
ছবি: সংগৃহীত।
বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে, কর্মক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা ধরে রাখা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি নতুনত্ব আনাও অপরিহার্য। কিন্তু উদ্ভাবনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে ভয়, নিরাপত্তাহীনতা এবং পরিবর্তনের প্রতি অনীহা। গবেষণা বলছে, যারা ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত এবং পরীক্ষামূলক নতুন ধারণা প্রয়োগ করতে আগ্রহী, তারাই প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিতে পারে। সফল প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মীদের স্বাধীনতা দেয়, যাতে তারা সৃজনশীলভাবে চিন্তা করতে পারে এবং নতুন সমাধান খুঁজে বের করতে পারে।
ঝুঁকি গ্রহণ: উদ্ভাবনের প্রথম ধাপ
নতুন কিছু তৈরি করতে হলে ব্যর্থতার সম্ভাবনাকে মেনে নিতে হয়। উদ্যোক্তারা যেমন ঝুঁকি নিয়ে নতুন ব্যবসা গড়ে তোলেন, তেমনি কর্মক্ষেত্রেও নতুন কৌশল, প্রযুক্তি বা নীতিমালা প্রয়োগ করতে হলে ঝুঁকি নিতেই হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, গুগল, অ্যাপল এবং টেসলার মতো বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কর্মীদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেয় এবং ব্যর্থতাকে শেখার অংশ হিসেবে বিবেচনা করে।
পরীক্ষা ও উদ্ভাবনের পরিবেশ
একটি কোম্পানির সাফল্য নির্ভর করে কতটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে তার ওপর। উদাহরণস্বরূপ, ৩এম (3M) কর্পোরেশন তাদের কর্মীদের গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য ১৫% সময় বরাদ্দ করে। এর ফলেই জন্ম নেয় জনপ্রিয় পোস্ট-ইট নোট, যা আজ সারা বিশ্বে ব্যবহৃত হয়।
ঝুঁকি নেওয়ার ইতিবাচক দিক
১. নতুনত্ব বৃদ্ধি: পরীক্ষার মাধ্যমে নতুন ধারণা জন্ম নেয়, যা বাজারে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা এনে দেয়।
২. কর্মীদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধি: ঝুঁকি নেওয়ার সুযোগ থাকলে কর্মীরা আরও স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে পারে।
৩. ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা: ব্যর্থতাকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করলে ভবিষ্যতে সফলতার পথ সুগম হয়।
৪. প্রতিষ্ঠানের উন্নতি: উদ্ভাবনী সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের কর্মপরিবেশ উন্নত করে এবং ব্যবসাকে আরও এগিয়ে নেয়।
নেতাদের করণীয়
কর্মক্ষেত্রে ঝুঁকি গ্রহণ এবং পরীক্ষার পরিবেশ গড়ে তুলতে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হয়। তারা যদি একটি উন্মুক্ত সংস্কৃতি তৈরি করতে পারেন, যেখানে কর্মীরা ভয় ছাড়া নতুন কিছু চেষ্টা করতে পারেন, তাহলে প্রতিষ্ঠান আরও এগিয়ে যাবে। এছাড়া, নেতাদের উচিত ব্যর্থতাকে নেতিবাচকভাবে না দেখে তা থেকে শেখার সুযোগ করে দেওয়া।
ঝুঁকি গ্রহণ এবং পরীক্ষার মানসিকতা ছাড়া উদ্ভাবন সম্ভব নয়। বর্তমান যুগে যে প্রতিষ্ঠান ঝুঁকি নিতে ভয় পায়, তারা খুব দ্রুত প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে। তাই কর্মক্ষেত্রে উদ্ভাবনী চিন্তাধারা বিকাশে ঝুঁকি নেওয়ার সাহস এবং পরীক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা সময়ের দাবি।
নুসরাত