ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০১ মার্চ ২০২৫, ১৬ ফাল্গুন ১৪৩১

মুরগির লিভার খাওয়ার ৬টি উপকারিতা জানলে চমকে উঠবেন 

প্রকাশিত: ২১:২৬, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

মুরগির লিভার খাওয়ার ৬টি উপকারিতা জানলে চমকে উঠবেন 

ছবি:সংগৃহীত

মুরগির লিভার একটি পুষ্টিকর খাবার যা স্বাস্থ্যগত অনেক উপকারিতা প্রদান করতে পারে। এটি নানা ধরনের ভিটামিন, খনিজ এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ, যা শরীরের বিভিন্ন কার্যকারিতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মুরগির লিভারের খাওয়ার কিছু উল্লেখযোগ্য উপকারিতা নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:

১. ভিটামিন A সমৃদ্ধ
মুরগির লিভার একটি অসাধারণ ভিটামিন A উৎস। এটি রেটিনাল এবং রেটিনল আকারে উপস্থিত থাকে, যা দৃষ্টিশক্তি এবং ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে, মুরগির লিভারে ভিটামিন A এর পরিমাণ অত্যন্ত বেশি, যা চোখের সাস্থ্য, রাতকানা, এবং প্রাথমিক চোখের সমস্যা প্রতিরোধে সহায়ক। দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখা, ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখা, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।

২. আয়রন সমৃদ্ধ (Iron-Rich)
মুরগির লিভারে প্রচুর পরিমাণে হিমোগ্লোবিন থাকে, যা শরীরের রক্ত উৎপাদন এবং আয়রন স্তরের উন্নতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত, এটি লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে, যা রক্তাল্পতা (Anemia) প্রতিরোধে কার্যকর। রক্তাল্পতা প্রতিরোধ, শক্তির স্তর বাড়ানো, কোষের অক্সিজেন পরিবহণে সহায়ক।

৩. ভিটামিন B12
মুরগির লিভারে ভিটামিন B12 এর একটি দুর্দান্ত উৎস রয়েছে, যা স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শরীরের শক্তি উৎপাদন এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক। ভিটামিন B12 এর অভাব হলে স্মৃতিশক্তি হ্রাস, মেজাজের অস্থিরতা এবং স্নায়ুর রোগের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। স্নায়ু ব্যবস্থার স্বাস্থ্য বজায় রাখা, শক্তির স্তর বৃদ্ধি, মনোযোগ এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে।

৪. প্রোটিন এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ
মুরগির লিভারে প্রোটিনের পরিমাণও উচ্চ, যা শরীরের পেশি বৃদ্ধি এবং মেরামতের জন্য সহায়ক। এছাড়া, এটি অত্যন্ত পুষ্টিকর, যা দ্রুত শক্তি প্রদান করে এবং শরীরের সার্বিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। পেশি এবং শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি, হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখা, শক্তির স্তর বজায় রাখা।

৫. ফোলেট (Folate)
মুরগির লিভার ফোলেটেরও একটি দারুণ উৎস। ফোলেট গর্ভাবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি শিশুর স্নায়ু এবং মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়ক। এছাড়া, এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এবং রক্তাল্পতা প্রতিরোধে সহায়ক। গর্ভাবস্থায় সুস্থ শিশুর বিকাশ, হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো, কোষের ডিএনএ রেপ্লিকেশন এবং রক্তের গঠনে সহায়ক।

৬. হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য
মুরগির লিভার শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে পূর্ণ, যা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি উচ্চ কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়ক হতে পারে। হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য বজায় রাখা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, কোলেস্টেরল কমানোর কাজ করে।

মুরগির লিভার খাওয়ার মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান যেমন ভিটামিন A, B12, আয়রন, ফোলেট, প্রোটিন, এবং সেলেনিয়াম পেতে পারেন। তবে, অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার ফলস্বরূপ কিছু নেতিবাচক প্রভাব যেমন অতিরিক্ত ভিটামিন A-এর সমস্যা হতে পারে, তাই পরিমাণে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। সাধারণত, সঠিক পরিমাণে মুরগির লিভার আপনার শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী হতে পারে।

মুহাম্মদ ওমর ফারুক

×