ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১

ওভার থিংকিং ধরা পরে যে সাতটি আচরণে

প্রকাশিত: ১০:৪০, ১০ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ১১:৩৮, ১০ মার্চ ২০২৫

ওভার থিংকিং ধরা পরে যে সাতটি আচরণে

ছবি: সংগৃহীত

দৈনন্দিন জীবনের চাপ ও মানসিক উদ্বেগের কারণে অনেকেই অতিরিক্ত চিন্তার (ওভারথিংকিং) শিকার হন। বিশেষ করে রাতের বেলা, যখন চারপাশ শান্ত হয়ে যায়, তখন মস্তিষ্কের মধ্যে হাজারো চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকে। এই প্রবণতা শুধু ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় না, বরং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

মনোবিজ্ঞানীদের মতে, যাঁরা অতিরিক্ত চিন্তা করেন, তাঁদের মধ্যে সাধারণত কিছু নির্দিষ্ট আচরণ দেখা যায়।

ওভারথিংকিং-এর ৭টি লক্ষণ:

১. আগের কথোপকথন বারবার মনে পড়া
আগের কোনো আলোচনায় কী বলেছিলেন বা অন্য কেউ কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল—তা নিয়ে অতিরিক্ত ভাবনা চলে। তাঁরা ভাবেন, "আরেকভাবে বললে ভালো হতো কি?" কিংবা "আমি ভুল কিছু বলে ফেললাম না তো?"


২. রাতে ঘুমাতে সমস্যা হওয়া
সারাদিনের ঘটনা, ভবিষ্যতের শঙ্কা বা অসমাপ্ত কাজ নিয়ে চিন্তা করতে করতে অনেকেই সহজে ঘুমাতে পারেন না। মস্তিষ্ক যেন এক মুহূর্তের জন্যও থামতে চায় না।


৩. ছোটখাটো সিদ্ধান্ত নেওয়াতেও দ্বিধা
খাবারের মেনু থেকে শুরু করে অফিসের কোনো ইমেইল পাঠানো পর্যন্ত—সব ক্ষেত্রেই তাঁরা দ্বিধাগ্রস্ত থাকেন। সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেও মনে হতে পারে, "আমি ঠিক করলাম তো?"


৪. নানা ধরনের কাল্পনিক পরিস্থিতি তৈরি করা
ভবিষ্যতে কী হতে পারে, তা নিয়ে নানা রকমের কল্পনা চলে তাঁদের মনে। কোনো ঘটনা ঘটার আগেই তাঁরা তার একাধিক সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে ভেবে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার চেষ্টা করেন।


৫. পুরনো ভুলের জন্য অনুশোচনা করা
অতীতে ঘটে যাওয়া ভুলগুলোর জন্য তাঁরা বারবার আফসোস করেন। মনে হয়, "ওই সময় যদি অন্যভাবে কাজ করতাম, তাহলে ভালো হতো!" এই চিন্তাগুলো তাঁদের মানসিক শান্তি নষ্ট করে দেয়।


৬. অন্যদের কাছ থেকে নিশ্চয়তা চাওয়া
সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বা পরে তাঁরা প্রায়ই অন্যদের মতামত বা অনুমোদনের প্রয়োজন অনুভব করেন। "আমি কি ঠিক করেছি?"—এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজেন কাছের মানুষের কাছে।


৭. অন্যদের কথাবার্তা বা আচরণ অতিরিক্ত বিশ্লেষণ করা
কেউ কী বলল, কেমন ভঙ্গিতে বলল—এসব নিয়ে তাঁরা অতিরিক্ত ভাবতে থাকেন। মনে হতে পারে, "সে কি কিছু ইঙ্গিত দিতে চেয়েছে?" বা "আমার প্রতি তার মনোভাব কি বদলে গেছে?"

ওভারথিংকিং থেকে মুক্তির উপায়

বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত চিন্তা কমাতে মেডিটেশন, ডায়েরি লেখা, শরীরচর্চা ও ইতিবাচক চিন্তার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। প্রয়োজন হলে মনোবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াও সহায়ক হতে পারে।

অতিরিক্ত চিন্তা শুধু মানসিক শান্তিই নষ্ট করে না, বরং আত্মবিশ্বাসেও প্রভাব ফেলে। তাই সচেতনভাবে চিন্তার ধরন পরিবর্তন করা ও মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
 

কানন

×