![জীবনকে সুখময় করার ১৫টি সহজ কৌশল জীবনকে সুখময় করার ১৫টি সহজ কৌশল](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/6-25-2502120452.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
আপনার জীবনে বড় কোনো পরিবর্তনের চিন্তা বাদ দিন এবং ছোট পরিবর্তনগুলিকে সুখের শর্টকাট হিসেবে ভাবুন। ছোট ছোট পরিবর্তনই বড় সুখের ফল বয়ে আনতে পারে। সাম্প্রতিক গবেষণা দেখিয়েছে যে ঘুম, ব্যায়াম, পুষ্টি ও আচরণে "আপেক্ষিকভাবে ছোট পরিবর্তন" মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে।
এখানে রয়েছে ১৫টি সহজ জীবন পরিবর্তন কৌশল যা আপনাকে অনেক বেশি সুখী করবে
১. একজন পরামর্শদাতা (মেন্টর) হিসেবে নিজেকে তুলে ধরুন
আপনার অর্জিত দক্ষতা, প্রতিভা, অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান হয়তো এমন কারও জন্য মূল্যবান, যে সেগুলো শিখতে চায়। তাই অন্যকে সাহায্য করুন এবং জ্ঞানের ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন।
২. প্রতি সপ্তাহে তিনটি অনাবশ্যক জিনিস ফেলে দিন
আপনার আশপাশের অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কমিয়ে ফেলুন। প্রতি সপ্তাহে তিনটি করে জিনিস ফেলে দিলে বা দান করলে এক বছরে ১৫৬টি অপ্রয়োজনীয় জিনিস কমবে, যা জায়গা তৈরি করবে নতুন কিছুর জন্য। গবেষণা বলছে, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ঘুমের মান উন্নত করে, মনোযোগ বাড়ায় এবং মানসিক প্রশান্তি আনে।
৩. ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস পানি পান করুন
প্রতি দুই ঘণ্টা অন্তর আরও একটি গ্লাস পানি পান করুন। এক সপ্তাহের মধ্যেই আপনি নিজেকে অনেক বেশি প্রাণবন্ত অনুভব করবেন। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দিনে ১০ গ্লাসের বেশি পানি পান করেন, তারা নিজেদের বেশি সুখী, শক্তিশালী এবং সফল মনে করেন।
৪. কাজের চিন্তা অফিসেই রেখে আসুন
আপনার ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালেন্স বজায় রাখার জন্য দিনের শেষে অসমাপ্ত কাজগুলো নোট করে রাখুন এবং পরদিন কীভাবে শেষ করবেন তা লিখে ফেলুন। এতে কাজের চাপ কমবে এবং অফিসের সময় আরও কার্যকরী মনে হবে।
৫. প্রতিদিন ২০ মিনিট আগে ঘুমাতে যান এবং জেগে উঠুন
এই সময়টি ডায়েরি লেখা, হালকা ব্যায়াম বা বই পড়ার জন্য ব্যয় করতে পারেন। গবেষণায় দেখা গেছে, আগে ঘুমানো ও জাগার অভ্যাস মেজাজ ভালো রাখে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
৬. প্রতিটি কথোপকথন থেকে শেখার চেষ্টা করুন
প্রতিদিনের প্রতিটি আলাপে কিছু শেখার মানসিকতা রাখুন। গবেষণায় দেখা গেছে, বিভিন্ন অভিজ্ঞতা মানুষকে আরও সুখী করে এবং জীবনকে অর্থবহ করে তোলে।
৭. আপনি কীভাবে আচরণ করছেন, সে বিষয়ে সচেতন থাকুন
আপনার আবেগ ও মনোভাব অন্যদের প্রতিক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। যদি আপনি আত্মবিশ্বাসী থাকেন, তাহলে আশেপাশের লোকেরাও ইতিবাচকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে।
৮. বাস্তববাদী কিন্তু ইতিবাচক থাকুন
বাস্তবতা মেনে নেওয়ার পাশাপাশি আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি রাখুন। কোনো কিছুকে শুধুই নেতিবাচকভাবে না দেখে সম্ভাবনার দিকগুলোও বিবেচনা করুন।
৯. নিজের সিদ্ধান্তের দায়িত্ব নিন
আপনার সিদ্ধান্ত এবং তার পরিণতির জন্য অন্যকে দায়ী করবেন না। গবেষণায় দেখা গেছে, নিজের জীবন নিয়ে নিয়ন্ত্রণবোধ মানুষকে আরও আত্মবিশ্বাসী ও সুখী করে তোলে।
১০. সংযমকে আপন করুন
সুখী হতে হলে কোনো কিছুর চরমে না গিয়ে পরিমিতিবোধ বজায় রাখুন। গবেষণায় দেখা গেছে, সংযত জীবনযাত্রা মানুষকে দীর্ঘমেয়াদে আরও সফল ও সুখী করে তোলে।
১১. ভালো সিদ্ধান্ত গ্রহণের দিকে মনোযোগ দিন
প্রতিটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভাবুন। এটি কি আমাকে আমার লক্ষ্যের কাছাকাছি নিয়ে যাবে। এই ছোট অভ্যাসটি আপনার জীবনকে সহজ ও কম পীড়াদায়ক করবে।
১২. জোর করে কিছু অর্জনের চেষ্টা বন্ধ করুন
যা স্বাভাবিকভাবে ঘটতে চায়, সেটি হতে দিন। গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু জিনিস জোর করে অর্জন করতে গেলে তা অবশেষে নেতিবাচক ফল বয়ে আনে।
১৩. অপ্রয়োজনীয় প্রত্যাখ্যানের শিকার হবেন না
যে আপনাকে এড়িয়ে চলে, তার পেছনে না ছুটে নিজের প্রতি সম্মান দেখান। সব ধরনের গ্রহণযোগ্যতা খোঁজার চেষ্টা মানসিক শান্তি কমিয়ে দেয়।
১৪. "দয়া করে" এবং "ধন্যবাদ" বলার অভ্যাস করুন
ভদ্রতা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে আপনার সম্পর্কগুলো আরও সুন্দর হয়ে উঠবে। তাই প্রতিদিন এটির চর্চা করুন
১৫. জীবনকে ভালোবাসুন
উত্থান-পতনের মাঝেও জীবনের সৌন্দর্যকে উপলব্ধি করুন। গবেষণায় দেখা গেছে, কৃতজ্ঞতা অনুভব করা মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় এবং হতাশা কমায়।
এই ছোট ছোট পরিবর্তনগুলো আপনার প্রতিদিনের জীবনকে সহজ, প্রশান্তিময় এবং আরও সুখী করে তুলতে পারে।আজ থেকেই চেষ্টা করুন এবং দেখুন কীভাবে আপনার জীবন বদলে যায়!
ইসরাত জাহান