ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১

হাঁটার সময় উচ্চ কোলেস্টেরলের লক্ষণ, যা উপেক্ষা করা উচিত নয়!

প্রকাশিত: ০০:০৮, ২৫ মার্চ ২০২৫

হাঁটার সময় উচ্চ কোলেস্টেরলের লক্ষণ, যা উপেক্ষা করা উচিত নয়!

ছবি: সংগৃহীত

উচ্চ কোলেস্টেরল ধমনী সংকীর্ণ করে রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে, যা পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ (PAD) এর কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাঁটার সময় বা শারীরিক পরিশ্রমের পর যদি নির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ দেখা দেয়, তবে তা উচ্চ কোলেস্টেরলের সংকেত হতে পারে।

হাঁটার সময় উচ্চ কোলেস্টেরলের লক্ষণ:

১. ইন্টারমিটেন্ট ক্লডিকেশন (Intermittent Claudication)

পায়ের পেশিতে ব্যথা বা খিঁচুনি অনুভূত হওয়া, যা বিশ্রামের পর কমে যায়। এটি সাধারণত রক্ত প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে ঘটে।

২. পায়ে ব্যথা ও অস্বস্তি

PAD-এর অন্যতম সাধারণ লক্ষণ হলো হাঁটার সময় বা সিঁড়ি ভাঙার সময় পায়ের পেশিতে ব্যথা, অবসাদ বা টান ধরা। ধমনীর সংকোচনের ফলে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ না হওয়ায় এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।

৩. পেশির দুর্বলতা

ধমনীর সংকীর্ণতা পায়ের পেশির শক্তি কমিয়ে দিতে পারে, যার ফলে হাঁটতে, ব্যালেন্স রাখতে বা দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে সমস্যা হতে পারে।

৪. এক পা অন্য পায়ের চেয়ে বেশি ঠান্ডা অনুভূত হওয়া

রক্ত সঞ্চালন কম হলে এক পা বা পায়ের কোনো নির্দিষ্ট অংশ অন্য অংশের তুলনায় ঠান্ডা অনুভূত হয়। গুরুতর পরিস্থিতিতে পায়ের ত্বক ফ্যাকাশে বা নীলচে হতে পারে।

৫. অবশভাব বা চিমটির অনুভূতি (Numbness or Tingling)

রক্ত চলাচলে সমস্যা হলে পায়ের আঙুল বা পায়ের পাতায় অবশভাব, ঝিঁঝিঁ ধরা বা সূঁচ ফোটার মতো অনুভূতি হতে পারে। এটি অবহেলা করলে দীর্ঘমেয়াদে নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

৬. পায়ের রঙ পরিবর্তন

অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে পায়ের ত্বকের রং ফ্যাকাশে, লালচে বা নীলচে হয়ে যেতে পারে। এটি গুরুতর অবস্থা নির্দেশ করে, যা দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা বোঝায়।

৭. ক্ষত সারতে দেরি হওয়া

যদি পায়ে কোনো ছোটখাটো কাটা-ছেঁড়া, ফোসকা বা ক্ষত দীর্ঘদিনেও না শুকায়, তবে তা উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে রক্ত চলাচলে বাধার লক্ষণ হতে পারে। এটি মারাত্মক আকার ধারণ করলে সংক্রমণ বা গ্যাংগ্রিনের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা:

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: রক্তে কোলেস্টেরল মাত্রা পরীক্ষা করা উচিত।

সুস্থ খাদ্যাভ্যাস: শাকসবজি, ফলমূল, চর্বিহীন প্রোটিন এবং সম্পূর্ণ শস্য গ্রহণ করা দরকার।

নিয়মিত শরীরচর্চা: হাঁটা ও ব্যায়াম ধমনী সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার: এটি ধমনী সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

কারা উচ্চ কোলেস্টেরলের ঝুঁকিতে?

যাদের পারিবারিকভাবে উচ্চ কোলেস্টেরলের ইতিহাস আছে, যারা ফাস্টফুড বা স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার বেশি খান, যারা শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয়, ধূমপায়ী বা মদ্যপান করেন, তাদের এই ঝুঁকি বেশি থাকে। এছাড়া, ডায়াবেটিস বা থাইরয়েডজনিত সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরাও উচ্চ কোলেস্টেরলের শিকার হতে পারেন।

সতর্ক থাকুন, সুস্থ থাকুনউচ্চ কোলেস্টেরলজনিত সমস্যাগুলো শুরুতে তেমন কোনো লক্ষণ প্রকাশ করে না। তবে হাঁটার সময় বা শারীরিক পরিশ্রমের পর যদি উপরের লক্ষণগুলো দেখা যায়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সুস্থ জীবনযাত্রা এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলাই পারে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি। 

রিফাত

×