
ছবি: প্রতীকী
পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটি (সহশিক্ষা কার্যক্রম) আছে যা শুধু মজার নয়, বরং আমাদের বুদ্ধিমত্তা, মনোযোগ, স্মৃতিশক্তি এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা অনেক বাড়িয়ে তোলে। নিচে এমন ৮টি কার্যকলাপ দেওয়া হলো যেগুলো নিয়মিত চর্চা করলে মস্তিষ্ক আরও সক্রিয় ও স্মার্ট হয়ে ওঠে-
১. নতুন কোনো বাদ্যযন্ত্র শেখা
যেমন পিয়ানো, গিটার, তবলা বা বাঁশি— যে কোনো বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখা মানেই মস্তিষ্কের জন্য জিম করার মতো।
- এটি একইসাথে মনোযোগ, হাত-চোখের সমন্বয় এবং শ্রবণশক্তি উন্নত করে।
- একাধিক স্কিল একসাথে কাজ করায় ব্রেইনের নিউরনগুলো আরও শক্তিশালী হয়, যা স্মৃতিশক্তি এবং রিফ্লেক্স বাড়ায়।
২. নিয়মিত বই পড়ার অভ্যাস
বই শুধু গল্প বা তথ্য দেয় না— এটি আপনার চিন্তাশক্তিকে বাড়ায় এবং জগৎ সম্পর্কে জানার দিগন্ত খুলে দেয়।
- ভোকাবুলারি বাড়ায়, নতুন ধারণা শেখায়।
- ব্রেইনের সংযোগক্ষমতা (Brain Connectivity) উন্নত করে।
- মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘ সময় মনোযোগী থাকতে শেখায়।
৩. পাজল বা ধাঁধা সমাধান করা
সুডোকু, রুবিক্স কিউব, জিগ-সো পাজল ইত্যাদি খেলায় অংশ নিলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ে।
- শর্ট-টার্ম মেমোরি উন্নত হয়।
- যুক্তিভিত্তিক চিন্তাভাবনা ও স্ট্র্যাটেজি তৈরি করার অভ্যাস গড়ে ওঠে।
- ধৈর্য ও মনঃসংযোগ বাড়ে।
৪. নিটিং বা বুনন শেখা
নিটিং (বুনন) কেবল সৃজনশীলতা নয়, এটি একটি মানসিক ব্যায়ামও।
- সূক্ষ্ম কাজ শেখায় যা হাত-চোখের সমন্বয় উন্নত করে।
- নির্দিষ্ট প্যাটার্ন অনুসরণ করার ফলে পরিকল্পনা করার ও ধাপে ধাপে কাজ করার অভ্যাস তৈরি হয়।
- স্ট্রেসও (মানসিক চাপ) অনেক কমে যায়।
৫. নতুন ভাষা শেখা
একাধিক ভাষা জানলে শুধু যোগাযোগের সুযোগই বাড়ে না, বরং মস্তিষ্কও আরও যুক্তিবাদী হয়।
- মাল্টিটাস্কিং এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত হয়।
- সমস্যা সমাধানের দক্ষতা ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা বাড়ে।
- এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় রূপান্তর করতে গিয়ে মস্তিষ্ক ক্রমাগত অনুশীলন করে।
৬. ডায়েরি বা জার্নাল লেখা
নিজের অনুভূতি ও চিন্তা-চেতনা লেখার মাধ্যমে মস্তিষ্ক গুছিয়ে চিন্তা করতে শেখে।
- আত্মপর্যালোচনা ও আত্ম-সচেতনতা বাড়ে।
- আবেগকে বোঝা ও নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা বাড়ে।
- লেখার সময় অর্গানাইজড ও অ্যানালিটিক্যাল হওয়া শেখা যায়।
৭. বাগান করা
বাগান করা শুধু প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার উপায় নয়, এটা মনকে প্রশান্ত ও মনোযোগী রাখে।
- গাছের যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে দায়িত্ববোধ বাড়ে।
- পর্যবেক্ষণ ও ধৈর্য শেখায়।
- মাটি, জল, আলো— সবকিছু সম্পর্কে জানার ফলে সমস্যার সমাধান করার কৌশল তৈরি হয়।
৮. প্রতিদিনের শরীরচর্চা
শরীর ভালো থাকলে মস্তিষ্কও ভালো থাকে।
- রক্তপ্রবাহ বাড়ায়, যার ফলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন ও পুষ্টি ভালোভাবে পৌঁছায়।
- ঘুম ভালো হয়, স্ট্রেস (মানসিক চাপ) কমে।
- মনোযোগ, ক্ল্যারিটি (স্পষ্ট চিন্তা) ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা উন্নত হয়।
শুধু একাডেমিক সাফল্য নয়, একটি বুদ্ধিদীপ্ত ও পরিপূর্ণ জীবন গঠনের জন্য এই কার্যকলাপগুলোকে জীবনের অংশ করে তোলা দরকার। প্রতিদিন অল্প একটু সময় দিলেও দীর্ঘমেয়াদে এগুলোর প্রভাব অসাধারণ হতে পারে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
রাকিব