
ছবি: সংগৃহীত
রোজা শুধু আত্মশুদ্ধির জন্য নয়, এর রয়েছে বিস্ময়কর স্বাস্থ্য উপকারিতাও। রোজা রাখার সময় আমাদের দেহের অভ্যন্তরে ঘটে নানা পরিবর্তন, যা সত্যিই চমকপ্রদ। যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজের এডেন ব্রুকস হাসপাতালের অ্যানাস্থেসিয়া ও ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিনের কনসালট্যান্ট ডাক্তার রাজিন মাহরুফ জানিয়েছেন, রমজানের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দশ দিনে শরীরে কী ধরনের পরিবর্তন ঘটে।
তিনি জানান, শেষবার খাবার খাওয়ার পর অন্তত আট ঘণ্টা পর্যন্ত রোজার বিশেষ কোনো প্রভাব শরীরে পড়ে না। সাধারণত, পাকস্থলীতে খাবার হজম হতে ও শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি শোষিত হতে আট ঘণ্টার মতো সময় লাগে। তবে এই সময় পার হওয়ার পর শরীর শক্তির জন্য যকৃত ও মাংসপেশিতে সঞ্চিত গ্লুকোজ ব্যবহার করতে শুরু করে। এরপর শরীর চর্বি পোড়ানোর মাধ্যমে শক্তি উৎপন্ন করে, যা ওজন কমানো ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, এটি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
তবে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ায় প্রথমদিকে কিছুটা দুর্বলতা বা ঝিমুনিভাব আসতে পারে। তবে কয়েকদিন পর শরীর রোজার সঙ্গে মানিয়ে নিলে চর্বি গলে গিয়ে রক্তের শর্করায় পরিণত হয়, যা দেহে শক্তি জোগায়। তখন শরীর ও মন উভয়েই সতেজ অনুভব করে।
ডা. মাহরুফ আরও বলেন, সাধারণত আমরা দৈনন্দিন জীবনে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ করি, যা শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করতে পারে। কিন্তু রোজার সময় খাদ্য গ্রহণ কম থাকায় শরীর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজের দিকে মনোযোগ দিতে পারে, বিশেষ করে নিজেকে সারিয়ে তোলা এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করা। রোজার ফলে শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তাদের পূর্ণ কার্যক্ষমতা ফিরে পায়, স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বৃদ্ধি পায় এবং শারীরিক শক্তি বাড়ে।
তিনি পরামর্শ দেন, এক মাস রোজা রাখা স্বাস্থ্যকর, তবে দীর্ঘ সময় একটানা রোজা না রেখে বছরের অন্যান্য সময়ে বিরতি দিয়ে রোজা রাখা আরও উপকারী হতে পারে। তাই শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, স্বাস্থ্য রক্ষার জন্যও রোজার গুরুত্ব অপরিসীম!
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/BeeWRvbEERE?si=I9f240s09F7CYWAa
এম.কে.