
সফল ব্যক্তিরা জানেন, পরিষ্কারভাবে চিন্তার মূল চাবিকাঠি আবেগ দূরে সরিয়ে ফেলা নয়—বরং আবেগ ও যুক্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।
গত সপ্তাহে আমার এক বন্ধু একটি সমস্যার কথা শেয়ার করেছিল। সে সম্প্রতি নতুন চাকরি নিয়েছে, পাশাপাশি নিজের ব্যবসা গড়ে তুলছে। শুরু থেকেই সে নিয়োগকর্তাকে জানিয়েছে যে ভবিষ্যতে সে পুরোপুরি নিজের ব্যবসায় মনোযোগ দেবে।
এখন সমস্যাটি হলো: সে লিংকডইনে নিজের ব্যবসা নিয়ে আরও বেশি কনটেন্ট পোস্ট করতে চায়, তবে একই সঙ্গে নিয়োগকর্তার প্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন। সে জানতে চাইল, "আমি নিশ্চিত নই, তিনি এসব পোস্ট দেখে কী ভাববেন। এটি কি কর্মক্ষেত্রে কোনো সমস্যা তৈরি করবে?"
আমার এই বন্ধু অত্যন্ত বুদ্ধিমান ও সংবেদনশীলভাবে সচেতন। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, তার সঙ্গে একটি কার্যকর পদ্ধতি শেয়ার করব—যা আমি আমার ক্লায়েন্টদের সঙ্গেও ব্যবহার করি। এটি একটি সহজ কিন্তু শক্তিশালী প্রশ্নের ওপর ভিত্তি করে তৈরি: "আপনি কী পরামর্শ দিতেন?"
কেন এই প্রশ্নটি এত কার্যকর?
এই প্রশ্নটি আমাদের পরিস্থিতি থেকে সাময়িকভাবে দূরে সরিয়ে, যুক্তিযুক্ত দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করতে সহায়তা করে।
আমি আমার বন্ধুকে বললাম, "ধরো, কয়েক বছর পর তুমি সফলভাবে নিজের ব্যবসা গড়ে তুলেছ। এখন, কেউ তোমার কাছে এসে ঠিক একই সমস্যার সমাধান চাইছে। তুমি তাকে কী বলবে?"
এই পদ্ধতিটি দাবা খেলার মতো। বাইরে থেকে খেলা দেখলে সঠিক চাল সহজে বোঝা যায়, কিন্তু নিজে খেললে ভুল করা স্বাভাবিক। আবেগের কারণে আমরা প্রায়ই ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। তবে নিজেকে এই প্রশ্নটি করলে, আমরা পরিস্থিতি থেকে দূরত্ব তৈরি করতে পারি এবং যুক্তি ও অনুভূতির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে চিন্তা করতে পারি।
যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার শক্তি
এই পদ্ধতি সবসময় তাৎক্ষণিক সমাধান দেবে না, তবে এটি চিন্তার একটি ভালো সূচনা তৈরি করবে। আমার বন্ধু পরে বলল, "এটি আমাকে বুঝতে সাহায্য করেছে, কোন বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া উচিত এবং কোনটি উপেক্ষা করা উচিত।"
পরিশেষে, সে সিদ্ধান্ত নিল যে তার নিয়োগকর্তার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ। ভবিষ্যতে হয়তো সেই নিয়োগকর্তাই তার একজন ক্লায়েন্ট হয়ে যেতে পারেন।
এটাই সংবেদনশীল বুদ্ধিমত্তার শক্তি: এটি আবেগ ও যুক্তির মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করতে সাহায্য করে, যাতে আমরা এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারি, যা আমাদের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
রাজু