
বর্তমানে অনেক মানুষ গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সমস্যার কারণে নিয়মিত গ্যাসের ওষুধ সেবন করেন। তবে প্রয়োজন ছাড়া দীর্ঘমেয়াদে এসব ওষুধ সেবন করলে শরীরে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে।
১. অপ্রয়োজনীয় কেমিক্যাল গ্রহণ
যদি প্রকৃতপক্ষে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা না থাকে তবুও ওষুধ খাওয়া হয়, তবে শরীর অপ্রয়োজনীয় কেমিক্যাল গ্রহণ করছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
২.হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়া
গ্যাসের ওষুধ দীর্ঘদিন খেলে অস্টিওপোরোসিস বা অস্টিওপেনিয়া হতে পারে, যা হাড়কে ভঙ্গুর করে তোলে এবং সহজেই ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
৩. গ্যাস্ট্রিক এসিডের মাত্রা কমে যাওয়া
গ্যাসের ওষুধ হাইড্রোক্লোরিক এসিড নিঃসরণ কমিয়ে দেয়, যা লম্বা সময় ধরে চলতে থাকলে অ্যাক্লোরহাইড্রিয়া হতে পারে। এটি পরবর্তীতে গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
৪. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া
স্টমাকের অ্যাসিডিক পরিবেশ ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ধ্বংস করতে সাহায্য করে। দীর্ঘদিন গ্যাসের ওষুধ সেবনে এই স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়, ফলে টাইফয়েড, হেপাটাইটিস এবং অন্যান্য সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
৫. ক্যান্সারের সম্ভাবনা
যদি স্টমাকে যথেষ্ট পরিমাণ অ্যাসিড না থাকে, তবে ইনটেস্টিনাল মেটাপ্লাসিয়া নামক সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা পরবর্তীতে ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
৬. ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি
নিয়মিত পিপিআই (প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর) জাতীয় ওষুধ সেবনে রক্তে ম্যাগনেসিয়ামের পরিমাণ কমে যেতে পারে, যা হার্ট ও কিডনির সমস্যা তৈরি করতে পারে।
৭.মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা
অনেকে অহেতুক গ্যাসের সমস্যা নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকেন এবং প্রয়োজন ছাড়াই ওষুধ সেবন করেন। এতে ধীরে ধীরে অ্যানজাইটি ডিসঅর্ডার বা মানসিক উদ্বেগ দেখা দিতে পারে।
৮.অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়
গ্যাসের ওষুধের দাম বাজারে ৩ টাকা থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। যদি কেউ প্রতিদিন ১৫ টাকার একটি ওষুধ খান, তবে মাসে ৪৫০-৫০০ টাকা এবং বছরে প্রায় ৬০০০ টাকা শুধু এই ওষুধের পেছনে খরচ হয়ে যায়।
গ্যাস বা অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকলে স্বাভাবিকভাবে খাবার নিয়ন্ত্রণ, পর্যাপ্ত পানি পান এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করা উচিত। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদে গ্যাসের ওষুধ খাওয়া উচিত নয়।
রাজু