ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১

রমজানেও চলবে শরীর চর্চা, জরুরি পরিকল্পনা ও ভারসাম্য

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ১৪ মার্চ ২০২৫

রমজানেও চলবে শরীর চর্চা, জরুরি পরিকল্পনা ও ভারসাম্য

ছবি: সংগৃহীত।

সুস্থ থাকতে নিয়মিত শরীর চর্চার বিকল্প নেই। তবে রমজান মাসে আমাদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আসে। দীর্ঘ সময় রোজা থাকার পর ইফতার করে ক্লান্ত অবস্থায় অনেকেই শরীর চর্চা করা থেকে বিরত থাকেন। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু নিয়ম মেনে রমজান মাসেও শরীর চর্চা করা সম্ভব এবং এতে কোনো সমস্যা হয় না।

সম্প্রতি উইমেন্স হেলথ-এর প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্যের ডাক্তার সাইয়েদা মাউজি ও মুয়াথাই বক্সার নেসরিন ডালি জানিয়েছেন, কীভাবে রমজানের সঠিক পরিকল্পনায় এবং ব্যালেন্স রেখে নিরাপদ ও কার্যকর উপায়ে শরীর চর্চা করা যায়। আজ জানবো সেই সম্পর্কে—

রমজানে শরীর চর্চার প্রধান লক্ষ্য:

  • শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখা।
  • নিরাপদ ও টেকসই শরীর চর্চার রুটিন তৈরি করা।
  • পুষ্টিকর ও জলসমৃদ্ধ খাবারের প্রতি মনোযোগ দেওয়া।

শরীর চর্চার সঠিক সময়:
রোজা রেখে শরীর চর্চা করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য, তাই সঠিক সময় বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। নেসরিন ডালির মতে—

১. ইফতারের আগে শরীর চর্চা করা যেতে পারে, এতে শরীরের মেটাবলিজম স্বাভাবিক থাকে এবং শরীর চর্চার পরপরই পানি পান ও খাবার খাওয়ার সুযোগ পাওয়া যায়।
২. ইফতার ও সেহরির মধ্যবর্তী সময়ে শরীর চর্চা করা ভালো, কারণ এতে পানি পান করা সম্ভব হয়, যা শরীরের পানিশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করবে।

রমজানে শরীর চর্চার জন্য করণীয়:
১. নতুন কোনো ওয়ার্কআউট শুরু না করে আগের রুটিন বজায় রাখা ভালো।
ডাক্তার সাইয়েদা মাউজির মতে, উচ্চ মাত্রার ওয়ার্কআউট এড়িয়ে চলা এবং শরীর চর্চার সময়সীমা সংক্ষিপ্ত করা ভালো।
২. পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি। ইফতার ও সেহরির মধ্যে প্রচুর পানি পান করতে হবে, যাতে শরীর হাইড্রেটেড থাকে।
৩. পানিশূন্যতা রোধে তরমুজ, শসা, টমেটো, আপেল, কমলা ইত্যাদি জলসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া যেতে পারে।
৪. যদি শরীর চর্চার সময় মাথা ঘোরা, দুর্বল লাগা, বমিভাব, প্রস্রাবের রং গাঢ় হয়ে যাওয়া বা বুকে ধড়ফড় করা এই ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়, তবে সঙ্গে সঙ্গে বিশ্রাম নিতে হবে।

কোন ব্যায়ামগুলো উপযুক্ত?
রমজানে ভারী ও কষ্টসাধ্য শরীর চর্চার পরিবর্তে কিছু হালকা ব্যায়াম করা ভালো, যেমন—

  • ইয়োগা বা স্ট্রেচিং
  • হালকা হাঁটা বা জগিং
  • ফুসফুসের ব্যায়াম ও পেটের ব্যায়াম

খাদ্যাভ্যাসের দিকনির্দেশনা:
১. ইফতার ও সেহরিতে উচ্চ ফাইবার ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার রাখা উচিত, যেমন— ওটস, ব্রান, বাদাম, ডাল, সবজি, বাদামি চাল, দই, দুধ, মাছ ও মাংস।
২. অতিরিক্ত লবণ ও ক্যাফেইন এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এটি পানিশূন্যতা বাড়িয়ে দেয়।
৩. পানিশূন্যতা রোধে ফলমূল, শাকসবজি এবং প্রাকৃতিক পানীয় গ্রহণ করা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

বিশ্রাম নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ:
রমজানে অতিরিক্ত চাপ না নিয়ে বিশ্রামের সময় বাড়ানো প্রয়োজন। ওয়ার্কআউটের ফ্রিকোয়েন্সি কমিয়ে সপ্তাহে এক-দুই দিন বিশ্রাম নেওয়া যেতে পারে, যা শরীরকে পুনরুদ্ধারে সাহায্য করবে।

সঠিক পরিকল্পনা ও নিয়ম মেনে চললে রমজান মাসেও শরীর চর্চা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব এবং এতে শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখা যায়।

নুসরাত

×