
কিছু মানুষ দেখেন, যারা ৮০-এর দশকে এসে তাদের মনকে সচল রেখে, স্মৃতিকে শক্তিশালী এবং চিন্তাভাবনাকে স্পষ্ট রাখতে সক্ষম হন। কখনো ভেবেছেন তারা কীভাবে তা করেন?এটা শুধুমাত্র সৌভাগ্য বা ভালো জিনেটিক্সের বিষয় নয়-দিনপ্রতি অভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এবং যদিও সকালের রুটিন নিয়ে প্রচুর আলোচনা হয়, সান্ধ্যকালীন অভ্যাসও ততটাই গুরুত্বপূর্ণ।
সরল, উদ্দেশ্যপূর্ণ সান্ধ্যকালীন অভ্যাস আপনার মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখতে, চাপ কমাতে এবং দীর্ঘমেয়াদী মানসিক তীক্ষ্ণতার জন্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করতে পারে।
এখানে ৮টি সান্ধ্যকালীন অভ্যাস তুলে ধরা হলো, যেগুলি ৮০-এর দশকে মানসিক তীক্ষ্ণতা বজায় রাখা মানুষদের জীবনে রয়েছে।
১) তারা শোয়ার আগে বই পড়ে অনেকেই ঘুমানোর আগে ফোন স্ক্রল করে বা টিভি দেখে, তবে যারা ৮০-এর দশকে মানসিকভাবে তীক্ষ্ণ থাকেন, তাদের একটি ভিন্ন অভ্যাস রয়েছে—তারা বই পড়ে।
পড়ায় সময় কাটানোর উপায় নয়; এটি মস্তিষ্ককে সচল রাখে, স্মৃতিশক্তি শক্তিশালী করে এবং মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে।গবেষণায় দেখা গেছে, সারাজীবন ধরে যারা বই পড়েন, তাদের মস্তিষ্কের অবনতি কম ঘটে।
এটি চাপ কমাতে এবং ভাল ঘুমের সহায়ক, যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তাহলে, শোয়ার আগে ফোনের বদলে বই পড়ুন,আপনি হয়তো আপনার মস্তিষ্ককে এমন একটি ব্যায়াম দেবেন যা বছরভর তীক্ষ্ণ থাকতে সাহায্য করবে।
২) তারা দিনের উপর প্রতিফলিত করেন আমি আগে ঘুমানোর আগে মস্তিষ্কে চিন্তাধারা নিয়ে ঘুরতাম—কী কী করতে হবে, কী কী কথাবার্তা হয়েছিল, বা এমন কিছু নিয়ে চিন্তা করতাম যা আমি পরিবর্তন করতে পারি না।
তবে আমি প্রতিদিন কিছু সময় কাটিয়ে আমার দিনটি প্রতিফলিত করতে শুরু করলাম, এবং এটি অনেক পরিবর্তন এনেছে।
৮০-এর দশকে মানসিকভাবে তীক্ষ্ণ থাকা মানুষদেরও এই অভ্যাস থাকে। তারা চিন্তাগুলো জমতে না দিয়ে তাদের অভিজ্ঞতাগুলো প্রক্রিয়া করতে সময় নেন।
কেউ কেউ ডায়েরিতে লেখেন, আবার কেউ বা শান্তভাবে বসে ভাবেন, কী ভালো হয়েছে, কী শিখেছেন বা কী উন্নতি করতে চান।
আপনি যদি দীর্ঘদিন ধরে আপনার মস্তিষ্ককে তীক্ষ্ণ রাখতে চান, তবে প্রতিদিন কিছু মুহূর্ত সময় নিয়ে দিনটি প্রতিফলিত করতে চেষ্টা করুন।
৩) তারা ভালো ঘুমকে অগ্রাধিকার দেন ঘুম শুধুমাত্র বিশ্রাম নয়,এটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং স্মৃতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গভীর ঘুমে মস্তিষ্ক সেই টক্সিনগুলো বের করে দেয়, যেগুলো স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে, এবং এটি মানসিক তীক্ষ্ণতা বজায় রাখার সবচেয়ে শক্তিশালী উপায়গুলির একটি।
৮০-এর দশকে যারা তীক্ষ্ণ থাকেন, তারা এটি বুঝে ঘুমকে অগ্রাধিকার দেন। তারা নিয়মিত ঘুমের সময়সূচী অনুসরণ করেন, শান্তিদায়ক রাতে যাওয়ার রুটিন তৈরি করেন এবং ঘুমের মান উন্নত করতে স্ক্রীন বা ভারী খাবার এড়িয়ে চলেন।
