ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

পরীক্ষার প্রস্তুতিতে শিশুর চাপ কমাতে যেভাবে অভিভাবকরা সাহায্য করতে পারেন!

প্রকাশিত: ১৫:৪১, ১২ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ১৫:৪২, ১২ মার্চ ২০২৫

পরীক্ষার প্রস্তুতিতে শিশুর চাপ কমাতে যেভাবে অভিভাবকরা সাহায্য করতে পারেন!

ছবি: সংগৃহীত

পরীক্ষার সময় শিশুরা অনেক চাপের মধ্যে থাকে। আবার  কখনও কখনও অভিভাবকদের উদ্বেগও শিশুর মানসিক চাপকে বাড়িয়ে দেয়। এই চাপের পরিবেশে, প্রতিটি অভিভাবকই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি, নোটপড়া, এবং গভীর রাত পর্যন্ত পড়াশোনা নিয়ে খুব পরিচিত। তবে এটি বুঝতে হবে যে শুধুমাত্র শিশুদেরই নয়, অভিভাবকদের উদ্বেগও শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য এবং পারফরম্যান্সে বিশাল প্রভাব ফেলতে পারে।

অভিভাবকদের উদ্বেগের অশান্ত প্রভাব

যখন অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন, হতাশ বা ক্লান্ত থাকেন, শিশুরাও এই অনুভূতি শিকার হয়ে তাদের মানসিক চাপ অনুভব করে। এমনকি অভিভাবকদের মুখাবয়ব, চিন্তা-ভাবনা এবং শরীরী ভাষা থেকেও শিশুরা উদ্বেগের সংকেত গ্রহণ করতে পারে, যা তাদের মনোযোগে বাধা দেয় এবং নানা শারীরিক সমস্যা তৈরি করতে পারে, যেমন মাথাব্যথা বা পেটব্যথা।

শিশুদের মানসিক চাপ কমানোর জন্য অভিভাবকদের প্রথম কাজ হলো তাদের নিজের চাপের উৎস চিহ্নিত করা। দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততা, সন্তানদের পরীক্ষার ফলাফলের জন্য উদ্বেগ কিংবা সীমানা ছোঁয়া সময়সীমা এই সকল চাপের কারণ হতে পারে।

অভিভাবকদের জন্য কিছু কার্যকরী পরামর্শ:

নিজের চাপ ম্যানেজ করুন
অভিভাবকদের নিজের চাপ শনাক্ত করা এবং তা নিয়ন্ত্রণ করার উপায় খুঁজে বের করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গভীর শ্বাস প্রশ্বাস এবং ধ্যানের মাধ্যমে দৈনন্দিন চাপ কমানো যেতে পারে, যা সারা দিনের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করবে।

খোলামেলা যোগাযোগ করুন
শিশুকে জানানো যে পরীক্ষা নিয়ে চাপ অনুভব করা স্বাভাবিক, তবে সেই চাপ কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে, সে বিষয়ে সহায়তা প্রদান করা উচিত। এটা শিশুদের সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্য গড়ে তুলতে সাহায্য করবে এবং তাদের সঠিকভাবে চাপ সামাল দেওয়ার উপায় শেখাবে।

নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করুন
একটি স্থির রুটিনের মাধ্যমে শিশুদের প্রতিদিনের পড়াশোনা, বিশ্রাম, খাবার এবং পরিবারিক কার্যকলাপের সময়সীমা নির্ধারণ করা উচিত। এই নিয়মিত রুটিন শিশুদের মনোযোগ এবং প্রস্তুতি শক্তিশালী করবে।

ব্রেক এবং বিশ্রামের গুরুত্ব
পরীক্ষা চলাকালে শিশুদের মাঝে মাঝে বিরতি নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করুন। ছোটো ছোটো বিরতি, হাঁটাহাঁটি অথবা কিছু মজাদার হবি করতে দেওয়া, তাদের মস্তিষ্ককে আরও কার্যকরভাবে কাজ করতে সাহায্য করবে।

নিজেদের জন্য সময় বের করার সুযোগ করে দিন
অভিভাবকদেরও নিজের সুস্থতা এবং সুখী মনোভাব তৈরি করতে হবে। তাদের হালকা শারীরিক ব্যায়াম, পড়াশোনা বা প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটানো উচিত, যাতে শিশুরাও ইতিবাচক উদাহরণ দেখে নিজেকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখতে শিখে।

ইতিবাচক ভাষার শক্তি

শব্দের প্রভাব অনেক গভীর। যখন অভিভাবকরা তাদের উদ্বেগ বা হতাশা প্রকাশ করেন, শিশুদের উপর তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই, অভিভাবকদের উচিত ইতিবাচক এবং উৎসাহব্যঞ্জক ভাষা ব্যবহার করা, যেমন "আমি জানি তুমি অনেক পরিশ্রম করছো", বা "আমরা একসাথে এইটা করতে পারব"।

এভাবে অভিভাবকরা নিজেদের চাপ নিয়ন্ত্রণ করে, সন্তানের চাপ কমানোর পাশাপাশি, একটি পজিটিভ এবং স্থিতিশীল পরিবেশ গড়ে তুলতে পারেন।

শিহাব

×