
ছবি: সংগৃহীত
বর্তমান যুগে আমরা প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়েছি। মনে হয় যেন উন্নতির সব পথই নতুন প্রযুক্তি, অ্যাপ, বা ট্রেন্ডের মাধ্যমে নির্ধারিত হচ্ছে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, অতীতের অনেক সহজ অথচ কার্যকর জীবনধারা আজও সমান উপকারী।
সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে ‘This Evergreen Home’ ব্লগের লেখক মাইক ও মলি আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন ১০টি পুরনো দিনের আত্মউন্নয়ন কৌশল, যা আজকের ব্যস্ত জীবনে ফিরে এলে আমরা আরও ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারব। আসুন, জেনে নেওয়া যাক এই গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শগুলো—
১. ডায়েরি লেখা শুরু করুন
আগে মানুষ নিয়মিত ডায়েরি লিখত, আর এটি ছিল তাদের ভাবনা ও অভিজ্ঞতা সংরক্ষণের অন্যতম উপায়। এটি মানসিক চাপ কমায়, আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং নিজের উন্নতি মূল্যায়ন করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কয়েক লাইন লিখলেও এটি আপনার ব্যক্তিগত বিকাশে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
২. প্রতিদিন হাঁটুন
জিম বা ব্যায়ামের প্রয়োজন নেই, শুধু প্রতিদিন কিছুক্ষণ হাঁটাই শরীর ও মনের জন্য দারুণ উপকারী। এটি আপনাকে ফিট রাখবে, মানসিক চাপ কমাবে এবং সৃজনশীল চিন্তার সুযোগ করে দেবে।
৩. কাগজের বই পড়ুন
ডিজিটাল স্ক্রিনের বদলে প্রকৃত বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। বই আমাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়ায়, চিন্তাশক্তি শাণিত করে এবং মানসিক শান্তি এনে দেয়।
৪. সকাল সকাল উঠুন
পুরনো প্রবাদেই আছে—"সকালের পাখি বেশি খাবার পায়।" সকালটা শান্ত এবং মনোযোগী থাকার আদর্শ সময়। অন্তত ৩০ মিনিট আগে উঠলে নিজের জন্য কিছু সময় বের করতে পারবেন, যা সারাদিনের কাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
৫. নিজের জন্য রান্না করুন
আগে রান্না করা ছিল জীবনের প্রয়োজনীয় দক্ষতা, কিন্তু এখন এটি বিলাসিতায় পরিণত হয়েছে। তবে রান্না করা শুধু খাওয়ার জন্য নয়, এটি আত্মনির্ভরশীলতা ও সৃজনশীলতারও প্রতিফলন। সহজ কিছু খাবার রান্না শিখলেও আপনি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে পারবেন।
৬. ধন্যবাদ জানিয়ে হাতের লেখায় চিঠি লিখুন
আজকাল সবাই ইমেইল বা মেসেজে ধন্যবাদ জানায়, কিন্তু হাতে লেখা চিঠির আবেদন অন্যরকম। এটি কৃতজ্ঞতার গভীরতা প্রকাশ করে এবং প্রাপককে বিশেষ অনুভূতি দেয়।
৭. সামনাসামনি কথা বলার অভ্যাস গড়ে তুলুন
টেক্সট ও সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে আমরা বাস্তব আলাপচারিতা ভুলতে বসেছি। মানুষকে মনোযোগ দিয়ে শোনা এবং ভালো প্রশ্ন করা—এই অভ্যাস আপনার ব্যক্তিগত ও পেশাদার জীবনে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
৮. নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান
পুরনো দিনে সবাই নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যেত, কারণ তারা জানত, পর্যাপ্ত ঘুমই সুস্থ ও প্রাণবন্ত থাকার মূল চাবিকাঠি। তাই প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
৯. কিছু কাজ ইচ্ছা করে কঠিন উপায়ে করুন
সর্বদা সহজ ও দ্রুত সমাধান খোঁজা আমাদের দক্ষতা কমিয়ে দেয়। মাঝে মাঝে নিজে হাতে রান্না করা, ঘর পরিষ্কার করা, বা কাগজে লিখে তালিকা তৈরি করা—এই ধরনের কাজ আপনাকে বাস্তব জীবনের সঙ্গে সংযুক্ত রাখবে।
১০. একা কিছু সময় কাটান (স্ক্রিন ছাড়া)
আগে মানুষ একা সময় কাটানোর সুযোগ পেত, যা তাদের চিন্তাশক্তিকে প্রখর করত। এখন স্ক্রিন আমাদের প্রতিটি মুহূর্ত দখল করে নিয়েছে। নিজেকে চিনতে এবং সৃজনশীল হতে চাইলে স্ক্রিন ছাড়া কিছু সময় একা কাটানোর অভ্যাস করুন।
এই পুরনো দিনের কৌশলগুলো আজও সমান কার্যকর। এগুলো আমাদের জীবনের গতি মন্থর করে, বাস্তবতার সঙ্গে সংযুক্ত রাখে এবং মানসিকভাবে শক্তিশালী করে তোলে।
কানন