ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫ ফাল্গুন ১৪৩১

দিনে কত ঘণ্টা টিভি বা মোবাইল দেখা সন্তানের জন্য নিরাপদ?

প্রকাশিত: ১৪:১৮, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ১৪:১৮, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

দিনে কত ঘণ্টা টিভি বা মোবাইল দেখা সন্তানের জন্য নিরাপদ?

ছবি: সংগৃহীত।

বর্তমান যুগে প্রযুক্তির ব্যবহার শিশুদের জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। টিভি, মোবাইল, কম্পিউটার, ইন্টারনেট – এই সব আধুনিক প্রযুক্তি আমাদের জীবনের অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে, এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি চিন্তার বিষয়টি হলো, বিশেষত ছোট বয়সে সন্তানদের কতটা সময় এগুলো ব্যবহার করা উচিত? বিশেষজ্ঞদের মতে, টিভি বা মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। শিশুদের চোখের সমস্যা, মস্তিষ্কের বিকাশের ব্যাঘাত, শারীরিক সক্রিয়তা কমে যাওয়া, ঘুমের সমস্যা ইত্যাদি নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।

তবে প্রযুক্তি থেকে পুরোপুরি দূরে রাখা সম্ভব নয়। তাই, সন্তানের জন্য নিরাপদ সময়সীমা নির্ধারণ করতে হবে, যাতে তারা প্রযুক্তির সুবিধা নিতে পারে, তবে ক্ষতির সম্মুখীন না হয়। চলুন, জেনে নেয়া যাক, সন্তানের জন্য কত সময় টিভি বা মোবাইল ব্যবহার করা আসলে নিরাপদ।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, শিশুদের জন্য দৈনিক স্ক্রীন টাইম ১ থেকে ২ ঘণ্টার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। তবে বয়সের সাথে সাথে এই সময়সীমা পরিবর্তিত হতে পারে। শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত খেলাধুলা, বাহ্যিক কার্যকলাপ এবং পরিবারিক সম্পর্ক স্থাপন করা অত্যন্ত জরুরি।

শিশুর বয়স অনুযায়ী স্ক্রীন টাইমের পরিমাণ:

  • ২ থেকে ৫ বছর: ১ ঘণ্টা থেকে ২ ঘণ্টা
  • ৬ থেকে ১৮ বছর: ২ ঘণ্টার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত

তবে, এই সময়সীমার বাইরে প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলস্বরূপ শিশুর সামাজিক দক্ষতা, শারীরিক স্বাস্থ্য, এমনকি একাডেমিক পারফরম্যান্সেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

টিভি বা মোবাইলের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করার উপায়

১. শিশুদের জন্য সঠিক কনটেন্ট নির্বাচন করা: টিভি বা মোবাইলের মাধ্যমে শিশুরা কী ধরনের কনটেন্ট দেখছে তা অবশ্যই মনিটর করতে হবে। শিক্ষামূলক ও স্বাস্থ্যসম্মত কনটেন্ট বেছে নেওয়া উচিৎ।

২. স্ক্রীন টাইমের পরিসীমা নির্ধারণ করা: সময় নির্ধারণ করে, প্রতিদিন ক’টা ঘণ্টা স্ক্রীন ব্যবহার করবে তা জানিয়ে দেয়া জরুরি।

৩. পরিবারের সাথে সময় কাটানো: পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানো ও খেলাধুলায় অংশগ্রহণ শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে সহায়ক।

৪. সক্রিয় জীবনযাপন উৎসাহিত করা: শিশুদের শারীরিক কর্মকাণ্ড যেমন খেলাধুলা, হাঁটা বা সাইকেল চালানো উৎসাহিত করুন, যা প্রযুক্তির প্রতি আসক্তি কমাতে সাহায্য করবে।

আজকের ডিজিটাল যুগে টিভি এবং মোবাইল আমাদের জীবনে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে, কিন্তু সেটা যেন শিশুদের স্বাস্থ্য এবং বিকাশের পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সেদিকে খেয়াল রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর স্ক্রীন টাইমকে সঠিকভাবে সীমাবদ্ধ রেখে, তাদের উন্নত ভবিষ্যতের দিকে একটি দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করা সম্ভব।        

নুসরাত

×