ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৬ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১

অজান্তেই বন্ধু হারাচ্ছেন? এই ৮টি ভুল একবার চেক করুন

প্রকাশিত: ২৩:৩০, ১৫ মার্চ ২০২৫

অজান্তেই বন্ধু হারাচ্ছেন? এই ৮টি ভুল একবার চেক করুন

ছবি: সংগৃহীত।

আমরা সবাই চাই বন্ধুত্ব টিকে থাকুক, সম্পর্ক দৃঢ় হোক। কিন্তু কখনও কখনও কিছু অভ্যাসের কারণে আমরা নিজের অজান্তেই প্রিয় বন্ধুদের দূরে সরিয়ে দিই। বিষয়টি বোঝার আগেই সম্পর্ক শিথিল হয়ে যায়, দূরত্ব তৈরি হয়। এই ধরনের অভ্যাসগুলো সাধারণত খুব সূক্ষ্ম হয়, তাই আমরা সহজে সেগুলো খেয়াল করি না। অথচ সময়মতো সচেতন হলে সম্পর্কগুলো রক্ষা করা সম্ভব।

এই প্রতিবেদনে এমনই ৮টি সূক্ষ্ম অভ্যাস তুলে ধরা হলো, যা মানুষ অজান্তেই চর্চা করে এবং ফলস্বরূপ বন্ধুরা দূরে সরে যায়।

১. সবসময় নিজের কথা বলা, অন্যের কথা শুনতে না চাওয়া
কোনো সম্পর্কের জন্য পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমঝোতা জরুরি। কিন্তু যদি কেউ সবসময় শুধু নিজের গল্প বলে যায়, অন্যের অনুভূতি বা কথা শুনতে আগ্রহী না হয়, তাহলে বন্ধুরা ধীরে ধীরে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।

২. কেবল প্রয়োজনের সময় যোগাযোগ করা
বন্ধুদের শুধু নিজের প্রয়োজনে ফোন বা বার্তা পাঠালে, তারা বুঝতে পারে যে সম্পর্কটি একপাক্ষিক হয়ে গেছে। আন্তরিকতা থাকলে সম্পর্ক স্বাভাবিকভাবেই গড়ে ওঠে, কিন্তু প্রয়োজনের সময়ই যদি যোগাযোগ করা হয়, তবে বন্ধুত্ব ফিকে হতে থাকে।

৩. নেতিবাচকতা ছড়িয়ে দেওয়া
নিরন্তর অভিযোগ, হতাশা ও নেতিবাচকতা অন্যের ওপর চাপিয়ে দিলে বন্ধুরা ধীরে ধীরে সেই সম্পর্ক এড়িয়ে চলতে শুরু করে। সবাই চায় বন্ধুত্বে আনন্দ ও ইতিবাচকতা থাকুক, কিন্তু যদি কেউ সবসময় হতাশাবাদী হন, তবে অন্যরা তা এড়িয়ে যেতে বাধ্য হয়।

৪. প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব দেখানো
বন্ধুত্বের মধ্যে যদি প্রতিযোগিতার মনোভাব চলে আসে, তাহলে তা সম্পর্কের ভারসাম্য নষ্ট করে। কেউ যদি সবসময় অন্যের সাফল্যকে ম্লান করে নিজের কৃতিত্ব জাহির করতে চায়, তবে সেই বন্ধুত্ব দীর্ঘস্থায়ী হয় না।

৫. কথা দিয়ে না থাকা
প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা না রাখা, নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত না হওয়া বা হঠাৎ করে পরিকল্পনা বাতিল করা বন্ধুত্বে অবিশ্বাসের সৃষ্টি করে। নিয়মিত এমন হলে বন্ধুরা আর সেই ব্যক্তির ওপর ভরসা করতে পারে না।

৬. সবকিছুতে সমালোচনা করা
নিরবচ্ছিন্ন সমালোচনা ও খুঁত ধরা সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। বন্ধুর কোনো নতুন উদ্যোগ বা সিদ্ধান্তকে যদি কেউ সবসময় নেতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে, তাহলে সেই বন্ধু ধীরে ধীরে দূরে সরে যায়।

৭. ব্যক্তিগত সীমারেখা লঙ্ঘন করা
বন্ধুত্বের মধ্যেও ব্যক্তিগত জায়গার প্রয়োজন হয়। কেউ যদি বন্ধুর ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে অযথা নাক গলায় বা গোপনীয়তা না রাখে, তাহলে সম্পর্ক টিকে থাকে না।

৮. কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করা
কোনো বন্ধু সাহায্য করলে বা পাশে থাকলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা জরুরি। কিন্তু কেউ যদি সেটা করতে ভুলে যায় বা গুরুত্ব না দেয়, তবে অন্যজন অবমূল্যায়িত বোধ করে এবং ধীরে ধীরে দূরে সরে যায়।


বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে শুধুমাত্র ভালো সময় কাটানোই যথেষ্ট নয়, বরং সম্পর্কের প্রতি যত্নশীল হওয়া জরুরি। আমাদের কিছু অভ্যাস অজান্তেই অন্যদের কষ্ট দেয় বা দূরে ঠেলে দেয়। তাই সময়মতো সেগুলো চিহ্নিত করে সংশোধন করতে পারলে বন্ধুত্ব দীর্ঘস্থায়ী ও গভীর হতে পারে।

বন্ধুত্বের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় ও আন্তরিক করতে হলে আমাদের নিজেদের আচরণের প্রতি যত্নবান হতে হবে। তাহলে হয়তো অনেক মূল্যবান সম্পর্ক রক্ষা করা সম্ভব হবে।

নুসরাত

×