
ছবি সংগৃহীত
সুস্থ ও সুখী জীবনের জন্য প্রতিদিনের ছোট ছোট অভ্যাসগুলো বড় পরিবর্তন আনতে পারে। যারা ৭০ বছর বা তার বেশি বয়সেও প্রাণবন্ত। তাদের জীবনযাপনের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার জন্য নির্দিষ্ট কিছু অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে যেকোনো বয়সেই সুখী ও পরিপূর্ণ জীবনযাপন করা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু সহজ কিন্তু কার্যকর অভ্যাস প্রতিদিনের জীবনে যুক্ত করলে তা দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ ও প্রাণবন্ত জীবনযাত্রায় সাহায্য করে। নিচে এমন ৩০টি অভ্যাস তুলে ধরা হলো যা সুস্থ ও সুখী থাকার চাবিকাঠি হতে পারে:
প্রাণবন্ত থাকার ৩০টি সেরা অভ্যাস
১. সুস্থতার রুটিন তৈরি করা
প্রতিদিন অন্তত ৫ মিনিট এমন কিছু করুন যা আপনার মন ভালো করে। এটি ধীরে ধীরে ইতিবাচক অভ্যাস তৈরি করতে সাহায্য করবে।
২. সচেতনতা চর্চা করা
দিনের যেকোনো সময় মাত্র ৫ মিনিট ধ্যান বা গভীর শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস মানসিক প্রশান্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
৩. কৃতজ্ঞতার তালিকা করা
প্রতিদিন যে বিষয়গুলোর জন্য আপনি কৃতজ্ঞ, সেগুলো লিখে রাখলে মস্তিষ্কে ইতিবাচক অনুভূতির সৃষ্টি হয়।
৪. নেতিবাচক চিন্তাগুলো চিহ্নিত করা
মনকে নেতিবাচক চিন্তা থেকে মুক্ত রাখতে সচেতনভাবে ইতিবাচক চিন্তা গড়ে তুলতে হবে।
৫. নিয়মিত লিখে রাখা (জার্নালিং)
কলম ধরুন, যা মনে আসে তা লিখে ফেলুন। এটি মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
৬. আবেগের প্রতি যত্নশীল হওয়া
অভিজ্ঞতাগুলোকে দমন না করে, সেগুলো প্রকাশ করুন এবং সুস্থ উপায়ে সামলান।
৭. শরীরকে সক্রিয় রাখা
প্রতিদিন অন্তত ২০-৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন। এটি শরীর ও মনের জন্য দারুণ উপকারী।
৮. পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা
প্রক্রিয়াজাত খাবারের পরিবর্তে প্রাকৃতিক ও পুষ্টিকর খাবার খান।
৯. প্রতিনিয়ত শেখার অভ্যাস গড়ে তোলা
নতুন দক্ষতা অর্জন করুন, যা আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করবে।
১০. প্রাণীদের সঙ্গে সময় কাটানো
পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটালে মানসিক চাপ কমে যায় এবং ভালো অনুভূতি সৃষ্টি হয়।
১১. দয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা
অন্যদের প্রতি দয়া দেখানো মন ভালো রাখে এবং ইতিবাচক সম্পর্ক তৈরি করে।
১২. নিজেকে অনুপ্রাণিত করা
নিজের প্রতি ইতিবাচক কথা বলার অভ্যাস করুন, এটি আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করবে।
১৩. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা
সঠিক ঘুমের রুটিন মেনে চলা শরীর ও মনের জন্য অপরিহার্য।
১৪. সৃজনশীলতার চর্চা করা
লেখা, আঁকা, সংগীত, বাগান করা বা রান্নার মতো সৃজনশীল কাজ মানসিক প্রশান্তি আনে।
১৫. ক্ষমাশীল হওয়া
অন্যদের প্রতি ক্ষোভ না রেখে ক্ষমা করতে শেখা আত্মিক শান্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
১৬. সম্পর্কের যত্ন নেওয়া
প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন, এতে আত্মিক সমৃদ্ধি ঘটে।
১৭. হাসার অভ্যাস গড়ে তোলা
হাসি শুধু মনের প্রশান্তিই দেয় না, বরং শারীরিকভাবেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
১৮. মন শান্ত করা
যোগব্যায়াম বা ধ্যানের মাধ্যমে মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন।
১৯. প্রতিদিন নতুন কিছু শেখা
নতুন দক্ষতা অর্জন মানসিক বিকাশে সাহায্য করে।
২০. ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়া
বড় লক্ষ্যগুলোর দিকে ধীরে ধীরে ছোট ছোট পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যান।
২১. ডার্ক চকলেট খাওয়া
ডার্ক চকলেট মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং মন ভালো রাখে।
২২. ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখা
কঠিন পরিস্থিতিতেও আশার আলো খোঁজার চেষ্টা করুন।
২৩. সামাজিক যোগাযোগ বজায় রাখা
পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
২৪. কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা
ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা ইতিবাচক সম্পর্ক তৈরিতে সাহায্য করে।
২৫. প্রযুক্তি থেকে বিরতি নেওয়া
প্রকৃতির সান্নিধ্যে কিছুক্ষণ সময় কাটান, এতে মানসিক শান্তি আসে।
২৬. হাসিমুখে থাকা
হাসি মন ভালো রাখে এবং আশপাশের মানুষকেও আনন্দ দেয়।
২৭. রোদে সময় কাটানো
প্রতিদিন অন্তত ১৫ মিনিট রোদের আলোয় থাকলে শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি হয় যা মস্তিষ্কের জন্য ভালো।
২৮. স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে অংশ নেওয়া
অন্যদের সাহায্য করার মাধ্যমে নিজেরও ভালো লাগার অনুভূতি জন্মায়।
২৯. নিয়মিত সামাজিক সংযোগ রাখা
পরিচিতজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখলে মানসিক চাপ কমে।
৩০. নিজের সাফল্য উদযাপন করা
ছোট-বড় যেকোনো অর্জনকে উদযাপন করুন, এতে আত্মবিশ্বাস বাড়ে।
দীর্ঘ ও সুস্থ জীবনযাপনের জন্য এসব ছোট ছোট অভ্যাস দৈনন্দিন জীবনে গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো শুধু শারীরিকভাবে নয়, বরং মানসিকভাবেও শক্তিশালী করে তোলে। আজ থেকেই নিজের জীবনে এসব অভ্যাস যোগ করুন এবং দেখুন কীভাবে এটি আপনার জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে!
আশিক