
ছবি: সংগৃহীত
কিছু মানুষ আশ্চর্যজনকভাবে অনেক কাজ সম্পন্ন করতে পারেন, অথচ তারা তাদের রাত এবং সপ্তাহান্তের সময়কে সুরক্ষিত রাখেন। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ৫০ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন, তাদের প্রতি ঘণ্টার উৎপাদনশীলতা কমতে থাকে, এবং ৫৫ ঘণ্টার পর এতটাই কমে যায় যে অতিরিক্ত কাজের আর কোনো বাস্তব মূল্য থাকে না। তাই, বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা সপ্তাহান্তকে বিশ্রাম ও পুনরুজ্জীবনের জন্য ব্যবহার করেন, যাতে তারা নতুন সপ্তাহে সর্বোচ্চ কর্মক্ষমতা নিয়ে ফিরতে পারেন।
সপ্তাহান্তে কার্যকর থাকার ১০টি কৌশল
১. ডিজিটাল বিচ্ছিন্নতা বজায় রাখা
সপ্তাহান্তে পুরোপুরি কাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া সম্ভব না হলে নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করুন, যখন আপনি ইমেইল বা কল চেক করবেন। এটি চাপ কমাবে এবং ভারসাম্য রক্ষা করবে।
২. ঘরোয়া কাজের পরিমাণ কমানো
সপ্তাহান্তে অতিরিক্ত গৃহস্থালি কাজ করলে বিশ্রামের সুযোগ কমে যায়। তাই এগুলো সময়সূচি অনুযায়ী করুন এবং এক সপ্তাহে সব শেষ না হলে পরের সপ্তাহে স্থানান্তর করুন।
৩. শরীরচর্চা করা
ব্যস্ত সপ্তাহে সময় না পেলেও সপ্তাহান্তে ব্যায়াম করুন। মাত্র ১০ মিনিটের শরীরচর্চা মানসিক চাপ কমায় এবং সৃজনশীলতাকে উজ্জীবিত করে। হাঁটা, সাইক্লিং বা যে কোনো শারীরিক কার্যকলাপ এই কাজে সহায়ক হতে পারে।
৪. আত্মপর্যালোচনা করা
সপ্তাহান্তে সময় বের করে নিজের কাজ, শিল্পক্ষেত্র বা ক্যারিয়ারের গতিপথ নিয়ে ভাবুন। এটি নতুন কৌশল নির্ধারণ ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে।
৫. নিজের আগ্রহের কাজ করা
নিজের পছন্দের কাজে সময় দিলে মানসিক চাপ কমে এবং সৃজনশীল চিন্তাধারা প্রসারিত হয়। বই পড়া, লেখালেখি, সঙ্গীত চর্চা বা ছবি আঁকা মানসিক প্রশান্তি আনতে পারে।
৬. পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো
সপ্তাহের ব্যস্ততার কারণে পরিবারকে সময় দেওয়া কঠিন হয়ে যায়। তাই সপ্তাহান্তে পরিবারের সঙ্গে মানসম্মত সময় কাটান—বাচ্চাদের নিয়ে পার্কে যান, জীবনসঙ্গীকে পছন্দের রেস্তোরাঁয় নিয়ে যান বা বাবা-মাকে দেখতে যান।
৭. মাইক্রো-অ্যাডভেঞ্চারের পরিকল্পনা করা
নতুন কিছু করার পরিকল্পনা করুন—কনসার্টে যাওয়া, কোনো আকর্ষণীয় স্থানে বেড়ানো বা নতুন রেস্তোরাঁয় খাওয়া। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার আনন্দ পুরো সপ্তাহের মনোভাব ইতিবাচক করে তুলতে পারে।
৮. প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে ওঠা
সপ্তাহান্তে অতিরিক্ত ঘুমালে শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি (circadian rhythm) ব্যাহত হয়, যা সোমবারের কর্মদক্ষতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই, নিয়মিত সময়ে জাগ্রত থাকার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৯. সকালকে নিজের জন্য বরাদ্দ রাখা
সকালের সময়টি নিজের জন্য সংরক্ষণ করুন। এটি কোনো শারীরিক কার্যকলাপ হতে পারে, অথবা এমন কিছু, যা আপনাকে মানসিকভাবে শিথিল করে এবং নতুন সপ্তাহের জন্য প্রস্তুত করে।
১০. পরবর্তী সপ্তাহের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া
সপ্তাহান্তে ৩০ মিনিট পরিকল্পনার জন্য ব্যয় করলে সারা সপ্তাহের কাজ অনেক সহজ হয়ে যায়। এটি উৎপাদনশীলতা বাড়ায় এবং মানসিক চাপ কমায়।
সপ্তাহান্তকে শুধুমাত্র বিশ্রামের সময় না ভেবে, এটিকে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর সুযোগ হিসেবে নিন। সঠিক পরিকল্পনা ও সময় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আপনি পরবর্তী সপ্তাহের জন্য মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুত থাকতে পারবেন।
সূত্র: https://nextbigideaclub.com/magazine/10-things-highly-productive-people-weekend/13775/
আবীর