
ছবি: সংগৃহীত
মানুষের আবেগ বোঝা সবসময় সহজ নয়, বিশেষ করে পুরুষদের ক্ষেত্রে। সমাজ তাদের অনুভূতি চেপে রাখতে শেখায়। তবে কিছু ছোট ছোট লক্ষণ প্রকাশ করে, একজন পুরুষ মানসিকভাবে অখুশি আছে।
মনোবিজ্ঞান আমাদের এসব লক্ষণ বুঝতে সাহায্য করে। চলুন, মনোবিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার আলোকে ৮টি ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণের দিকে নজর করি, যা প্রকাশ করে দিতে পারে একজন পুরুষের অন্তর্নিহিত দুঃখবোধ।
১. ঘুমের ধরণ পরিবর্তন
কেউ যখন দীর্ঘদিন ধরে অখুশি থাকে, তখন তার ঘুমের ধরন পরিবর্তিত হতে পারে। অতিরিক্ত ঘুমানো বা নিদ্রাহীনতা—দুটিই মানসিক অস্থিরতার লক্ষণ। এছাড়াও, নিয়মিত দুঃস্বপ্ন দেখা বা মাঝরাতে বারবার জেগে ওঠাও অখুশির ইঙ্গিত দিতে পারে।
২. আগ্রহ হারিয়ে ফেলা
যদি কেউ হঠাৎ তার প্রিয় শখ বা কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে, তাহলে এটি দুশ্চিন্তার বিষয়। এটি গভীর হতাশার লক্ষণ হতে পারে, যা আনন্দের অনুভূতিকে ধীরে ধীরে নিঃশেষ করে দেয়।
৩. অতিরিক্ত রাগ ও বিরক্তি
গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক পুরুষ বিষণ্নতা বা দুঃখকে সরাসরি প্রকাশ না করে তা রাগ বা বিরক্তির মাধ্যমে প্রকাশ করে। তাই যদি কেউ হঠাৎ তুচ্ছ কারণে রেগে যায় বা বিরক্ত হয়ে ওঠে, তবে সেটি মানসিক অস্থিরতার লক্ষণ হতে পারে।
৪. ব্যক্তিগত যত্নে অবহেলা
অবসাদগ্রস্ত মানুষ প্রায়ই ব্যক্তিগত যত্ন ও পরিচ্ছন্নতা অবহেলা করতে থাকে। যদি কেউ নিয়মিত গোসল না করে, পোশাকের প্রতি উদাসীন থাকে বা খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম করে, তবে এটি তার মানসিক অস্বস্তির ইঙ্গিত হতে পারে।
৫. প্রিয়জনদের থেকে দূরে সরে যাওয়া
গভীর দুঃখে আক্রান্ত অনেক মানুষ ধীরে ধীরে পরিবার ও বন্ধুদের থেকে দূরে সরে যায়। তারা একা সময় কাটাতে চায় এবং সামাজিক অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলে। এটি দীর্ঘমেয়াদী বিষণ্নতার লক্ষণ হতে পারে।
৬. মনোযোগের অভাব
কর্মস্থলে কিংবা দৈনন্দিন জীবনে মনোযোগ ধরে রাখতে না পারা মানসিক চাপের একটি বড় লক্ষণ। যদি কেউ হঠাৎ করে সহজ কাজেও ভুল করতে থাকে বা আগের মতো একাগ্রতা বজায় রাখতে না পারে, তবে সেটি গভীর হতাশার ইঙ্গিত হতে পারে।
৭. আত্ম-সমালোচনা বৃদ্ধি
নিজেকে ছোট করে দেখা এবং নিজের ভুলের ওপর মাত্রাতিরিক্ত মনোযোগ দেওয়া মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির লক্ষণ। যদি কেউ প্রতিনিয়ত নিজেকে দোষারোপ করে, তাহলে এটি আত্মবিশ্বাসের অভাব ও দীর্ঘস্থায়ী দুঃখবোধের লক্ষণ হতে পারে।
৮. মোটিভেশনের অভাব
সবচেয়ে বড় লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি হলো জীবনের প্রতি অনীহা। যখন কেউ কোনো কাজে উৎসাহ পায় না, লক্ষ্য ঠিক করতে ব্যর্থ হয় বা দৈনন্দিন কাজ করতেও অনাগ্রহী হয়ে পড়ে, তখন সেটি তার মানসিক কষ্টের অন্যতম ইঙ্গিত হতে পারে।
এক্ষেত্রে যদি আপনার আশেপাশের কোনো ব্যক্তি এই লক্ষণগুলো দেখান, তাহলে তার প্রতি সহানুভূতিশীল হোন। তার সঙ্গে কথা বলুন, সহানুভূতি প্রকাশ করুন, এবং প্রয়োজনে পেশাদার মানসিক সহায়তা নেয়ার জন্য উৎসাহ দিন।
মেহেদী হাসান