ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ৩০ মার্চ ২০২৫, ১৬ চৈত্র ১৪৩১

নেতৃত্ব ও চরিত্র: সত্যিকারের নেতা হতে যেসব গুণাবলির প্রয়োজন

প্রকাশিত: ১৬:৪৯, ২৭ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ১৬:৫৩, ২৭ মার্চ ২০২৫

নেতৃত্ব ও চরিত্র: সত্যিকারের নেতা হতে যেসব গুণাবলির প্রয়োজন

ছবি: সংগৃহীত

নেতৃত্ব কেবল দক্ষতার ওপর নির্ভর করে না বরং এটি ব্যক্তির চরিত্রের ওপর গভীরভাবে নির্ভরশীল।

রবার্ট এল. ডিলেনশ্যাডার, যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ, তার নতুন বই ‘চরিত্র: সাহস, সততা এবং নেতৃত্বের জীবনের শিক্ষা’ -এ ব্যাখ্যা করেছেন, কীভাবে চরিত্র একটি সফল নেতৃত্বের মূল ভিত্তি।

নেতৃত্বকে সফল করতে আটটি গুরুত্বপূর্ণ গুণাবলি প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। গুণাবলি গুলো হলো:

১. নেতৃত্ব: অন্যদের সঠিক পথে পরিচালিত করার ক্ষমতা।

২. উদ্ভাবন: নতুন কিছু সৃষ্টির এবং প্রচলিত ধারণা ভাঙার ক্ষমতা।

৩. সহনশীলতা: কঠিন পরিস্থিতিতে টিকে থাকার ক্ষমতা।

৪. প্রতিবন্ধকতা দূর করা: সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করা।

৫. সাহস: কঠিন সময়ে দৃঢ়ভাবে টিকে থাকার মানসিক শক্তি।

৬. বিশ্বস্ততা:  সম্পর্ক ও আস্থার ভিত্তি।

৭. সততা: নৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা।

৮. স্বচ্ছতা: সত্য প্রকাশ করার ও গ্রহণ করার মানসিকতা।

ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বিশ্লেষণ করে তিনি দেখেছেন, এই গুণগুলোই তাদের সফল করেছে। যেমন, স্টিভ জবস তার উদ্ভাবনী চিন্তার মাধ্যমে প্রযুক্তি জগতে বিপ্লব ঘটিয়েছেন, নেলসন ম্যান্ডেলা চরম প্রতিকূলতার মধ্যেও স্থিতিশীলতা দেখিয়েছেন, এবং মাদার তেরেসা নেতৃত্ব দিয়েছেন নিঃস্বার্থ সেবার মাধ্যমে।

আজকের বিশ্বে, যেখানে রাজনীতি ও ব্যবসায়িক পরিবেশ অস্থির। সেখানে নেতাদের সততা ও নৈতিকতার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। ডিলেনশ্যাডার উল্লেখ করেন যে, ‘‘ সত্য বলার সাহস থাকা উচিত, এমনকি তা যদি কঠিনও হয়। সত্যিকারের নেতা তারা, যারা জনপ্রিয়তার চেয়ে ন্যায়ের পথকে প্রাধান্য দেন, যেমন জন ম্যাককেইন তার আদর্শের জন্য আপস করেননি”।

এছাড়া তিনি বলেন, স্ব-সচেতনতা বা আত্মোপলব্ধি একজন ব্যক্তির চরিত্র গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিজের দুর্বলতা স্বীকার করা, সৎ পরামর্শ গ্রহণ করা এবং আজীবন শেখার মানসিকতা রাখা একজন নেতাকে আরও পরিণত করে।

ডিলেনশ্যাডার বলেন, আসল চ্যালেঞ্জ হলো— ‘স্বল্পমেয়াদি লাভের লোভে দীর্ঘমেয়াদী মূল্যবোধ বিসর্জন না দেওয়া। প্রতিদিনের সিদ্ধান্ত এবং কাজের মধ্য দিয়েই একজন নেতা তার উত্তরাধিকার গড়ে তোলেন’।

 

সত্যিকারের নেতা সেই ব্যক্তি যিনি নিজের নীতিতে অবিচল থাকেন এবং কঠিন সময়েও সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ান। নেতৃত্ব শুধুমাত্র একটি পদবির বিষয় নয়; এটি মূলত নৈতিকতা, সহানুভূতি ও দৃঢ় মানসিকতার মাধ্যমে অন্যদের অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতা।

 

এই শিক্ষাগুলো আধুনিক সমাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো একজন ব্যক্তি ও জাতির ভবিষ্যত গঠনে সহায়ক হতে পারে।

মেহেদী হাসান

×