ছবি: সংগৃহীত।
প্রোক্রাস্টিনেশন বা কাজকে পরে করতে ফেলে রাখার অভ্যাস একাডেমিক সাফল্যে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। পড়াশোনার কাজ প্রলম্বিত করা শুধু সময়ের অপচয়ই নয়, এটি মানসিক চাপও সৃষ্টি করতে পারে। তবে, কিছু সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করে এই বদভ্যাস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব এবং একাডেমিক ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করা যায়। নিচে কিছু কার্যকরী উপায় তুলে ধরা হলো, যা আপনাকে পড়াশোনায় মনোযোগী হতে এবং প্রোক্রাস্টিনেশন থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করবে।
১. ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন
যখন আপনি বড় কোন কাজের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন, তখন তা খুবই ভয়াবহ মনে হতে পারে। এর চেয়ে ভালো হলো, বড় কাজটিকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নিন। একবারে একটি ছোট কাজ সম্পন্ন করুন, তারপর পরবর্তীটি করুন। এইভাবে ধাপে ধাপে কাজটি এগিয়ে যাবে এবং আপনাকে কাজ শেষ করার প্রেরণা দেবে।
২. সময় নির্ধারণ করুন
বিশেষ সময়কে আপনার পড়াশোনার জন্য নির্ধারণ করুন এবং সেটি মেনে চলুন। সময়সূচী তৈরি করা একটি শক্তিশালী উপায়, যা আপনাকে প্রোক্রাস্টিনেশন পরিহার করতে সহায়তা করবে। সময় ভাগ করে কাজ করার ফলে আপনার মনোযোগ কেন্দ্রীভূত থাকে এবং সময় নষ্ট হয় না।
৩. সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করুন
আপনার পড়াশোনার পরিবেশকে মনোযোগের উপযোগী করে তুলুন। একটি শান্ত এবং নিরিবিলি জায়গা খুঁজে নিন, যেখানে আপনি সহজেই মনোযোগ দিতে পারবেন। এই পরিবেশে আপনার ফোন বা অন্য কোনো বিভ্রান্তি সরিয়ে রাখুন।
৪. নিয়মিত বিরতি নিন
প্রতিবছরের দীর্ঘ সময় ধরে একটানা পড়াশোনা করার চেয়ে, মাঝে মাঝে বিরতি নেওয়া অনেক বেশি কার্যকর। ২৫-৩০ মিনিট একটানা পড়াশোনা করুন এবং এরপর ৫-১০ মিনিটের বিরতি নিন। এইভাবে পড়াশোনার মান বাড়বে এবং আপনার মনোযোগ ধরে রাখতে সহায়তা করবে।
৫. স্বীকৃতি দিন এবং পুরস্কৃত করুন
যতটুকু কাজ আপনি সম্পন্ন করবেন, তা নিজে জানিয়ে দিন এবং একে একটি স্বীকৃতি হিসেবে দেখুন। কাজের শেষে নিজেকে ছোট ছোট পুরস্কার দিন। এটি আপনাকে আরও আগ্রহী করবে এবং পরবর্তী কাজের জন্য প্রেরণা জোগাবে।
৬. টেকনোলজি ব্যবহারে সাবধানতা
ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়া অনেক সময় পড়াশোনা করতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। আপনি যদি টেকনোলজি ব্যবহার করেন, তবে পড়াশোনার সময় সেটি বন্ধ করে রাখুন বা অ্যাপ ব্যবহার করার জন্য নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করুন।
৭. নিজের উদ্দেশ্য স্মরণ করুন
প্রতিদিন সকালে নিজের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য স্মরণ করুন। কেন আপনি পড়াশোনা করছেন, কীভাবে এটি আপনার ভবিষ্যতকে বদলাবে – এসব বিষয় মনে রাখলে আপনি আপনার কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে পারবেন।
৮. সঙ্গী বা গ্রুপে পড়াশোনা করুন
অনেক সময় একা পড়াশোনা করতে গিয়ে মনোযোগ নষ্ট হয়। তাই পড়াশোনার জন্য একে অপরকে সহযোগী হিসেবে নির্বাচন করুন। সঙ্গী বা গ্রুপে পড়াশোনা করলে, কাজটি সহজ এবং আনন্দদায়ক হয়ে ওঠে।
এই ৮টি পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনি প্রোক্রাস্টিনেশন পরিহার করতে পারবেন এবং একাডেমিক সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হবেন। তাই এখনই এই উপায়গুলো প্রয়োগ করুন এবং আপনার লক্ষ্য অর্জনে দ্রুত এগিয়ে চলুন!
নুসরাত