ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১

জীবনের সুখ ও মানসিক শান্তি নষ্ট হওয়ার ৭টি প্রধান কারণ

প্রকাশিত: ১০:০২, ১৯ মার্চ ২০২৫

জীবনের সুখ ও মানসিক শান্তি নষ্ট হওয়ার ৭টি প্রধান কারণ

ছবি: সংগৃহীত

 

 

আমাদের প্রত্যেকেরই জীবনে সুখ ও মানসিক শান্তি খোঁজার চেষ্টা থাকে। কিন্তু অনেক সময়, আমরা নিজেরাই কিছু ভুল প্রত্যাশা তৈরি করি, যা আমাদের আনন্দ কমিয়ে দেয় এবং অপ্রয়োজনীয় হতাশার সৃষ্টি করে। গবেষণায় দেখা গেছে, আমাদের জীবনের বেশিরভাগ দুঃখ ও অসন্তোষের কারণ হলো ভুল প্রত্যাশা।

তাহলে কীভাবে এসব প্রত্যাশা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব? আসুন জেনে নেই এমন ৭টি সাধারণ প্রত্যাশা, যা আমাদের জীবনের ৯০% সুখ ও মানসিক শান্তি কেড়ে নেয়।

১) সবাই আমাকে বুঝবে ও সমর্থন করবে—এই ভুল প্রত্যাশা

আমরা প্রায়ই ধরে নিই, আমাদের প্রিয়জনরা আমাদের সব কথা বুঝবে এবং সমর্থন করবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। প্রত্যেকের নিজস্ব চিন্তাধারা ও দৃষ্টিভঙ্গি থাকে, যা আমাদের সঙ্গে সবসময় মিলবে না। তাই প্রত্যাশা কমিয়ে নিজের বিশ্বাস ও সিদ্ধান্তের ওপর আস্থা রাখাই উত্তম।

২) অন্যদের কাছ থেকে যত সম্মান পাব, আমি তত মূল্যবান—এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসুন

অনেকে মনে করেন, অন্যরা তাদের প্রতি কতটা শ্রদ্ধাশীল, সেটিই তাদের প্রকৃত মূল্য নির্ধারণ করে। কিন্তু সত্যি কথা হলো, আপনি নিজেকে যেভাবে দেখেন, সেটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন, আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলুন, আর দেখবেন অন্যরাও আপনাকে সম্মান করতে শুরু করবে।

৩) সবাই আমাকে পছন্দ করবে—এই প্রত্যাশা বাদ দিন

আপনি যতই ভালো হন না কেন, কিছু মানুষ আপনাকে অপছন্দ করবেই। এটি স্বাভাবিক এবং স্বীকার করাই শ্রেয়। তাই যারা সত্যিকারের মূল্য দেয় না, তাদের জন্য সময় নষ্ট না করে, সেসব মানুষের সঙ্গেই থাকুন যারা আপনাকে ভালোবাসে ও সম্মান করে।

৪) মানুষ সবসময় আমার কল্পনার মতো হবে—এই ভুল ধারণা

আমরা প্রায়ই মানুষের সম্পর্কে একরকম ধারণা তৈরি করি, এবং যখন তারা সেই ধারণার সঙ্গে না মেলে, তখন আমরা হতাশ হয়ে পড়ি। আসলে প্রত্যেক মানুষই আলাদা, এবং তাদের নিজস্বতা রয়েছে। তাই অন্যদের প্রকৃত স্বভাব ও বৈচিত্র্যকে মেনে নেওয়া শিখুন।

৫) মানুষ নিজে থেকেই আমার চিন্তাভাবনা বুঝবে—এই প্রত্যাশা ভুল

অনেকেই ধরে নেন, কাছের মানুষদের বোঝা উচিত তিনি কী ভাবছেন বা অনুভব করছেন। কিন্তু বাস্তবে, মানুষ মনের কথা পড়তে পারে না। তাই যদি কিছু চান বা প্রয়োজন হয়, তাহলে খোলাখুলি বলুন। এতে ভুল বোঝাবুঝি কমবে এবং সম্পর্কও ভালো থাকবে।

৬) যাদের শক্তিশালী মনে হয়, তারা সবসময় ঠিক থাকে—এটি সত্য নয়

অনেকেই মনে করেন, যারা বাহ্যিকভাবে আত্মবিশ্বাসী ও দৃঢ়চেতা, তারা সবসময় ঠিক থাকেন। কিন্তু বাস্তবে, প্রত্যেক মানুষই তার জীবনে কোনো না কোনো সমস্যা বা মানসিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যান। তাই কখনো কারও বাহ্যিক অবস্থা দেখে তার প্রকৃত অনুভূতি অনুমান করার চেষ্টা করবেন না।

৭) আমার কাছের মানুষরা একদিন বদলে যাবে—এই আশা বাদ দিন

যদি আপনি মনে করেন, কোনো প্রিয়জন একদিন হঠাৎ করে তার আচরণ বা স্বভাব বদলে ফেলবে, তাহলে সেটা ভুল ধারণা। মানুষ সহজে পরিবর্তিত হয় না। তাই তাদের পরিবর্তনের আশা না করে, আপনি যদি সম্পর্কটিকে এগিয়ে নিতে চান, তাহলে খোলামেলা আলোচনা করুন।

শেষ কথা

সুখ ও মানসিক শান্তি অর্জনের জন্য, আমাদের অপ্রয়োজনীয় প্রত্যাশাগুলো কমিয়ে আনতে হবে। বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে, নিজের ওপর আস্থা রেখে, সম্পর্ক ও পরিস্থিতিকে ইতিবাচকভাবে দেখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। মনে রাখবেন, আপনার মানসিক শান্তি অন্যদের আচরণের ওপর নির্ভর করে না, বরং এটি আপনার দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করে।

 

কানন

×