
ছবি: সংগৃহীত
বিয়ের পর ওজন বেড়ে যাওয়া নিয়ে অনেক সময় মজার ছলে কথা বলা হয়। তবে এটি শুধু কথার কথা নয়, বাস্তবেও সত্যি! সম্প্রতি পোল্যান্ডের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বিবাহিত পুরুষদের ওজন দ্রুত বাড়ে, যা গবেষকরা "হ্যাপি ফ্যাট" নামে চিহ্নিত করেছেন। তবে, মহিলাদের ক্ষেত্রে এর তেমন কোনো প্রভাব দেখা যায়নি।
গবেষণার মূল তথ্য
পোল্যান্ডের ওয়ারশ শহরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কার্ডিওলজির গবেষকরা দেখেছেন, বিবাহিত পুরুষদের মধ্যে ওজন বৃদ্ধির প্রবণতা বেশি, যেখানে অবিবাহিতদের ক্ষেত্রে এটি তুলনামূলক কম। গবেষণায় মোট ২,৪০৫ জন অংশগ্রহণ করেছিলেন, যাদের গড় বয়স ছিল ৫০ বছর। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ ছিলেন পুরুষ ও ৫০ শতাংশ মহিলা।
গবেষণায় দেখা গেছে:
৩৫.৩% অংশগ্রহণকারীর ওজন ছিল স্বাভাবিক
৩৮.৩% অতিরিক্ত ওজনের ছিলেন
২৬.৪% ছিলেন স্থূল
এছাড়া, বিবাহিত পুরুষদের স্থূল হওয়ার সম্ভাবনা অবিবাহিতদের তুলনায় ৩.২ গুণ বেশি বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, মহিলাদের ক্ষেত্রে বিবাহিত বা অবিবাহিত হওয়া ওজন বৃদ্ধির ওপর তেমন প্রভাব ফেলে না।
ওজন বৃদ্ধির কারণ
গবেষণা অনুযায়ী, বিয়ের পর পুরুষদের ওজন বৃদ্ধির মূল কারণ হলো
১. বেশি খাওয়া: বিবাহিত পুরুষরা সাধারণত অবিবাহিতদের তুলনায় বেশি ক্যালরি গ্রহণ করেন।
২. কম শারীরিক পরিশ্রম: কাজের ব্যস্ততা ও সংসারের দায়িত্বের কারণে অনেকে শরীরচর্চার সময় পান না।
৩. মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব: সুখী সম্পর্কের কারণে অনেকে নিজেদের স্বাস্থ্য নিয়ে কম চিন্তা করেন।
বিয়ে ও ওজন বৃদ্ধির সম্পর্ক
গবেষকরা দেখেছেন, বিয়ের প্রথম ৫ বছরের মধ্যেই পুরুষদের বডি মাস ইনডেক্স (BMI) দ্রুত বাড়ে। এর কারণ, তারা বেশি খেতে শুরু করেন এবং কম এক্সারসাইজ করেন।
এর আগে করা বিভিন্ন গবেষণাতেও দেখা গেছে, বিবাহিত ব্যক্তিরা সাধারণত অবিবাহিতদের তুলনায় বেশি ওজন ধারণ করেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্পর্কের স্থিতিশীলতা ও মানসিক সন্তুষ্টির কারণেও ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে, যাকে বলা হয় "হ্যাপি ফ্যাট"।
ওজন নিয়ন্ত্রণের উপায়
গবেষকরা সতর্ক করেছেন যে অতিরিক্ত ওজন টাইপ-২ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই, বিবাহিত পুরুষদের ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য
সুষম খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা
নিয়মিত শরীরচর্চা করা
অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ এড়ানো
ব্যালান্সড লাইফস্টাইল বজায় রাখা
শেষ কথা
বিয়ের পর ওজন বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়, তবে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। নিয়মিত ব্যায়াম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চললে, "হ্যাপি ফ্যাট" নয়, বরং "হ্যাপি ফিট" থাকার সুযোগ রয়েছে
কানন