ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা যেভাবে কমাবেন

প্রকাশিত: ১৫:৩৬, ১০ মার্চ ২০২৫

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা যেভাবে কমাবেন

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান ব্যস্ত জীবনে দুশ্চিন্তা আমাদের নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে। কাজের চাপ, ব্যক্তিগত সমস্যা বা ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা—সবকিছু মিলিয়ে আমরা প্রায়ই অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় ভুগি। তবে দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তাই দুশ্চিন্তা কমানোর উপায় জানা জরুরি।  

বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু অভ্যাস ও কৌশল অনুসরণ করলে দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আসুন, জেনে নেওয়া যাক কীভাবে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা কমানো যায়—  

সমস্যাকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করুন
অনেক সময় একসঙ্গে অনেক কিছু নিয়ে ভাবতে গিয়েই দুশ্চিন্তা বেড়ে যায়। তাই সমস্যাগুলোকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে একবারে একটি বিষয় নিয়ে ভাবুন এবং সমাধান বের করার চেষ্টা করুন।  

নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা বিষয়গুলো নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না
সবকিছু আমাদের হাতে নেই। তাই এমন বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা করা বন্ধ করুন, যা আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। বরং যেগুলো পরিবর্তন করা সম্ভব, সেগুলো নিয়ে কাজ করুন।  

মেডিটেশন ও শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন 
নিয়মিত মেডিটেশন বা গভীর শ্বাস নেওয়ার ব্যায়াম করলে মস্তিষ্ক শান্ত থাকে এবং দুশ্চিন্তা কমে। প্রতিদিন মাত্র ১০-১৫ মিনিট ধ্যান করলে মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যাবে।  

দৈনন্দিন রুটিন ঠিক করুন
পরিকল্পনামাফিক চললে দুশ্চিন্তা কম হয়। প্রতিদিনের কাজগুলোর জন্য নির্দিষ্ট সময় ঠিক করুন এবং সেটি মেনে চলার চেষ্টা করুন। এতে আপনার মস্তিষ্কে অপ্রয়োজনীয় দুশ্চিন্তার পরিমাণ কমে আসবে।  

শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকুন
ব্যায়াম বা হালকা শারীরিক পরিশ্রম করলে শরীর থেকে এন্ডোরফিন নামক হরমোন নিঃসৃত হয়, যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। হাঁটা, দৌড়ানো বা যোগব্যায়াম দুশ্চিন্তা কমানোর দারুণ উপায়।  

পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন
ঘুমের অভাব দুশ্চিন্তার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ভালোভাবে ঘুমানোর অভ্যাস করুন। রাতে ফোন বা ল্যাপটপ থেকে দূরে থাকুন, যাতে ভালো ঘুম হয়।  

ইতিবাচক চিন্তা করুন
নেতিবাচক চিন্তাগুলো মস্তিষ্ক থেকে সরিয়ে ইতিবাচক চিন্তায় মনোযোগ দিন। আত্মবিশ্বাস বাড়ান এবং নিজেকে উৎসাহিত করুন।  

প্রয়োজন হলে কাউকে বলুন
আপনার দুশ্চিন্তা যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তাহলে কাছের বন্ধুবান্ধব, পরিবারের সদস্য বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলুন। কাউকে নিজের অনুভূতি বললে মানসিক চাপ কমতে পারে।  

শখের কাজে সময় দিন
গান শোনা, বই পড়া, আঁকাআঁকি, বাগান করা বা অন্য যেকোনো শখের কাজে সময় দিন। এটি মস্তিষ্ককে চাপমুক্ত রাখে এবং দুশ্চিন্তা কমায়।  

দুশ্চিন্তা আমাদের জীবনের অংশ হলেও অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা আমাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই দুশ্চিন্তা কমানোর জন্য সচেতনভাবে অভ্যাস পরিবর্তন করুন। মনে রাখবেন, মানসিক প্রশান্তিই সুস্থ ও সুন্দর জীবনের মূল চাবিকাঠি।

শিলা ইসলাম

×