ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৬ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১

গেমিং আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়

প্রকাশিত: ০১:১৫, ৬ মার্চ ২০২৫

গেমিং আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়

ছবিঃ সংগৃহীত

অভিনন্দন! আপনি অসম্ভব লেভেল সফলভাবে শেষ করেছেন। তবে শেষ কবে নড়াচড়া করেছেন বা পানি পান করেছেন, সেটা কি মনে আছে? জানেন কি, অতিরিক্ত গেমিংয়ের কারণে অনেকে শারীরিক ক্লান্তিতে মারাও গেছেন? শখ কখন ক্ষতিকর নেশায় পরিণত হয়, সেটি বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

গেমিং কীভাবে আপনার শরীর ও মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করে তা বুঝতে হলে আমাদের রিওয়ার্ড সিস্টেম সম্পর্কে জানতে হবে। এই সিস্টেমের মূল কাজ এমন আচরণকে শক্তিশালী করা, যা আমাদের বাঁচিয়ে রাখে—যেমন ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া। এখানে ডোপামিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ডোপামিন নিঃসরণ মানেই পুরস্কারের অনুভূতি, যা আমাদের নির্দিষ্ট কাজ বারবার করতে বাধ্য করে।

তবে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু ভিডিও গেম মস্তিষ্কে এত বেশি উদ্দীপনা সৃষ্টি করতে পারে যে, এটি ড্রাগ আসক্তির মতোই প্রভাব ফেলে। গেমের একটি পর্যায় শেষ হওয়ার পর ডোপামিনের স্তর হঠাৎ কমে যায়, যা মানসিক অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, গেমাররা হারলেও তাদের ডোপামিন স্তর বেড়ে যায়, যা "লস চেইজিং বিহেভিয়ার" নামে পরিচিত। অর্থাৎ, গেমে হারলেও খেলা চালিয়ে যেতে ইচ্ছা করে।

গেমিং আসক্তির চারটি ধাপ

ধাপ ১: সারাক্ষণ ভাবেন কখন আবার গেম খেলতে পারবেন। বিরক্তি, উদ্বেগ বা দুঃখ বোধ করেন।
ধাপ ২: খেলার সময় ধীরে ধীরে বেড়ে যায়, কমানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন।
ধাপ ৩: অন্যান্য কাজের প্রতি আগ্রহ হারান, এমনকি স্ক্রিন টাইম লুকানোর জন্য মিথ্যা বলা শুরু করেন।
ধাপ ৪: এক বছরের বেশি সময় ধরে নেশা জীবনযাত্রায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়—চাকরি, পড়াশোনা, এমনকি সম্পর্কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

গেমিং আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়

আপনি একা নন! গবেষণায় দেখা গেছে, প্রথম ধাপ হলো আপনি কেন গেম খেলেন, সেটি বোঝা। এটি কি মানসিক চাপ কমায়? নাকি আপনাকে শক্তিশালী মনে হয়? কারণটি জানলে পরিবর্তন সহজ হয়।

পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিন – পরিবার ও বন্ধুদের সহায়তা নিন।
সামাজিক সম্পর্ক গড়ুন – গেমের বাইরে বাস্তব জীবনে মেলামেশা করুন।
লক্ষ্য নির্ধারণ করুন – জীবনকে নতুনভাবে গুছিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করুন।
শারীরিক কার্যক্রম বাড়ান – খেলাধুলা বা ব্যায়াম করলে শরীর প্রাকৃতিকভাবে ডোপামিন উৎপন্ন করে।
প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন – কাউন্সেলিং বা থেরাপি সহায়ক হতে পারে।

সবশেষে, নিজেকে প্রশ্ন করুন—আপনি কি জীবনে পরিবর্তন আনতে প্রস্তুত? গেমিং নেশার চক্র ভাঙতে আজই এক পদক্ষেপ এগিয়ে যান!

সূত্রঃ https://www.youtube.com/watch?v=Y_185sKFOjY

ইমরান

×