
ছবিঃ সংগৃহীত
বর্তমান পেশাগত জীবনে অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করে, কঠোর পরিশ্রম মানেই দীর্ঘ সময় কাজ, বিশ্রামহীন জীবন এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপ। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সফলতা আসলে মানসিক চাপ ও পরিশ্রান্তির নয়, বরং সুস্বাস্থ্য ও সঠিক সময় ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভরশীল।
অনেকেই মনে করেন, “গ্রাইন্ড” কালচারে অংশগ্রহণ করলেই সফলতা পাওয়া যায়—দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে কাজ করা, রাত জেগে প্রকল্প শেষ করা, এমনকি মাথাব্যথা উপেক্ষা করেও এগিয়ে চলা। অথচ গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘমেয়াদে এই অভ্যাসগুলোই মানুষকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে ফেলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রকৃত উচ্চপ্রাপ্তির মানুষরা নিজেদের সময় ও শক্তিকে সুরক্ষিত রাখেন। তারা জানেন, সুস্থ শরীর এবং বিশ্রামপ্রাপ্ত মস্তিষ্ক দ্রুত ও কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কাজের চাপ থাকলেও, যদি শরীর ও মন ভালো থাকে, তাহলে সেই চাপ সহজেই সামাল দেওয়া যায়।
কেন স্বাস্থ্যই সফলতার মূল চাবিকাঠি?
১. সফলতা হওয়া উচিত আনন্দময়:
যতটা না পরিশ্রম, তার চেয়ে বেশি দরকার শরীর ও মনের স্বস্তি। ক্লান্তি নিয়ে শীর্ষে পৌঁছালেও, সেই অর্জনের আনন্দ কোথাও হারিয়ে যায়।
২. চাপের দাস নয়, নিয়ন্ত্রক হওয়া সম্ভব:
নিয়মিত ঘুম, স্বাস্থ্যকর খাবার ও হালকা ব্যায়াম চাপের প্রভাব হ্রাস করে, মস্তিষ্ককে করে সমস্যার সমাধানে দক্ষ।
৩. নিজের জীবনের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে:
যখন স্বাস্থ্য উপেক্ষিত হয়, তখন কাজের মধ্যেই ক্লান্তি, অসুস্থতা ও মনোযোগহীনতা দেখা দেয়। স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিলে প্রতিদিনের কার্যক্ষমতা থাকে সুসংহত।
৪. ধন-সম্পদের চেয়ে স্বাস্থ্য বড়:
অসুস্থ শরীরে বড় সম্পদেরও কোনো মূল্য থাকে না। প্রকৃত সফলতা মানে সুখে ও সুস্থভাবে জীবনযাপন।
৫. দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় স্বাস্থ্য অপরিহার্য:
স্থায়ী সফলতা পেতে হলে শরীর-মন ঠিক রাখা আবশ্যক। ক্ষণস্থায়ী অর্জনের জন্য স্বাস্থ্য ত্যাগ কখনোই সুফল আনে না।
৬. স্মার্ট কাজ মানেই স্বাস্থ্যবান থাকা:
অযথা ব্যস্ত থাকা নয়, বরং গুরুত্ব অনুযায়ী কাজ করে নিজের সুস্থতার জন্য সময় বের করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
স্বাস্থ্যবান থেকে কাজ করলে ভুল কম হয়, সিদ্ধান্ত হয় সঠিক, সময়ের অপচয় কমে এবং কর্মদক্ষতা বাড়ে। প্রতিদিন ছোট ছোট স্বাস্থ্যকর অভ্যাস যেমন—খাবার সময়ে খাওয়া, বিশ্রামের সময় বিশ্রাম, হালকা হাঁটা—এইসবই গড়ে তোলে এক টেকসই সফল জীবনের ভিত।
সফলতা মানে কেবল বেশি কাজ নয়, বরং নিজের যত্ন নেওয়ার মাঝেই আছে আসল জয়।
রিফাত