
ছবি; সংগৃহীত
দেশজুড়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা দিন দিন বেড়ে চলছে, বিশেষ করে শহরাঞ্চলে। পথেঘাটে চলাচল করা মানুষদের জন্য এটি একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। তবে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে এই বিপদ কিছুটা এড়ানো সম্ভব। আসুন জেনে নিই, কীভাবে ছিনতাইকারীর হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করা যায়।
জনবহুল জায়গায় চলাফেরা করুন: একা বা ফাঁকা জায়গায় হাঁটার সময় ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাই সম্ভব হলে ব্যস্ত রাস্তা বা জনবহুল স্থানে চলাফেরা করুন।
ফুটপাথ ব্যবহারে কৌশল অবলম্বন করুন: ফুটপাথ দিয়ে হাঁটার সময় ভবনের পাশ দিয়ে না হেঁটে রাস্তার দিকে থাকুন। এতে ভবনের আড়ালে লুকিয়ে থাকা কারও জন্য আপনাকে আকস্মিকভাবে আক্রমণ করা কঠিন হবে এবং প্রয়োজনে দ্রুত দৌড়ানোও সহজ হবে।
অন্ধকার বা নির্জন স্থান এড়িয়ে চলুন: সন্দেহজনক কোনো ব্যক্তি অনুসরণ করলে দ্রুত নিরাপদ স্থানে যান।
আত্মরক্ষার সরঞ্জাম সঙ্গে রাখুন: নিজেকে রক্ষার জন্য ছোটখাটো আত্মরক্ষার কৌশল শিখুন। আত্মরক্ষার সরঞ্জাম (যেমন: পিপার স্প্রে, ছোট বাঁশি, ওয়াকিং স্টিক) সঙ্গে রাখুন। তবে মনে রাখবেন, আত্মরক্ষার কৌশল জানা না থাকলে আপনার হাতের অস্ত্রই আপনার বিরুদ্ধে ব্যবহার হতে পারে। প্রয়োজনে আত্মরক্ষার জন্য মার্শাল আর্ট শিখে রাখা ভালো।
আত্মবিশ্বাস বজায় রাখুন: উদ্দেশ্যহীনভাবে হাঁটা এড়িয়ে চলুন, আত্মবিশ্বাসী থাকলে ছিনতাইকারীরা সহজ লক্ষ্য মনে করবে না।
দামি জিনিস আড়ালে রাখুন: গহনা, দামি মোবাইল বা ক্যাশ টাকা প্রকাশ্যে ব্যবহার করবেন না। প্রয়োজন হলে নিরাপদ জায়গায় গিয়ে ব্যবহার করুন।
ব্যাগ ও পার্স সামনের দিকে রাখুন: ব্যাগ বা পার্স সামনের দিকে রাখুন এবং শক্তভাবে ধরে রাখুন। ব্যাকপ্যাক পেছনের দিকে না রেখে সামনের দিকে নিয়ে নিন।
মোবাইল ফোন ব্যবহারে সতর্ক থাকুন: রাস্তায় হাঁটার সময় ফোনে কথা না বলাই উত্তম, এতে সতর্ক থাকা সহজ হয়।
নিজেকে দুটি অবস্থানে রাখুন: হয় নিজেকে সম্পূর্ণ অসহায় দেখান, যাতে ছিনতাইকারী আগ্রহ হারায়, অথবা আত্মবিশ্বাসের সাথে প্রতিক্রিয়া জানান।
ছিনতাইকারীকে বোঝানোর চেষ্টা করুন: শান্তভাবে কথা বলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করুন।
তার আচরণ পর্যবেক্ষণ করুন: ছিনতাইকারীর শরীরী ভাষা বুঝতে চেষ্টা করুন এবং চোখে চোখ রেখে কথা বলুন।
হুমকি সম্পর্কে সচেতন করুন: তাকে বোঝান, আপনাকে ক্ষতি করলে সে সহজেই ধরা পড়তে পারে।
মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিন: পরিস্থিতি সামলাতে তার মানবিক দিক স্পর্শ করার চেষ্টা করুন।
সতর্ক ও চটপটে থাকুন: দ্রুত সিদ্ধান্ত নিন, যাতে ছিনতাইকারী সহজে আক্রমণ করতে সাহস না পায়।
সাহসী থাকুন: ছিনতাইকারীদের কাছে অস্ত্র থাকে যা দেখে মোটেই ভয় পাওয়া যাবে না। ভয় পেলেও তাদের বুঝতে দেওয়া যাবে না আপনি ভয় পেয়েছেন।
স্থানীয়দের মতো পোশাক পরুন: ট্যুরিস্টদের ছিনতাইকারীরা সহজ লক্ষ্য মনে করে, তাই স্থানীয়দের মতো পোশাক পরার চেষ্টা করুন।
বিপদে পড়লে দৌড়ানোই শ্রেয়: একা থাকাকালীন বিপদের সম্মুখীন হলে লড়াইয়ের পরিবর্তে দ্রুত নিরাপদ জায়গায় চলে যাওয়ার চেষ্টা করুন। জনবহুল স্থানে ছিনতাইকারীরা সাধারণত ভুক্তভোগীর পেছনে ছুটে নিজেদের প্রকাশ করতে চায় না।
আলোকিত রাস্তা ব্যবহার করুন: রাতে চলাফেরার সময় সবসময় আলোকিত পথ ব্যবহার করুন।
অপরিচিত ব্যক্তির সাহায্য চাওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকুন: নির্জন রাস্তায় কেউ সাহায্য চাইলে সরাসরি তার কাছে না গিয়ে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন।
টাকা বহনে কৌশল অবলম্বন করুন: বেশি টাকা নিয়ে বের হলে সব টাকা এক জায়গায় না রেখে বিভিন্ন স্থানে ভাগ করে রাখুন। জুতা, মোজা, প্যান্টের গোপন পকেট বা শার্টের হাতায় ভাঁজ করে কিছু টাকা রাখা যেতে পারে, যাতে ছিনতাইয়ের শিকার হলেও কিছু অর্থ সংরক্ষিত থাকে।
সন্দেহ হলে পুলিশের সহায়তা নিন: কোনো কিছু সন্দেহজনক মনে হলে ৯৯৯-এ কল করে পুলিশের সাহায্য নিন। প্রয়োজনে আশপাশের মানুষদের সাহায্য চেয়ে নিন। একদম নিশ্চিতভাবে ছিনতাই বা আক্রমণ এড়ানোর কোনো উপায় নেই, তবে আগেভাগে সতর্ক হলে এবং আত্মরক্ষার কিছু কৌশল প্রয়োগ করলে বিপদের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। সতর্ক থাকুন, নিরাপদ থাকুন!
শহীদ