
ছবিঃ সংগৃহীত
সন্তান লালন-পালন একটি ভালোবাসা, চ্যালেঞ্জ ও শেখার অভিজ্ঞতায় ভরা একটি যাত্রা। ১৩ বছর হওয়ার আগেই শিশুদের এমন কিছু মৌলিক শিক্ষা পাওয়া উচিত যা তাদের কৈশোর ও ভবিষ্যৎ জীবনে আত্মবিশ্বাসী ও দায়িত্বশীল হতে সাহায্য করবে। এখানে ৮টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো যা প্রত্যেক বাবা-মায়ের উচিত তাদের সন্তানকে শেখানো—
১. সততা ও নৈতিকতার গুরুত্ব
সন্তানদের শেখানো উচিত যে সততাই যে কোনো সম্পর্কের ভিত্তি। কঠিন পরিস্থিতিতেও সত্য বলা ও নৈতিকতা বজায় রাখা তাদের সঠিক মূল্যবোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। তাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করুন যেন তারা ভয় ছাড়াই তাদের ভাবনা ও ভুলগুলো প্রকাশ করতে পারে।
২. অর্থ ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক দায়িত্ব
১৩ বছর হওয়ার আগেই শিশুদের টাকা-পয়সার মূল্য ও সঠিক ব্যবহারের শিক্ষা দেওয়া উচিত। সঞ্চয়, বাজেট ও ব্যয়ের মৌলিক বিষয়গুলো শেখানো প্রয়োজন। ছোটখাটো কাজের মাধ্যমে উপার্জিত অর্থের একটি অংশ সঞ্চয় করতে উৎসাহিত করুন, যা ভবিষ্যতে তাদের আর্থিক সচেতনতা গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
৩. মৌলিক রান্না ও ঘরোয়া কাজের দক্ষতা
নিজের জন্য সহজ খাবার তৈরি করা, কাপড় ধোয়া ও ঘর পরিষ্কার রাখা স্বনির্ভরতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দৈনন্দিন জীবনের এই মৌলিক দক্ষতাগুলো শেখালে তারা ভবিষ্যতে দায়িত্বশীল ও আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠবে।
৪. সহপাঠীদের চাপে না ভেসে যাওয়া এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া
কৈশোরে প্রবেশের সাথে সাথে শিশুরা বন্ধুদের চাপে পড়তে পারে। তাদের শেখাতে হবে কিভাবে আত্মবিশ্বাস বজায় রেখে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয় এবং নেতিবাচক প্রভাব থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হয়। আত্মবিশ্বাসী করে তুলুন যাতে তারা ক্ষতিকর প্রবণতার সঙ্গে না জড়ায়।
৫. কঠোর পরিশ্রম ও ধৈর্যের মূল্য
সন্তানদের বোঝান যে সাফল্য রাতারাতি আসে না। কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব। ব্যর্থতাকে শেখার একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করতে উৎসাহিত করুন এবং চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে তাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত করুন।
৬. ইন্টারনেট নিরাপত্তা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সঠিক ব্যবহার
বর্তমান ডিজিটাল যুগে ইন্টারনেট ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা থাকা জরুরি। শিশুদের অনলাইন গোপনীয়তা, সাইবার বুলিং ও ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ারের ঝুঁকি সম্পর্কে শেখান। তাদের অনলাইন ও বাস্তব জীবনের মধ্যে একটি সুস্থ ভারসাম্য বজায় রাখার গুরুত্ব বোঝান।
৭. দয়া ও সহমর্মিতার গুরুত্ব
অন্যের প্রতি সদয় ও সহানুভূতিশীল হওয়া মানবিক গুণাবলীর অন্যতম। শিশুদের শেখান কিভাবে তারা অন্যদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করতে পারে, ভিন্ন মতামতকে সম্মান করতে পারে এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে পারে।
৮. শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা
শিশুদের স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব শেখান। পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার বিষয়েও অবগত করুন—তাদের অনুভূতি প্রকাশ করা, মানসিক চাপ সামলানো এবং প্রয়োজনে সাহায্য চাওয়া গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আত্ম-যত্নের এই অভ্যাস তাদের কিশোর জীবনে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।
এই বিষয়গুলো সন্তানদের শেখালে তারা ভবিষ্যতের জন্য আত্মবিশ্বাসী, দায়িত্বশীল ও সফল ব্যক্তি হয়ে উঠতে পারবে।
ইমরান