
ছবিঃ সংগ্রহীত
শিশুদের ঘরের কাজ শেখানো সহজ নয়। তবে এখন, যখন তারা কিশোর, তারা নিজেদের দেখভাল করতে পারে, আর আমারও আছে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। সন্তানদের ছোটবেলা থেকে রান্না ও গৃহস্থালির কাজ শেখানো ছিল কঠিন, কিন্তু আজ তারা স্বনির্ভর।
আমার স্বামী ও আমি গত সপ্তাহান্তে ডিনারে বের হয়েছিলাম। বের হওয়ার সময় হঠাৎ খেয়াল করলাম, বাচ্চাদের জন্য কোনো খাবারের ব্যবস্থা করিনি। তাই দরজার দিকে যেতে যেতে চিৎকার করে বললাম, "আমরা বের হচ্ছি! ফ্রিজে যা আছে, তাই দিয়ে তোমরা নিজেরাই রাতের খাবার বানিয়ে নাও!"
-আর তারা সত্যিই তা করেছিল।
এটা সেই সময়ের তুলনায় বিশাল পরিবর্তন, যখন চারটি ছোট বাচ্চা ঘরময় দৌড়াদৌড়ি করত, আর আমি সারাদিন এক মুহূর্তের জন্যও বসতে পারতাম না। ধোয়া-কাচা, রান্না, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা—এসব কাজ আমার স্বামী ও আমি মিলেই সবসময় করতাম।
ধাপে ধাপে শেখানোর ফল এখন মিলছে
গত মাসে পরিবারসহ আমরা কোলোরাডোতে স্কি ট্রিপে গিয়েছিলাম। সবাই আমার একই কথা শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়ে গিয়েছিল—"এখন সবকিছু কত সহজ!"
আগে যেখানে আমাদের নিজেদের পাশাপাশি বাচ্চাদের জন্য খাবার, জামাকাপড়, শীতের পোশাক ও অন্যান্য জিনিসপত্র গোছাতে হতো, এবার শুধু সময় বললাম—"বিকেল ২টায় বের হবো," আর সবাই ঠিক সময়মতো প্রস্তুত হয়ে গাড়িতে উঠে পড়ল। এমনকি কেউ কোনো কোটও ভুলে যায়নি!
ছোটবেলায় শেখানো কঠিন ছিল, কিন্তু প্রয়োজনীয়ও ছিল
এটা একদিনে হয়নি। ছোট ছোট কাজ দিয়ে শুরু করেছিলাম, আর ধাপে ধাপে তাদের দায়িত্ব বাড়িয়েছি।
তবে এটা সহজ ছিল না। রান্না করতে দিলে বেশি সময় লাগত, বাথরুম পুরোপুরি পরিষ্কার হতো না, জামাকাপড় ভাঁজ করলেও ঠিকঠাক হতো না।
অনেক বাবা-মা মনে করেন, যারা রান্না বা গৃহস্থালির কাজ শেখে না, তারা যেন মা-বাবার বেশি যত্নে বড় হয়েছে। কিন্তু সত্য হলো—আমরা সবাই ব্যস্ত থাকি। স্কুল, খেলাধুলা, চাকরি সামলে ৬টা বাজিয়ে বাড়ি ফিরে ক্ষুধার্ত বাচ্চাদের শসা কাটতে শেখানো কঠিন। বাথরুম যদি দুর্গন্ধ ছড়ায়, নিজেই পরিষ্কার করাটা বেশি কার্যকর।
আত্মবিশ্বাস ও স্বাধীনতা এনে দিয়েছে এই শিক্ষা
কঠিন হলেও শেখানোর এই প্রক্রিয়া আমাদের জন্য সুফল এনেছে।
কয়েক বছর আগে, শীতকালীন ছুটিতে আমি আমার মধ্যম সন্তানকে বললাম, "তোমাকে রাতের খাবার বানাতে হবে।" আমরা একসঙ্গে দোকানে গেলাম, আমি তাকে নিজের উপকরণ সংগ্রহ করতে দিলাম, আর আমি ক্যাফেতে বসে বই পড়লাম। সে ঘরে ফিরে মজাদার রাতের খাবার বানাল, আর আমি আনন্দে কেঁদে ফেললাম।
আমার আরেক ছেলে ক্যাম্পিং ট্রিপে দারুণ সব নাশতা তৈরি করেছিল, যা আমি নিজেও বানাতাম না। এখন আমি কাউকে ব্যাগ গোছানোর তদারকি করতে হয় না। এমনকি থ্যাঙ্কসগিভিং ডিনারে সবাই মিলে একটি করে পদ রান্না করে, ফলে পুরো চাপ কারও ওপর পড়ে না। আমার বড় ছেলে যখন কলেজে গেল, তখন সে বন্ধুবান্ধবকে লন্ড্রি করতে শিখিয়েছিল।
সন্তানদের স্বনির্ভর শেখানোর সুফল এখন পাচ্ছি
🔹 এখন তারা নিজের কাপড় ধুতে পারে, তাই পছন্দের শার্টের জন্য আমাকে অপেক্ষা করতে হয় না।
🔹 কেউ যদি রান্না করা খাবার পছন্দ না করে, তাহলে সে নিজেই কিছু বানিয়ে নিতে পারে।
🔹 যদিও ঘরের কাজ নিয়ে এখনো মাঝে মাঝে ছোটখাটো বাগবিতণ্ডা হয়, তবে আমি নিশ্চিত—তারা ভবিষ্যতে নিজেদের জীবন সামলাতে পারবে।
সূত্রঃ https://www.businessinsider.com/mom-taught-kids-how-to-take-care-of-themselves-freedom-2025-3
ইমরান