়।
সংযোগের উপায় কী?
গবেষণা পরামর্শ দেয়, শ্রোতার বর্তমান আবেগ-অবস্থাকে চিনে নিয়ে সেখান থেকে শুরু করাই উত্তম। প্রথমেই তাদের আবেগ বদলাতে গেলে সংযোগ তৈরি হয় না। বরং, সংযোগ গড়ে তুলতে পারলেই শ্রোতা পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত হয়। বক্তার প্রতি শ্রোতার প্রত্যাশা থাকে—তাকে কিছু শেখাবে, অনুপ্রাণিত করবে, হয়তো জীবন বদলাবেও।
আবার কিছু প্রেরণা একে অপরের বিপরীতমুখী। যেমন, ভয় ও কৌতূহল। কারো মধ্যে যদি ভয় কাজ করে, তাকে কৌতূহল জাগিয়ে সেই ভয় কাটিয়ে তোলা যায়।
বয়সভেদে প্রেরণার পার্থক্যও গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের মধ্যে 'খেলা' ও 'মর্যাদা'র গুরুত্ব বেশি, আর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা 'ভয়' ও 'আরাম'-এর দিকে ঝুঁকে পড়ে। কাজেই, বক্তাকে তার শ্রোতার বয়স ও প্রেক্ষাপট মাথায় রেখে যোগাযোগ কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।
এই ১৫টি মানব প্রেরণাকে মাথায় রেখে কেউ যদি তার বার্তা তৈরি করে, তবে তা হবে আরও প্রভাবশালী, মানবিক এবং কার্যকর। গবেষকরা মনে করছেন, এই অন্তর্দৃষ্টি শুধু বক্তৃতা নয়, বরং যেকোনো ধরনের মানবিক যোগাযোগকে উন্নত করতে সহায়তা করবে।
রিফাত