
সততা যে কোনো সুস্থ সম্পর্কের মূল ভিত্তি। এটি বিশ্বাস গড়ে তোলে, মানসিক সংযোগ দৃঢ় করে এবং খোলামেলা যোগাযোগকে উৎসাহিত করে। দাম্পত্য জীবনে সত্যবাদিতা পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমর্থন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সব সময় সত্য বলা কি আদৌ প্রয়োজনীয়? নাকি সুখী সংসারের জন্য কখনো কখনো ছোটখাটো মিথ্যার আশ্রয় নেয়া যেতে পারে?
সত্য বলা সম্পর্ককে গভীর করতে পারে, তবে এর ফলে দ্বন্দ্বও সৃষ্টি হতে পারে। অনেক সময় একটি নিরীহ মিথ্যা তাৎক্ষণিক সমস্যা এড়াতে সহায়ক হতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদে বিশ্বাসের সংকট তৈরি করতে পারে। রচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল মনোবিজ্ঞানী গবেষণা চালিয়ে দেখেছেন যে সততার প্রকাশ সম্পর্কের গঠনমূলক দিক তৈরি করতে পারে। গবেষণায় ২০০ দম্পতিকে নিয়ে পরীক্ষাগারভিত্তিক আলোচনা পরিচালনা করা হয়। এতে দেখা গেছে, খোলামেলা সততা প্রদর্শন করলে দাম্পত্য সম্পর্ক ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয়।
গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, “সত্যবাদিতা ও সম্পর্কের মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্ক রয়েছে। তবে সততা প্রকাশের ধরন এবং কৌশলগত উপস্থাপনাও গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় সম্পূর্ণ সত্য বলার বদলে এমনভাবে তা উপস্থাপন করা দরকার যাতে সম্পর্কের স্থায়িত্ব বজায় থাকে।"
তবে সততা প্রকাশের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখা দরকার। যেমন—
খোলামেলা যোগাযোগ বজায় রাখা: আপনার অনুভূতি ও চিন্তাভাবনা প্রকাশ করুন, তবে সংবেদনশীল বিষয় উপস্থাপনের সময় সতর্ক থাকুন।
বিশ্বাস রক্ষা করা: ছোট ছোট মিথ্যাও সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, তাই যথাসম্ভব খোলামেলা থাকার চেষ্টা করুন।
সততা ও সংবেদনশীলতার সমন্বয়: সত্য বলার সময় সঙ্গীর অনুভূতির দিকটিও বিবেচনায় রাখা জরুরি। সরাসরি সত্য বলার পরিবর্তে স্নেহপূর্ণ ও কৌশলী উপস্থাপন সুখী সম্পর্ক বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে।
একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা: যেখানে উভয়েই নিজের অনুভূতি নির্ভয়ে প্রকাশ করতে পারেন।
সংক্ষেপে বলা যায়, দাম্পত্য জীবনে সততা গুরুত্বপূর্ণ হলেও, সেটি কীভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে সেটিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। সম্পর্কের সুস্থতার জন্য খোলামেলা যোগাযোগ ও সংবেদনশীল উপস্থাপনার মাধ্যমে সত্য বলা সবচেয়ে ভালো উপায় হতে পারে।
রাজু