ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ চৈত্র ১৪৩১

মাস্ক ছাড়া বাইরে যান ? শরীরে বাসা বাঁধতে পারে মরণব্যাধি ক্যান্সার

প্রকাশিত: ১৭:০৮, ২৯ মার্চ ২০২৫

মাস্ক ছাড়া বাইরে যান ? শরীরে বাসা বাঁধতে পারে মরণব্যাধি ক্যান্সার

ছবি: সংগৃহীত

 

 

বাংলাদেশে ক্যান্সারের হার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং বিশেষজ্ঞদের মতে এর অন্যতম কারণ বায়ু দূষণ। ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, পরিবেশ দূষণ ও রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শ ক্যান্সারের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে তুলতে পারে।

বায়ু দূষণ ও ক্যান্সারের সম্পর্ক

 বাতাসে থাকা পিএম ২.৫, শিল্প নির্গমন ও যানবাহনের ধোঁয়া ফুসফুসের ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ায়।  মাটি ও জলের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করা ভারী ধাতু এবং রাসায়নিক পদার্থ প্রোস্টেট, মূত্রাশয় ও রক্তের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।  গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘদিন দূষণের সংস্পর্শে থাকলে কোষে জিনগত পরিবর্তন ঘটে, যা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।

বাংলাদেশে ক্যান্সারের হার কেন বাড়ছে?

 ২০-৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে স্তন ও কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের হার বাড়ছে।  অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা ও দূষিত পরিবেশ এর প্রধান কারণ।  বিশেষজ্ঞদের মতে, শৈশব ও কৈশোরে দূষণের সংস্পর্শ পরবর্তী জীবনে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

বাংলাদেশি চিকিৎসকদের মতামত

ডা. মাহবুবুর রহমান, ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (BSMMU) বলেন, “বাংলাদেশে পরিবেশ দূষণ ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে উঠছে। শিল্প কারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়া ফুসফুস ক্যান্সারের জন্য সরাসরি দায়ী।”

ডা. ফারহানা হোসেন, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ক্যান্সার রিসার্চ অ্যান্ড হসপিটাল (NICRH) এর সিনিয়র অনকোলজিস্ট জানান, “নারীদের স্তন ক্যান্সারের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। প্রক্রিয়াজাত খাবার, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা ও বায়ু দূষণ এর জন্য দায়ী।”

ডা. কামরুল হাসান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অনকোলজি বিশেষজ্ঞ বলেন, “শিশুদের মধ্যে লিউকেমিয়া ও অন্যান্য রক্তের ক্যান্সারের হার বাড়ছে, যা দূষিত পানি ও খাদ্য গ্রহণের ফলে ঘটতে পারে।”

গবেষণায় কী বলছে?

🔬 পরিবেশ দূষণ ও ক্যান্সারের সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা চলমান। 🔬 পলিসাইক্লিক অ্যারোম্যাটিক হাইড্রোকার্বন (PAH), ফর্মালডিহাইড, বেনজিন—এ ধরনের রাসায়নিক ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। 🔬 বাংলাদেশে নগরায়ণ ও শিল্পায়নের কারণে দূষণের মাত্রা ক্রমবর্ধমান, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

ব্যক্তিগত স্তরে কী করা যায়?

 তাজা, অপ্রক্রিয়াজাত খাবার খান।  ধূমপান ও মদ্যপান এড়িয়ে চলুন। নিয়মিত ব্যায়াম ও মাস্ক ব্যবহার করুন। ✅ বিশুদ্ধ পানি পান করুন।  দূষিত এলাকায় কম সময় কাটান।

সরকারি পদক্ষেপ ও প্রয়োজনীয়তা

 ক্যান্সার প্রতিরোধে দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও কঠোর আইন প্রয়োজন।  ক্যান্সার স্ক্রিনিং ও সচেতনতা কর্মসূচি বৃদ্ধি করতে হবে।  শিল্প নির্গমন নিয়ন্ত্রণ ও বায়ুদূষণ পর্যবেক্ষণে জোর দিতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্যান্সার প্রতিরোধে ব্যক্তি সচেতনতা এবং সরকারি পদক্ষেপের সমন্বয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও দূষণ কমানোর উদ্যোগ নিলে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব।

কানন

×