
ছবি; সংগৃহীত
পবিত্র মাহে রমজানে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার ফলে শরীরে পানি ও পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে। তাই ইফতার ও সেহরিতে এমন খাবার নির্বাচন করা উচিত যা শরীরকে সুস্থ রাখবে, পর্যাপ্ত শক্তি দেবে, এবং পানিশূন্যতা দূর করবে। নিচে রমজানে স্বাস্থ্যকর খাবার নির্বাচন ও খাদ্যাভ্যাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো-
সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতার এমন হওয়া উচিত, যা শরীরকে তাৎক্ষণিক শক্তি দিবে এবং সহজে হজম হবে।
খেজুর: খেজুরকে প্রাকৃতিক সুপাফুড হিসেবে পরিচিত । খেজুর প্রাকৃতিকভাবে গ্লুকোজ সরবরাহ করে, যা রোজার পরপর শরীরের শক্তি ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। এতে ফাইবারও থাকে, যা হজমে সহায়ক।
পানি ও হাইড্রেটিং ফুডস: রোজার সময় শরীরের পানিশূন্যতা এড়াতে পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি। এছাড়া শসা, তরমুজ, কমলা, ডাবের পানি ও অন্যান্য ফল খাওয়া যেতে পারে।
শস্যজাত খাবার: ইফতারে চিনি ও প্রসেসড খাবার এড়িয়ে লাল আটা বা গমের রুটি, ওটস, ব্রাউন রাইস, বা চিড়া খাওয়া ভালো, যা শরীরে দীর্ঘক্ষণ শক্তি বজায় রাখবে।
প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার: ডাল, বাদাম, দই, মাছ, মুরগির মাংস ইত্যাদি প্রোটিনের ভালো উৎস। এগুলো পেশির গঠনে সহায়ক এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে।
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট: অলিভ অয়েল, বাদাম, চিয়া সিড, বা অ্যাভোকাডোতে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট শরীরের জন্য বেশ উপকারী এবং দীর্ঘক্ষণ ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে রোজায় আপনরার শরীর সহজে ক্লান্ত হবে না।
সেহরিতে যেসব খাবার রাখবেন
সেহরিতে এমন খাবার বেছে নেওয়া উচিত, যা দীর্ঘক্ষণ শরীরে শক্তি জোগাবে এবং পানিশূন্যতা রোধ করবে।
শর্করা: ওটস, লাল চালের ভাত, গমের রুটি বা হোল গ্রেইন ব্রেড ধীরগতিতে হজম হয় এবং দীর্ঘ সময় শক্তি জোগায়।
প্রোটিন: ডিম, দই, ডাল, মুরগি বা মাছ খেলে সারাদিন শরীরে শক্তি বজায় থাকবে এবং পেশিশক্তি ভালো থাকবে।
পানি ও হাইড্রেটিং ফুডস: সেহরিতে প্রচুর পানি পান করুন এবং শসা, তরমুজ, টমেটো, লেবুর শরবত বা ডাবের পানি খেলে শরীর আর্দ্র থাকবে।
ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার: সবজি, ফলমূল এবং শস্যজাত খাবারে প্রচুর ফাইবার থাকে, যা হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন
এমন কিছু খাবার যা খেলে রমজানে স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পরতে পারে। তাই রমজানে সেসব খাবার পরিহার করা উচিত।
অতিরিক্ত ভাজা-পোড়া খাবার: সিঙ্গারা, সমোচা, পেঁয়াজু, পুরি ইত্যাদি অতিরিক্ত তেল ও চর্বিযুক্ত,যা হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
অতিরিক্ত মিষ্টি ও চিনি: মিষ্টি, কোল্ডড্রিংকস, প্যাকেটজাত জুস রক্তে শর্করার পরিমাণ দ্রুত বাড়িয়ে দেয় এবং ওজন বাড়াতে পারে।
অতিরিক্ত লবণ: সেহরিতে অতিরিক্ত লবণ খেলে সারাদিন পিপাসা লাগতে পারে, তাই পরিমাণ বুঝে লবণ খাওয়া উচিত।
ক্যাফেইন: চা ও কফিতে থাকা ক্যাফেইন প্রস্রাবের প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়, ফলে শরীর পানিশূন্য হয়ে যেতে পারে।
রমজানে সুস্থ থাকার জন্য পরিমিত, পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া জরুরি। ইফতার ও সেহরিতে প্রচুর পানি পান করতে হবে, ভাজাপোড়া ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে এবং হালকা ব্যায়াম বা সচল থাকার চেষ্টা করতে হবে। এভাবে খাবারের প্রতি সচেতন থাকলে রোজা রেখে সুস্থ থাকা সম্ভব।
শহীদ