![মনে শান্তি নাই, হতাশা আর হতাশা, কি করবেন? মনে শান্তি নাই, হতাশা আর হতাশা, কি করবেন?](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/15-2502081918.jpg)
ছবি: প্রতীকী
বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশগুলোর তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করে থাকা দেশগুলোর নাগরিকরা কি সত্যিই সুখী? ফিনল্যান্ড টানা পাঁচ বছর ধরে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী দেশ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। দেশটির সবুজ প্রকৃতি, উন্নত অর্থনীতি, উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা এবং কম অপরাধ প্রবণতা একে স্বপ্নের দেশে পরিণত করেছে। তবুও, একটি বিস্ময়কর সত্য হলো, এই দেশটি আত্মহত্যার প্রবণতায় বিশ্বের ২১তম অবস্থানে রয়েছে!
সুইজারল্যান্ডও তৃতীয় সুখী দেশ হিসেবে পরিচিত। উন্নত জীবনযাত্রা, দারুণ ট্রেন ব্যবস্থা, বিখ্যাত সুইস ঘড়ি ও চকলেটের জন্য পরিচিত দেশটিতে সম্প্রতি আত্মহত্যাকে সরকারিভাবে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। এমনকি আত্মহত্যার জন্য বিশেষ কফিন এবং "সার্কো" নামের বিশেষ যন্ত্র উদ্ভাবন করা হয়েছে, যাতে একজন ব্যক্তি সহজেই নিজের জীবন বিসর্জন দিতে পারেন। আত্মহত্যার ইচ্ছা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ সংস্থাও গড়ে উঠেছে, যেখানে সদস্য ফি পরিশোধের মাধ্যমে আত্মহত্যার সহায়তা দেওয়া হচ্ছে!
প্রশ্ন হচ্ছে, এত সুখী দেশেও কেন মানুষ বাঁচতে চাচ্ছে না? কারণ একটাই—মানসিক প্রশান্তির অভাব। অর্থ, উন্নত জীবন, আর ভোগ-বিলাস মানুষের মানসিক শান্তি নিশ্চিত করতে পারছে না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার প্রবণতা নাস্তিকদের মধ্যে। অন্যদিকে, মুসলিমদের মধ্যে আত্মহত্যার হার সবচেয়ে কম। গবেষকরা বলছেন, ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে সম্পৃক্ততা মানুষের মানসিক স্থিতিশীলতা বাড়ায়।
এই বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয় জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার দিকে তাকালে। উন্নত প্রযুক্তি, ভদ্রতা ও শৃঙ্খলায় এগিয়ে থাকা এসব দেশের নাগরিকদের মধ্যেও আত্মহত্যার হার অত্যন্ত বেশি। এমনকি অস্ট্রেলিয়ায় বিশেষ "লাইফ ব্যাগ" তৈরি হয়েছে, যা ব্যবহারের মাধ্যমে সহজেই আত্মহত্যা করা সম্ভব!
বাংলাদেশের দিকেও নজর দেওয়া যাক। একসময় দেশে আত্মহত্যার হার কম থাকলেও, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে, করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছিল। গবেষণা বলছে, ধর্ম ও নৈতিকতার প্রতি দূরত্ব মানুষের হতাশাকে বাড়িয়ে তুলছে, যা শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেয়।
এ অবস্থায় মানসিক শান্তির জন্য করণীয় কী? ইসলামিক গবেষকরা বলছেন, নামাজ ও ঈমান মানুষকে হতাশা থেকে মুক্তি দিতে পারে। নবী মুহাম্মদ (সা.) বলতেন, "নামাজ হলো প্রশান্তির উৎস"।
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত নামাজ পড়েন ও ধর্মীয় অনুশীলন করেন, তাদের মধ্যে হতাশা ও আত্মহত্যার প্রবণতা তুলনামূলকভাবে কম থাকে।
মানসিক প্রশান্তির জন্য শুধু বাহ্যিক সাফল্যই যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন আত্মিক শান্তিও। তাই হতাশা থেকে মুক্তি পেতে ভোগবিলাসের পরিবর্তে আধ্যাত্মিকতার দিকে মনোযোগ দেওয়া জরুরি।
সূত্র: শায়খ আহমাদুল্লাহ (https://youtu.be/S3509hWqQPw?si=PAaTc7JF2tSSPRnW)
এম.কে.