
ছবি: সংগৃহীত।
অন্যের মনোভাব বা চিন্তাভাবনা বোঝা সবসময়ই সহজ কাজ নয়। তবে কিছু কার্যকর কৌশল প্রয়োগ করে মানুষের অভ্যন্তরীণ অনুভূতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া সম্ভব। এটি কোনো জাদুবিদ্যা নয়; বরং এটি মনোবিদ্যার আলোকে গঠিত পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণভিত্তিক একটি দক্ষতা। নিচে মন বোঝার ৭টি কার্যকর কৌশল তুলে ধরা হলো—
১. শরীরের ভাষা পর্যবেক্ষণ
মানুষের অঙ্গভঙ্গি, চোখের দৃষ্টি, মুখের অভিব্যক্তি ও দাঁড়ানোর ভঙ্গি অনেক কিছু প্রকাশ করে। কেউ যদি বারবার চোখ ঘোরায় বা হাত পেছনে রাখে, তা তার অস্বস্তির ইঙ্গিত হতে পারে।
২. কথা বলার ধরন বিশ্লেষণ
কোনো ব্যক্তি কীভাবে কথা বলে, তার শব্দচয়ন, গতি ও উচ্চারণ বিশ্লেষণ করেও তার মনের অবস্থা বোঝা যায়। অতিরিক্ত দ্রুত কথা বলা হতে পারে উত্তেজনার লক্ষণ, আর দীর্ঘ নীরবতা প্রকাশ করতে পারে উদ্বেগ বা অস্বস্তি।
৩. মুখাবয়ব ও চোখের যোগাযোগ
মুখের অভিব্যক্তি যেমন হাসি, বিরক্তি বা চিন্তিত চেহারা তাৎক্ষণিক অনুভূতি প্রকাশ করে। পাশাপাশি, চোখের ভাষাও অনেক কিছু বলে—দীর্ঘসময় চোখে চোখ রাখা আগ্রহের ইঙ্গিত হতে পারে, আর চোখ এড়িয়ে চলা হতে পারে অনাগ্রহ বা লজ্জার প্রতীক।
৪. সামাজিক আচরণ পর্যবেক্ষণ
কেউ কিভাবে অন্যদের সঙ্গে মিশে, মজা করে, বিরক্ত হয় কিংবা প্রতিক্রিয়া দেয়, তা তার মনোভাবের প্রতিফলন হতে পারে। আচরণে হঠাৎ পরিবর্তন, অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করতে পারে।
৫. অভ্যাস ও পছন্দ বিশ্লেষণ
কোনো ব্যক্তি কী ধরনের বই পড়ে, কোন গান শোনে কিংবা কী ধরনের বিনোদন ভালোবাসে, তা তার ব্যক্তিত্ব ও মানসিক অবস্থা বুঝতে সহায়ক হতে পারে।
৬. কথাবার্তা মনোযোগ দিয়ে শোনা
ব্যক্তির বলা কথাগুলো গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনলে তার ভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি ও অন্তর্নিহিত অনুভূতির ছায়া পাওয়া যায়। কখনো কখনো কথার মাঝের থেমে যাওয়া বা দোলাচল মনের দ্বিধা প্রকাশ করে।
৭. অতীত অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নেওয়া
মানুষের অতীত জীবনের ঘটনা, সংগ্রাম বা অর্জন তার বর্তমান মনোভাব ও আচরণে প্রভাব ফেলে। তাই কারো অতীত জানলে তার বর্তমান অবস্থাকে আরও ভালোভাবে অনুধাবন করা যায়।
এই ৭টি কৌশল ব্যবহার করে অন্যের মনের ভাব বা অভ্যন্তরীণ অনুভূতি সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া সম্ভব। তবে মনে রাখতে হবে, প্রতিটি মানুষ আলাদা এবং নির্দিষ্ট প্রেক্ষাপটে তাদের মনোভাব পরিবর্তিত হতে পারে। তাই সহানুভূতিশীল মনোভাব ও সংবেদনশীল বিশ্লেষণই হতে পারে অন্যের মন বোঝার প্রকৃত চাবিকাঠি।
সায়মা ইসলাম