![যে কাজগুলো করে ফেললে বুঝবেন জীবনযুদ্ধে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে আছেন যে কাজগুলো করে ফেললে বুঝবেন জীবনযুদ্ধে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে আছেন](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/10-2502121444.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
জীবনের বড় সাফল্য অনেক সময়ই নির্ভর করে কিছু সহজ অথচ গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাসের ওপর। কেউ কেউ এগুলো বুঝতে অনেক সময় নেন, আবার কেউ তা দ্রুত রপ্ত করে জীবনে আত্মবিশ্বাসের নতুন দ্বার উন্মোচন করেন।
আপনি যদি নিচের সাতটি বিষয়ে ইতিমধ্যে দক্ষ হয়ে থাকেন, তাহলে নিশ্চিতভাবেই জীবনের অনেক ক্ষেত্রে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন।
১. অপরাধবোধ ছাড়াই ‘না’ বলতে শিখেছেন
নিজের সীমাবদ্ধতা জানা এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা।
কখনো কি এমন হয়েছে যে, আপনি এমন কোনো কাজ বা প্রকল্প ফিরিয়ে দিয়েছেন যা আপনার মূল্যবোধের সঙ্গে মানানসই ছিল না? অথবা এমন কোনো অনুষ্ঠানে যাননি যা আপনার মানসিক শান্তির জন্য ক্ষতিকর হতে পারত?
‘না’ বলার ক্ষমতা আপনাকে মানসিকভাবে সুস্থ ও উজ্জীবিত রাখে এবং জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর প্রতি মনোযোগী হতে সাহায্য করে। একসময় আমি মনে করতাম, সবকিছুতে ‘হ্যাঁ’ বলা মানেই উদ্যমী ও উদার হওয়া। কিন্তু পরে বুঝেছি, এটি শুধু আমার মানসিক চাপ বাড়াচ্ছিল।
২. একটি নিয়মিত রুটিন তৈরি করেছেন
নিয়মিত অভ্যাস জীবনকে স্থিতিশীল রাখে। সকালে ঘুম থেকে উঠে একটি নির্দিষ্ট কাজ করা—যেমন বই পড়া, হাঁটাহাঁটি করা বা বিছানা গোছানো—সারাদিনকে সুসংগঠিত করে তোলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্থিতিশীল রুটিন মানসিক চাপ কমায় ও মনোযোগ বৃদ্ধি করে। আপনার রুটিন যত সহজই হোক না কেন, এটি যদি ধারাবাহিক হয়, তাহলে এর সুফল পাবেন।
৩. অন্তত একটি বড় ভয়কে জয় করেছেন
ভয় আমাদের অগ্রগতিকে আটকে রাখতে পারে। কিন্তু যদি কোনো একসময় আপনি নিজের সবচেয়ে বড় ভয়কে জয় করে থাকেন—যেমন জনসম্মুখে কথা বলা, ক্যারিয়ার পরিবর্তন করা বা একা ভ্রমণে বের হওয়া—তাহলে বুঝবেন আপনি অনেকদূর এগিয়ে গেছেন।
বিখ্যাত লেখক মার্ক ম্যানসন বলেছেন, “আমরা যত বেশি দায়িত্ব গ্রহণ করব, তত বেশি আমাদের জীবনের নিয়ন্ত্রণ থাকবে।” নিজের ভয়কে মোকাবিলা করাই আসল শক্তির প্রমাণ।
৪. কাউকে বা নিজেকে ক্ষমা করতে শিখেছেন
ক্ষমা করা সহজ নয়, কিন্তু এটি আমাদের মানসিক শান্তি ও সম্পর্কের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করে।
যদি কখনো আপনি কোনো বন্ধুকে বা নিজেকেই কোনো ভুলের জন্য ক্ষমা করে থাকেন, তাহলে এটি আপনার মানসিক পরিপক্কতার প্রমাণ।
৫. একটি কার্যকরী আর্থিক পরিকল্পনা তৈরি করেছেন
অর্থ নিয়ে সচেতন হওয়া মানসিক চাপ কমায়। এটি খুব বেশি জটিল হতে হবে না—আপনি যদি আয়ের একটি বাজেট পরিকল্পনা করে থাকেন অথবা নিয়মিত সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলে থাকেন, তাহলে আপনি ইতিমধ্যেই আর্থিকভাবে অনেক সুসংগঠিত।
হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আর্থিক চাপ মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই অর্থনৈতিক পরিকল্পনা আপনাকে সুস্থ ও আত্মবিশ্বাসী রাখবে।
৬. অন্তত একটি দক্ষতা অর্জন করেছেন
কর্মক্ষেত্রের পদবি পরিবর্তন হতে পারে, কিন্তু একটি ব্যক্তিগত দক্ষতা আপনাকে সারা জীবন সমৃদ্ধ করতে পারে।
যদি আপনি কোনো বাদ্যযন্ত্র বাজানো, কোডিং শেখা বা চিত্রাঙ্কনের মতো কিছু শিখে থাকেন, তবে এটি শুধু আপনাকে স্বতন্ত্র করে না, বরং ধৈর্য, সৃজনশীলতা এবং আত্মবিশ্বাস তৈরি করতেও সহায়তা করে।
৭. চাপ সামলানোর জন্য একটি স্বাস্থ্যকর উপায় খুঁজে পেয়েছেন
জীবন কখনোই নিঃশঙ্কট নয়, তাই মানসিক চাপ সামলানোর একটি উপায় থাকা খুবই জরুরি। এটি হতে পারে দৌড়ানো, যোগব্যায়াম, ছবি আঁকা বা লেখা—যে কোনো কিছু যা আপনাকে মানসিকভাবে প্রশান্তি দেয়।
যদি আপনি ইতোমধ্যে এমন কোনো অভ্যাস তৈরি করে থাকেন যা আপনাকে চাপ সামলাতে সাহায্য করে, তাহলে আপনি মানসিক সুস্থতার দিক থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছেন।
জীবনের প্রতিটি ছোট অর্জনই আমাদের সামগ্রিক সাফল্যের দিকে নিয়ে যায়। আপনি যদি এই সাতটির মধ্যে একাধিক বিষয় আয়ত্ত করে থাকেন, তবে বুঝে নিন, আপনি ইতোমধ্যেই মানসিকভাবে শক্তিশালী, আত্মবিশ্বাসী এবং সঠিক পথে রয়েছেন।
পরবর্তী লক্ষ্য কী হতে পারে? হয়তো নতুন একটি দক্ষতা অর্জন করা, আরেকটি ভয়কে জয় করা বা নিজের জন্য আরও বেশি সময় বের করা। আপনার ইতিবাচক পরিবর্তনই আপনাকে প্রতিদিন আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
দ্য ব্লগ হেরাল্ড থেকে অনূদিত
এম.কে.