
সংগৃহীত
বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি, এলন মাস্ক, টেসলা, স্পেসএক্স এবং আরও অনেক বড় উদ্যোগের উদ্ভাবক। তার কাজের প্রতি নিষ্ঠা, সৃজনশীল চিন্তাভাবনা এবং প্রখর উদ্যম তাকে সফলতার শিখরে নিয়ে গেছে। আজ, তিনি শুধুমাত্র ধনী নন, তিনি বিশ্বের কাছে এক অমূল্য প্রেরণা।
আপনি যদি চান এলন মাস্কের মতো সফল হতে, তবে তার কিছু অভ্যাস আপনাকে সাহায্য করতে পারে। এগুলো আপনার জীবনেও আনতে পারে সফলতা।
১. প্রথম নীতির চিন্তাধারা
এলন মাস্ক জটিল সমস্যাগুলো সমাধান করার জন্য প্রথম নীতির চিন্তাধারা ব্যবহার করেন, যেখানে তিনি সমস্যাগুলোকে তাদের মৌলিক সত্যে ভেঙে ফেলেন। প্রচলিত জ্ঞানের ওপর নির্ভর না করে, তিনি ধারণাগুলোকে প্রশ্ন করেন এবং সমাধানগুলো নতুন করে নির্মাণ করেন।যখন অন্যরা সোজা পথে চলতে শুরু করে, তখন এলন সবকিছু নতুনভাবে ভাবতে শুরু করেন।
আপনি যদি জীবনের যেকোনো সমস্যার সমাধান খুঁজে চান, তবে প্রথমে তার মূল কারণগুলো চিন্তা করুন এবং প্রথাগত চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে আসুন।আপনার পেশা বা ব্যক্তিগত প্রকল্পগুলোতে এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে, আপনি উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে পাবেন, সৃজনশীলভাবে চিন্তা করতে পারবেন, এবং সমস্যা মোকাবিলায় নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করতে পারবেন।
২. অবিশ্বাস্য পরিশ্রম
এলন মাস্ক তার দীর্ঘ কর্মঘণ্টার জন্য পরিচিত। সপ্তাহে ৮০-১০০ ঘণ্টা কাজ করা তার জন্য রুটিন। তবে তার এই পরিশ্রমই তাকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে সাহায্য করেছে। কাজের প্রতি তার নিষ্ঠা ও ফোকাস তাকে আলাদা করে তোলে। সম্প্রতি তিনি জানিয়ে দিয়েছেন যে, তার DOGE প্রকল্পের কর্মীরা ১২০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করছেন।
যদি আপনি জীবনে সাফল্য চান, তাহলে পরিশ্রমের বিকল্প নেই। একাগ্রতা, ফোকাস এবং সময়ের মূল্য জানলে আপনি যেকোনো লক্ষ্য পূরণ করতে পারবেন।
৩. নিরন্তর শেখা
এলন মাস্ক একজন স্বশিক্ষিত ব্যক্তি। তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং, স্পেস টেকনোলজি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স – এসব বিষয়ে নিজেই শিখেছেন।জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করেন।
তার মতে, শিখতে থাকা কোনো বয়সে থেমে থাকে না। আপনি যদি নিজের দক্ষতা উন্নত করতে চান, তাহলে আজ থেকেই শেখার দিকে মনোযোগ দিন।
নতুন কিছু শিখতে ইচ্ছুক থাকুন, আপনার দক্ষতা নিয়ে কাজ করুন এবং আপনার ক্ষেত্রের পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে চলুন। এটি আপনাকে সবসময় প্রতিযোগিতার থেকে এগিয়ে রাখবে।
৪. ঝুঁকি নেওয়া ও ব্যর্থতা থেকে শেখা
টেসলা এবং স্পেসএক্সের সঙ্গে প্রায় দেউলিয়া হওয়ার পর থেকে বারবার ব্যর্থতা দেখেও সফল হওয়া, এলন মাস্ক তার পেশাগত যাত্রায় বিশাল ঝুঁকি নিয়েছেন। তিনি ব্যর্থতাকে অগ্রগতির একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখেন, হতাশা বা আশা হারানোর পরিবর্তে। তিনি বিশ্বাস করেন, ব্যর্থতা কখনও পরাজয় নয়, এটি কেবল সফলতার দিকে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার পথ।
তাই, জীবনে সফল হতে, আপনাকে গৃহীত ঝুঁকির মুখোমুখি হতে হবে এবং আপনার ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আসলে, সফলতা হলো আপনার ভয়গুলো মোকাবিলা করা, ভুল থেকে শেখা এবং দ্রুত পুনরুদ্ধার করা।
৫. সময় ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা অর্জন
এলন মাস্ক একাধিক কোম্পানি পরিচালনা করেন, কিন্তু তারপরও তিনি সময়কে সম্পূর্ণভাবে কাজে লাগান। তার একটি পদ্ধতি রয়েছে, সময়-ব্লকিং, যেখানে তিনি তার প্রতিটি কাজ পাঁচ মিনিটের স্লটে ভাগ করে নেন। এর ফলে প্রতিটি মুহূর্তই হয়ে ওঠে ফলপ্রসূ।এর ধারণা হলো, প্রতিটি কাজ ৫ মিনিটের মধ্যে শেষ করা, যাতে প্রতিটি মুহূর্ত উৎপাদনশীল হয়।
আপনি যদি চাইলে এই পদ্ধতি গ্রহণ করে আপনার কাজের সময় আরও প্রোডাক্টিভ করতে পারেন।কাজের অগ্রাধিকার নির্ধারণ, বিভ্রান্তি ও কম গুরুত্বপূর্ণ কাজ দূর করা, এবং সঠিক সময়সীমা নির্ধারণ করলে একজনের উৎপাদনশীলতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে।
এলন মাস্কের এই অভ্যাসগুলো যদি আপনি আপনার জীবনেও প্রয়োগ করেন, তবে আপনি সফলতার পথে অনেকটা এগিয়ে যাবেন। তার জীবনের শিক্ষা আমাদের শেখায় যে, সঠিক চিন্তা, পরিশ্রম, ধারাবাহিক শেখার মানসিকতা এবং সময় ব্যবস্থাপনা আপনাকে জীবনে লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করতে পারে।
সূত্র: https://tinyurl.com/5yjsd9an
আফরোজা