৪) তারা ধাঁধা বা গেমের মাধ্যমে মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখেন মস্তিষ্ককে সচল রাখা কেবল কাজ বা দৈনিক দায়িত্বের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
অনেকেই ৮০-এর দশকে মানসিকভাবে তীক্ষ্ণ থাকেন, সন্ধ্যায় ধাঁধা, গেম বা অন্যান্য মস্তিষ্ককে উত্তেজিত করা কাজের মাধ্যমে মস্তিষ্ককে চ্যালেঞ্জ করেন।
ক্রসওয়ার্ড পাজল, সুডোকু, দাবা বা কৌশলভিত্তিক ভিডিও গেম মস্তিষ্কের কার্যকারিতা শক্তিশালী রাখে।
এগুলি সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, স্মৃতি উন্নত করতে এবং সৃজনশীল চিন্তাভাবনার জন্য সাহায্য করে, যা দীর্ঘমেয়াদী মানসিক তীক্ষ্ণতায় সহায়ক।
৫) তারা প্রিয়জনদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখেন জীবন ব্যস্ত হয়ে ওঠে, আর তাই অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ কথাবার্তা পিছিয়ে যায়। তবে যারা ৮০-এর দশকে মানসিকভাবে তীক্ষ্ণ থাকেন, তারা সন্ধ্যায় ছোটখাটো হলেও প্রিয়জনদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখেন।
একটি ছোট ফোন কল, একটি আন্তরিক টেক্সট, বা সঙ্গী বা বন্ধুদের সাথে কিছু সময় কাটানো সম্পর্ক শক্তিশালী করার সাথে সাথে মস্তিষ্ককে সচল রাখে।
৬) তারা নীরব মুহূর্ত গ্রহণ করেন বিশ্বটা সবসময় সরব থাকে, এবং প্রতিটি মুহূর্ত শব্দে পূর্ণ হয়ে ওঠে,টিভি, স্ক্রোলিং, অবিরাম বিভ্রান্তি। তবে যারা ৮০-এর দশকে তীক্ষ্ণ থাকেন, তারা এর বিপরীতে যান। তারা নীরবতার জন্য সময় বের করেন।
শুধু কিছু মিনিটের জন্যই হলেও নীরবতায় বসে থাকা, মনকে শান্ত করতে এবং দিনের চাপ থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।
৭) তারা সৃজনশীল শখের সঙ্গে যুক্ত থাকেন সৃজনশীলতা শুধুমাত্র শিল্পীদের জন্য নয়—এটি মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখার শক্তিশালী উপায়। ৮০-এর দশকে মানসিকভাবে তীক্ষ্ণ থাকা অনেকেই সৃজনশীল শখে ব্যস্ত থাকেন, যেমন চিত্রকলা, লেখালেখি, বোনা বা সঙ্গীত বাজানো।এটি মস্তিষ্কের সমস্যার সমাধান করার দক্ষতা শক্তিশালী করে, স্মৃতি বাড়ায় ।
৮) তারা উদ্দেশ্য নিয়ে ঘুমাতে যান একটি কারণ বা উদ্দেশ্য দিয়ে প্রতিদিন সকালে ওঠা মানসিক তীক্ষ্ণতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পূর্বাভাস।৮০-এর দশকে যারা মানসিকভাবে শক্তিশালী, তারা কেবল জীবন কাটিয়ে যান না—তাদের আগ্রহ, লক্ষ্য এবং কিছু রয়েছে যা তাদের মনকে সক্রিয় রাখে।
ছোট ছোট অভ্যাসই তীক্ষ্ণ মস্তিষ্ক গঠন করে। ৮০-এর দশকে মানসিক তীক্ষ্ণতা বজায় রাখা সৌভাগ্যের বিষয় নয়,এটি হলো সেই অভ্যাসগুলির ফল, যা সময়ের সাথে গড়ে ওঠে।
মস্তিষ্ক যেমন শরীরের মতো নিয়মিত অভ্যাসের উপর নির্ভর করে, তেমনি এটি দীর্ঘ বয়সেও সক্রিয় থাকতে পারে।
সূত্র:https://tinyurl.com/y99s3snw
আফরোজা