
অনেক সময় রোজা রাখতে গিয়ে রক্তে চিনির মাত্রা অত্যন্ত কমে যেতে পারে, যা হাইপোগ্লাইসেমিয়া নামে পরিচিত। এটি অচেতন হয়ে পড়া, মাথা ঘোরা, মাথা ব্যথা, ঝাপসা দৃষ্টি এবং শারীরিক দুর্বলতার কারণ হতে পারে। এ সমস্যা এড়াতে কিছু জরুরি বিষয় জানা প্রয়োজন।
ডায়াবেটিস ও ওষুধ ব্যবস্থাপনা
রোজার সময় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধের ডোজ নির্ধারণ করা জরুরি। সাধারণত মুখে খাওয়ার ওষুধ ও ইনসুলিনের মাত্রা কিছুটা কমিয়ে আনা হয়। সকালে নেওয়া ওষুধ ইফতারের সময় এবং রাতের ওষুধ সাহরির সময় গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হতে পারে। কিছু দীর্ঘমেয়াদি ইনসুলিন আছে, যা রক্তে সুগারের পরিমাণ খুব বেশি কমার ঝুঁকি কমায়—এ বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
হঠাৎ রক্তে সুগার কমে গেলে করণীয়
যাদের ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত, তারা রোজার সময় গ্লুকোজ মিশ্রিত পানি হাতের কাছে রাখুন। যদি রক্তে সুগারের মাত্রা অতিরিক্ত কমে যায় এবং শরীরে চরম দুর্বলতা অনুভূত হয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে রোজা ভেঙে ফেলা উচিত।
খাদ্যাভ্যাস ও সঠিক পুষ্টি গ্রহণ
- ডায়াবেটিস রোগীরা ইফতার দ্রুত এবং সাহরি যতটা সম্ভব দেরিতে করবেন।
- ইফতার ও সাহরির মধ্যে প্রচুর পানি পান করা উচিত।
- ফলের শরবত পান করা যেতে পারে, তবে তাতে চিনি মেশানো যাবে না।
- সাহরিতে কম পরিমাণ ভাত খাওয়া ভালো, বরং শাকসবজি ও আঁশযুক্ত খাবার বেশি গ্রহণ করা উচিত।
- নিয়মিত ডাবের পানি পান করা যেতে পারে, তবে চা ও কফি এড়িয়ে চলা ভালো।
- ইফতারে খেজুর, সালাদ ও বিভিন্ন ধরনের ফল রাখুন, কারণ এগুলো রক্তে সুগারের মাত্রা দ্রুত বাড়ায় না।
- অতিভোজন এড়িয়ে চলুন এবং খুব কম পরিমাণ খাবার গ্রহণ করাও ক্ষতিকর হতে পারে।
অনেকে শুধুমাত্র এক গ্লাস পানি খেয়ে রোজা রাখেন, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এতে ইফতারের আগেই হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা জরুরি।
রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সচেতন খাদ্যাভ্যাসের বিকল্প নেই। রোজার আগে ও পরে ডায়াবেটিস রোগীদের মোট ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ প্রায় একই রাখা উচিত, যাতে শরীরে অতিরিক্ত কোনো চাপ না পড়ে এবং সুস্থভাবে রোজা রাখা সম্ভব হয়।
রাজু