ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৪ মার্চ ২০২৫, ২০ ফাল্গুন ১৪৩১

জীবনে প্রচুর সংগ্রাম করা নারীরা যেমন হয়

প্রকাশিত: ১৬:২১, ৪ মার্চ ২০২৫

জীবনে প্রচুর সংগ্রাম করা নারীরা যেমন হয়

প্রতীকী ছবি

সংগ্রাম ও কঠিন পরিস্থিতি একজন নারীর আচার-আচরণ, চিন্তাভাবনা ও মানসিকতায় পরিবর্তন আনে। অতীতের অভিজ্ঞতা তাকে যেকোনো পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে এবং জীবনে কিছু সাধারণ অভ্যাস গড়ে তুলতে বাধ্য করে। গবেষণা প্রমাণ করেছে, নারীর এমন কিছু সাধারণ লক্ষণ ও আচার-আচরণ রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে বোঝা যায় যে তিনি জীবনে কতটা সংগ্রাম ও মানসিক কষ্ট সহ্য করেছেন। চলুন, আলোচনা করা যাক নারীর সেসব লক্ষণ নিয়ে:

১. কখনও অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া, কখনও আবার নিষ্ক্রিয়

যে নারী জীবনে অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন, সংগ্রাম করেছেন, তিনি ছোটখাট ব্যাপারেও বেশি রেগে যেতে পারেন, আবার বড় সমস্যাতেও একেবারে চুপচাপ থাকতে পারেন। এটা তার অতীত অভিজ্ঞতার কারণে হয়। কোনো কোনো ঘটনা তার পুরনো দুঃখের স্মৃতি জাগিয়ে তোলে, তাই তিনি অপ্রত্যাশিতভাবেই প্রতিক্রিয়া দেখান।

২. বয়সের তুলনায় বেশি পরিপক্ব মনে হয়

কঠিন বাস্তবতার কারণে তিনি ছোট বয়সেই দায়িত্ব নিতে বাধ্য হয়েছেন। এ কারণে অনেকেই তাকে খুব পরিপক্ব মনে করেন। তবে এটি প্রকৃত পরিপক্বতা নয়, বরং জীবনের কঠিন পরিস্থিতি ও অভিজ্ঞতা থেকে শেখা তার মানিয়ে নেওয়ার কৌশল মাত্র।

৩. খুব সহজে কারো কাছে সাহায্য চান না

তার অতীত অভিজ্ঞতা যদি এমন হয় যে, প্রয়োজনের সময় কেউ তার পাশে ছিল না, তাহলে তিনি নিজের কাজ নিজেই করতে অভ্যস্ত হয়ে যান। তিনি কারও ওপর নির্ভর করতে চান না, কারণ অতীতে হয়তো তিনি অনেকবার নিরাশ হয়েছেন।

৪. সহজে কাউকে বিশ্বাস করতে পারেন না

যদি তিনি শৈশবে বা অতীত জীবনে কাছের মানুষদের বিশ্বাস করে কষ্ট পেয়ে থাকেন, তবে তিনি ভবিষ্যতে কাউকে সহজে বিশ্বাস করতে চান না। তিনি ভাবেন, কেউ তার অনুভূতিকে গুরুত্ব দেবে না বা শেষ পর্যন্ত কষ্টই দেবে।

৫. সবসময় অনাকাঙ্ক্ষিত কিছুর জন্য প্রস্তুত থাকেন

এমন নারীরা প্রায়ই ধরে নেন যে, জীবনে খারাপ কিছু ঘটতে পারে। এটি তার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে। অতীতে যদি তিনি অনেক কষ্ট পেয়ে থাকেন, তাহলে ভবিষ্যতে যাতে নতুন করে কষ্ট না পান, সে জন্য তিনি সবসময় প্রস্তুত থাকেন।

৬. অন্যের কষ্ট খুব সহজে উপলব্ধি করতে পারেন

যেহেতু তিনি নিজে অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন, তাই অন্য কেউ কষ্টে থাকলে তিনি সেটা সহজেই অনুভব করতে পারেন। তিনি খুব সংবেদনশীল হন এবং অন্যদের প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ করেন।

৭. নিজের ক্ষতি হলেও অত্যন্ত বিশ্বস্ত থাকার চেষ্টা করেন

যে সম্পর্কগুলো তিনি মূল্যবান মনে করেন, সেখানে তিনি নিজের সবকিছু উজাড় করে দেন। তবে কখনো কখনো শুধু সম্পর্কটা বাঁচিয়ে রাখার জন্য তিনি এমন সম্পর্কও বাঁচিয়ে রাখেন, যা তার ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

৮. অন্যের প্রতিক্রিয়া খুব ভালোভাবে বুঝতে পারেন

যেহেতু তিনি আগে খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে ছিলেন, তাই তিনি আশেপাশের মানুষদের মুখভঙ্গি, কথা বলার ধরন এবং শরীরী ভাষা দেখে সহজেই বুঝতে পারেন তারা কী ভাবছেন। এটি তাকে বিপদ এড়াতেও সাহায্য করে।

৯. ছোট ছোট বিষয়েও আনন্দ পান

তিনি জীবনের ছোট ছোট সুখের মুহূর্তগুলো খুব উপভোগ করেন। কারণ তিনি জানেন, সুখী হওয়ার জন্য বিশাল কিছুর দরকার নেই। কোনো বন্ধু তার খোঁজ-খবর নিল, কেউ একটু ভালো ব্যবহার করল-এসব ছোট বিষয়ই তাকে প্রচুর আনন্দ দেয়।

১০. নতুন মানুষের সঙ্গে মিশতে চান না

তিনি সাধারণত তার কাছের ও বিশ্বস্ত মানুষদের সঙ্গেই থাকতে পছন্দ করেন। নতুন মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে তার ভয় লাগে, কারণ অতীতে হয়তো তিনি কাছের মানুষদের থেকে আঘাত পেয়েছেন।

১১. ব্যক্তিভেদে ভিন্ন আচরণ প্রদর্শন করেন

তিনি পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে নিজের ব্যক্তিত্ব বদলান। কিছু মানুষের সামনে তাকে খুব আনন্দিত ও প্রাণবন্ত মনে হতে পারে, আবার কিছু মানুষের সামনে তিনি একেবারে চুপচাপ। এটি তার নিজেকে নিরাপদ ও চাপমুক্ত থাকার একটি কৌশল।

উপরের বৈশিষ্ট্যগুলো ধারণ মানে এমন নয়, একজন নারী দুর্বল বা ভেঙে পড়েছেন। বরং, এগুলো প্রমাণ করে যে তিনি অনেক কঠিন সময় পার করে এসেছেন এবং এখন নিজের মতো করে জীবন সামলানোর চেষ্টা করছেন। এই আচরণগুলো তার স্বতঃস্ফূর্ত কৌশল, যা তাকে নতুন করে কষ্ট পাওয়া ও তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

 

সূত্র: yourtango.com

রাকিব

×