
ছবি: সংগৃহীত
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কাজের চাপ, পারিবারিক দায়িত্ব এবং নানান সামাজিক বাধ্যবাধকতা আমাদের শরীর ও মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপ কেবল মন নয়, শরীরের ওপরও মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক মানসিক চাপ থেকে সৃষ্ট কিছু সাধারণ শারীরিক সমস্যার কথা—
পেশির টান ও ব্যথা
মানসিক চাপের কারণে ঘাড়, কাঁধ ও পিঠের পেশি শক্ত হয়ে যেতে পারে, যা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অনেকে চোয়াল শক্ত করে রাখেন বা দাঁত আঁটকে ফেলেন, যা দীর্ঘমেয়াদে অস্বস্তি তৈরি করতে পারে।
মাথাব্যথা
চাপজনিত মাথাব্যথা বা টেনশন হেডেক অনেকেরই হয়। এটি মূলত ঘাড় ও মাথার পেশির টান থেকে সৃষ্টি হয়, যা মাথার চারপাশে টান অনুভূতি তৈরি করতে পারে।
হজমের সমস্যা
মানসিক চাপে থাকলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটি ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য বা বদহজমের কারণ হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও বেড়ে যায়।
হার্টবিট বেড়ে যাওয়া বা অনিয়মিত স্পন্দন
চাপের কারণে হৃদস্পন্দন দ্রুত হতে পারে বা অনিয়মিত মনে হতে পারে। এটি দীর্ঘমেয়াদে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। যদি নিয়মিত এমন সমস্যা হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
অনিয়মিত মাসিক
নারীদের ক্ষেত্রে মানসিক চাপের কারণে মাসিক চক্র অনিয়মিত হতে পারে। শরীর কঠিন সময়ে প্রজনন প্রক্রিয়াকে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সংকেত দেয়, যার ফলে মাসিক বন্ধ হওয়া বা বিলম্বিত হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার।
ঘুমের সমস্যা
চিন্তিত অবস্থায় থাকলে ঘুম আসতে দেরি হতে পারে বা ঘুমের মান খারাপ হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে এটি হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এমনকি ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
ওজন বৃদ্ধি
চাপের সময় অনেকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি খেয়ে ফেলেন। এতে শরীরে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়, যা ক্ষুধা বাড়ায় ও চর্বি জমতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি, ক্লান্তি ও মানসিক অবসাদ ব্যায়ামের প্রতি অনীহা তৈরি করতে পারে, যা ওজন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
যদি এসব উপসর্গ অনুভব করেন, তবে দ্রুত শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া জরুরি। দীর্ঘমেয়াদি চাপ এড়াতে জীবনযাত্রার পরিবর্তন আনতে হবে এবং প্রয়োজনে এক পা পিছিয়ে এসে মানসিক সুস্থতার দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
সূত্র: কেক মেডিসিন
মেহেদী কাউসার