
সারাবছরের অন্যান্য মাসের থেকে রমজান মাস আলাদা। এই মাসটি বিশ্বের সকল মুসলিমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। রমজান মাসে আমাদের জীবনযাত্রা এবং খাবারের পরিবর্তন আসে। সারাদিন রোজা রেখে অনেকেই ইফতারে ভাজাপোড়া খান যা পরে অসুস্থতার কারণ হতে পারে। বিশেষ করে রোজায় অ্যাসিডিটি এবং খাদ্যনালির প্রদাহে অনেকেই ভোগেন। তবে খাদ্যতালিকার দিকে জোর দিলে এই সমস্যা থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব।
খাদ্যনালির প্রদাহকে চিকিৎসকরা এসোফ্যাগাইটিস বলেন। এই অবস্থার সাধারণ কারণগুলির মধ্যে রয়েছে অ্যাসিড রিফ্লাক্স, ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাল সংক্রমণ বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং খাবার। চিকিৎসকরা খাদ্যনালির প্রদাহ থেকে মুক্তি পেতে কয়েকটি খাবার খাদ্যতালিকায় রাখতে বলছেন আর কিছুর বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
যেসব খাবার খেতে পারবেন: প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যেসব খাবার খেলে খাদ্যনালির প্রদাহ থাকবে না সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেছেন চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট লাইব্রেটের প্রতিবেদনে খাদ্যতালিকা দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এগুলো হলো-
ফল ও শাকসবজি: কম অ্যাসিডযুক্ত ফল যেমন কলা, আপেল, বেরি, গাজর, কুমড়া ও সবুজ শাকসবজি গ্যাস্ট্রাইটিস প্রতিরোধে কার্যকর। তবে অতিরিক্ত অ্যাসিডিক ফল এড়িয়ে চলা উচিত।
আস্ত শস্যদানা: বাদামি চাল, আটার রুটি, ওটস, বার্লি, গমের পাস্তা পেটের জন্য উপকারী। তবে ফোলাভাব বা গ্যাসের সমস্যা হলে সাদা ভাত ও আলু খেতে পারেন।
দুগ্ধজাত খাবার: কম চর্বিযুক্ত দুধ ও নন ফ্যাট দই খাওয়া যেতে পারে। দইয়ের প্রোবায়োটিক অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার: ডিম, মাছ, চর্বিহীন মাংস, শিম ও মটরশুঁটি গ্যাস্ট্রাইটিস রোগীদের জন্য ভালো। চিকেন স্যুপও উপকারী।
নাশতায় ফল: কলা, আপেল ও তরমুজ সকালে খেলে খাদ্যনালির প্রদাহের ঝুঁকি কমে।
পানীয়: সাধারণ পানি, বাদাম দুধ, আদা, হলুদ বা পেপারমিন্ট চা প্রদাহের সমস্যা কমাতে পারে।
খাদ্যনালির প্রদাহ থেকে মুক্তি পেতে কয়েকটি খাবার খাদ্যতালিকায় রাখতে বলছেন আর কিছুর বিষয়ে সতর্ক করেছেন। ছবি: সংগৃহীত
যেসব খাবার এড়ানো উচিত: রোজায় খাদ্যনালির প্রদাহ থেকে মুক্তি পেতে কিছু খাবার এড়িয়ে যেতে হবে। মেডিকেল নিউজ টুডেতে চিকিৎসকরা সেসব খাবারের বিষয়ে সচেতন করেছেন। খাবারগুলো হলো-
- অ্যাসিডিক ফল ও সবজি: কমলা, লেবু, টমেটো, পেঁয়াজ, রসুন ও মরিচে খাদ্যনালির প্রদাহের সমস্যা বাড়ায়।
- প্রক্রিয়াজাত শর্করা: নুডলস, সাদা পাস্তা, ময়দার তৈরি খাবার পরিহার করা ভালো।
- উচ্চ চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য: ফুলক্রিম দুধ, মাখন, ঘি, আইসক্রিম, পনির এবং ক্রিম দেয়া খাবার পরিহার করা উচিত।
- চর্বিযুক্ত মাংস : লাল মাংস, মুরগির কলিজা, চর্বিযুক্ত মাংস খাবেন না।
- প্রক্রিয়াজাত খাবার: কেক, চকোলেট, চিপস, পিৎজা, বেকড আইটেমে অতিরিক্ত চিনি ও চর্বি থাকে, যা খাদ্যনালির প্রদাহ বাড়াতে পারে।
- ক্যাফেইন ও চিনিযুক্ত পানীয়: কফি, সোডা, এনার্জি ড্রিংক, কমলার রস ও টমেটোর রস গ্যাস্ট্রাইটিসের জন্য ক্ষতিকর।
সাজিদ