
ছবি: সংগৃহীত।
পিরিয়ডস বা মাসিক ঋতুচক্র, মহিলাদের শরীরের একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। তবে অনেক সময়েই আমরা লক্ষ্য করি, আমাদের পিরিয়ডের তারিখ পূর্বনির্ধারিত সময়ের থেকে এগিয়ে বা পিছিয়ে যায়। এটি একটি সাধারণ ঘটনা, তবে অনেকেই এর পেছনের কারণ জানেন না। পিরিয়ডের তারিখ বদলানোর পিছনে নানা ধরনের শারীরিক এবং মানসিক কারণে প্রভাবিত হতে পারে, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের উপর নির্ভর করে।
পিরিয়ডের তারিখ পরিবর্তনের বেশ কিছু কারণ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে হরমোনের তারতম্য, জীবনযাত্রার স্ট্রেস, খাদ্যাভ্যাস, শরীরের ওজন, কিংবা অসুস্থতা। আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা বিশদভাবে জানব কেন পিরিয়ডের তারিখ এগিয়ে বা পিছিয়ে যায় এবং এর ফলে কী ধরনের প্রভাব হতে পারে।
১. হরমোনের তারতম্য
মহিলাদের শরীরে দুটি প্রধান হরমোন, ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন পিরিয়ডের নিয়মিততা নিয়ন্ত্রণ করে। হরমোনের মাত্রায় কোনো পরিবর্তন হলে পিরিয়ডের তারিখও পরিবর্তিত হতে পারে। বিশেষ করে, হরমোনের ঘাটতি বা অতিরিক্ততা শরীরে নানা ধরনের শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তন আনতে পারে।
২. স্ট্রেস
মনোযোগের অভাব, অফিসের চাপ, ব্যক্তিগত সম্পর্কের জটিলতা, কিংবা কোনো বড় ধরনের মানসিক চাপও পিরিয়ডের তারিখে প্রভাব ফেলতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, স্ট্রেস শরীরে কার্টিসোল হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা পিরিয়ডের তারিখ এগিয়ে বা পিছিয়ে দিতে পারে।
৩. খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রা
খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, অনিয়মিত খাবার, অথবা অতিরিক্ত ডায়েটিংও পিরিয়ডের তারিখে পরিবর্তন আনতে পারে। যদি শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি না পায়, তবে মাসিক ঋতুচক্রে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। এছাড়া ওজনের বৃদ্ধি বা হ্রাসও হরমোনের ভারসাম্যকে প্রভাবিত করে, যা পিরিয়ডের সময় পরিবর্তন ঘটাতে পারে।
৪. শারীরিক অসুস্থতা
কিছু রোগ যেমন থাইরয়েডের সমস্যা, পিসিওএস (পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম), বা ডায়াবেটিসও পিরিয়ডের তারিখের তারতম্যে ভূমিকা রাখতে পারে। এই ধরনের অসুস্থতাগুলো শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে, যা পিরিয়ডের সময়ের তারতম্য সৃষ্টি করতে পারে।
৫. ঔষধের প্রভাব
কিছু ঔষধ, বিশেষত জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বা হরমোন থেরাপি, পিরিয়ডের সময় পরিবর্তিত করতে পারে। এই ঔষধগুলো শরীরের হরমোনের ওপর প্রভাব ফেলে, যার ফলে পিরিয়ডের তারিখে কিছু পরিবর্তন দেখা যায়।
পিরিয়ডের সময় এগিয়ে বা পিছিয়ে যাওয়ার কিছু কারণ যেমন স্বাভাবিক হতে পারে, তেমনি এটি কখনও কখনও কোনও গুরুতর শারীরিক সমস্যার আলামতও হতে পারে। তাই যদি পিরিয়ডের সময় দীর্ঘদিন ধরে অস্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
নুসরাত