
ছবি: সংগৃহীত
সুখী দাম্পত্য জীবন হঠাৎ করে গড়ে ওঠে না—এর জন্য সময়, পরিশ্রম এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা প্রয়োজন। প্রতিটি দম্পতি আলাদা হলেও, দীর্ঘস্থায়ী ও সুখী সম্পর্কে থাকা মানুষদের মধ্যে কিছু অভ্যাস প্রায়ই মিলিয়ে দেখা যায়। এসব অভ্যাস কোনো বড় আয়োজন নয়, বরং ছোট ছোট প্রতিদিনকার কাজ, যা ধীরে ধীরে সম্পর্কের বন্ধন ও আবেগীয় ঘনিষ্ঠতা মজবুত করে। নিচে তেমনই পাঁচটি সাধারণ অভ্যাস তুলে ধরা হলো:
খোলামেলা ও আন্তরিক যোগাযোগ বজায় রাখা: ব্যস্ত সময়সূচি থাকার পরও সুখী দম্পতিরা একে অপরের সঙ্গে খোলামেলা ও সৎভাবে যোগাযোগ করার গুরুত্ব বোঝেন। তাঁরা শুধু দৈনন্দিন কাজ বা সময়সূচি নিয়েই কথা বলেন না, বরং নিজেদের অনুভূতি, স্বপ্ন, দুশ্চিন্তা ও আশা ভাগাভাগি করেন। শুধু বলাই নয়, তাঁরা মন দিয়ে একে অপরের কথা শোনেনও। নিয়মিত একে অপরের খোঁজ নেওয়ার মাধ্যমে তাঁরা সংযোগ বজায় রাখেন, এমনকি দূরে থাকলেও।
একসঙ্গে মানসম্পন্ন সময় কাটানোকে গুরুত্ব দেওয়া: আজকের দ্রুতগতির জীবনে অনেকেই ধীরে ধীরে একে অপর থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। তবে যাঁরা সুস্থ ও সুখী দাম্পত্যে আছেন, তাঁরা একে অপরের সঙ্গে সময় কাটানোকে সচেতনভাবে গুরুত্ব দেন। এটি কোনো বিলাসবহুল ডেট না-ও হতে পারে—প্রতিদিন সকালের বা সন্ধ্যার চায়ের সময় একসঙ্গে বসা, হাঁটতে যাওয়া, কিংবা একসঙ্গে ঘরের কাজ করাও হতে পারে মানসম্পন্ন সময়। মূল বিষয়টি হলো, একে অপরকে উপস্থিতি ও মনোযোগ দেওয়া।
ক্ষুদ্র ঝগড়া ভুলে ক্ষমা করে দেওয়া: কোনো সম্পর্কই নিখুঁত নয়। ভুল, ভুল বোঝাবুঝি, বা আঘাত লাগার ঘটনাও ঘটে। তবে সুখী দম্পতিরা একসঙ্গে সমস্যা সমাধানের পথ খোঁজেন। তাঁরা একে অপরের বিরুদ্ধে নয়, বরং সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করেন। ছোটখাটো ভুল বা রাগ না পুষে, তাঁরা বারবার একে অপরকে ক্ষমা করেন। কারণ, সুখী সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে ‘ঠিক’ থাকার চেয়ে ‘শান্তি’ বেছে নেওয়াটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা একে অপরের ভুল থেকে শেখেন এবং নিজেকে আরও ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন।
একে অপরকে কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা জানানো: সুখী দম্পতিরা একে অপরের সবচেয়ে বড় সমর্থক। তাঁরা ছোট বড় সব সাফল্য উদ্যাপন করেন এবং একে অপরকে গুরুত্বপূর্ণ অনুভব করিয়ে দেন। তাঁরা ‘ধন্যবাদ’ বা ‘ভালোবাসি’ বলা, হঠাৎ করে ফুল দেওয়া কিংবা কোনো কাজে সাহায্য করার মতো ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে ভালোবাসা প্রকাশ করেন। এসব ছোট হলেও, এগুলো সম্পর্কে উষ্ণতা ও ভালোবাসা যোগ করে।
নিজস্ব পরিচয় বজায় রেখে ব্যক্তিগত উন্নয়নে মনোযোগ দেওয়া: একটি সুস্থ সম্পর্ক তখনই গড়ে ওঠে, যখন তাতে দুজন ‘সম্পূর্ণ’ মানুষ থাকে। সুখী দম্পতিরা একে অপরের সঙ্গে সময় কাটাতে যেমন ভালোবাসেন, তেমনি একা সময় কাটানোতেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তাঁরা ব্যক্তিগত আগ্রহ, লক্ষ্য ও বন্ধুত্ব বজায় রাখেন, নিজের উন্নয়ন ঘটান এবং সেই সঙ্গে যৌথভাবে সম্পর্কের উন্নতিও করেন। তাঁরা সম্পর্কে হারিয়ে যান না; বরং একে অপরের পাশে থেকে নিজ নিজ পথে এগিয়ে চলেন।
শহীদ