
আপনার শিশু কি কাজ শেষ করতে পারে না বা শৃঙ্খলার অভাবে ভুগছে? এর কারণ হতে পারে মনোযোগের স্বল্পতা ও অস্থিরতা। তবে কিছু কার্যকর কৌশল রয়েছে, যা শিশুদের মনোযোগ ধরে রাখতে ও শৃঙ্খলা রক্ষা করতে সহায়ক হতে পারে। যেসব অভিভাবক তাদের সন্তানদের মনোযোগের সমস্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন, তারা এই ৬টি অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে শিশুদের একাগ্রতা ও শৃঙ্খলা বাড়াতে পারেন।
১. পড়াশোনার জন্য টাইমার সেট করুন
পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখতে টাইমার ব্যবহার করা একটি কার্যকর পদ্ধতি। প্রথমে ১০ মিনিটের জন্য টাইমার সেট করে ধীরে ধীরে সময় বাড়ানো যেতে পারে। পোমোডোরো টেকনিক অনুসরণ করা ফ্রি টাইমার অ্যাপ কিংবা আকর্ষণীয় ডিজাইনের রান্নাঘরের টাইমার এই কৌশলটিকে আরও কার্যকর করতে পারে।
২. কাজকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করুন
শিশুরা অনেক সময় বড় কাজ শুরু করতেই দ্বিধা অনুভব করে। বড় কাজগুলো ছোট ছোট অংশে ভাগ করলে তা সহজ ও কম ভীতিকর মনে হবে। এতে কাজ শুরু করার আগ্রহ ও আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
৩. ধাপে ধাপে নির্দেশনা দিন
একসঙ্গে অনেক নির্দেশনা দিলে শিশুদের পক্ষে তা মনে রাখা কঠিন হয়ে যায়। অভিভাবকরা যদি একটি বা দুটি নির্দেশনা একবারে দেন, তবে শিশুদের পক্ষে তা অনুসরণ করা সহজ হবে। চেকলিস্ট ব্যবহার করাও কার্যকর হতে পারে।
৪. মনোযোগ ফিরিয়ে আনতে সংকেত ব্যবহার করুন
শিশুরা মাঝে মাঝে মনোযোগ হারালে তা ফিরিয়ে আনার জন্য নির্দিষ্ট সংকেত ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন কাঁধে হালকা স্পর্শ করা বা পূর্বনির্ধারিত কোনো শব্দ ব্যবহার করা যেতে পারে। একই কৌশল শিক্ষকরা ব্যবহার করলে শিশুরা বিভিন্ন পরিবেশেও মনোযোগ ধরে রাখতে পারবে।
৫. ফিজেট টয় ব্যবহার করান
ফিজেট টয় বা ছোট ছোট হাতের খেলনা শিশুদের মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করতে পারে। যেমন রাবার ব্যান্ড বা স্কুইজ বল ব্যবহার করলে শিশুরা হালকা নড়াচড়ার মাধ্যমে মনোযোগ ধরে রাখতে পারবে।
৬. শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করান
মাইন্ডফুলনেস বা মনোযোগ বাড়ানোর জন্য শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বেশ কার্যকর। ক্লাস শুরু হওয়ার আগে বা পরীক্ষার সময় ৫-৪-৩-২-১ কৌশল বা শান্ত শ্বাস নেওয়ার অনুশীলন করলে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।
এই কৌশলগুলো স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে। যদিও সব বাহ্যিক কারণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, তবে শিশুরা যাতে মনোযোগ ধরে রাখতে পারে, সে জন্য এই কৌশলগুলো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। অভিভাবকদের উচিত শিশুদের প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং তাদের ছোট অর্জনকেও প্রশংসা করা।
এডিএইচডি সংক্রান্ত লক্ষণ সম্পর্কে জানা ও মনোযোগ কীভাবে কাজ করে তা বোঝা অভিভাবকদের জন্য সহায়ক হতে পারে। মনোযোগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও তথ্য ও উপযুক্ত কৌশল সম্পর্কে জানার জন্য বিভিন্ন সংস্থান ব্যবহার করা যেতে পারে।
রাজু