![যা করলে পাবেন সুখের ঠিকানা! যা করলে পাবেন সুখের ঠিকানা!](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/3-14-2502070828.jpg)
বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই কোথাও সুখী নন, না দেশে না বিদেশে। আমাদের জীবনে সুখ যেন এক চির অধরা বিষয়। আমরা মনে করি, এক বিশেষ পরিস্থিতি, স্থান বা অবস্থান নেই, কেবল সব পাওয়া সম্ভব। বাংলাদেশের মানুষের মনস্তত্ত্বেই চিত্রটি বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়।
দেশে থাকা মানুষটি বিদেশের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করে, আর বিদেশে থাকা মানুষ স্বদেশের মায়ায় জড়িয়ে পড়ে। এক ধরনের সুখের মোহ আমাদের জীবনের প্রতিটি স্তরে বিরাজমান। যখন আমরা দেশি পরিবেশে থাকি, তখন দৈনন্দিন সমস্যা যেমন অর্থনৈতিক চাপ, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সামাজিক চ্যালেঞ্জগুলোকে নিজেদের দুঃখের মূল কারণ হিসেবে ভাবি। এ সময় বিদেশে থাকা মানুষদের বিলাসবহুল জীবনের গল্প শুনে মনে হয়, হয়তো সেখানে প্রকৃত সুখ।
কিন্তু বাস্তবতা হলো, অন্য দেশের জীবনযাপনে রয়েছে নানান সীমাবদ্ধতা, যা হয়তো বাইরে থেকে বোঝা যায় না। যাঁরা জীবিকার তাগিদে মধ্যপ্রাচ্য বা ইউরোপে যান, তাঁদের অনেকেই শারীরিক পরিশ্রম, সাংস্কৃতিক দূরত্ব এবং একাকীত্বের মতো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন।
মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইউরোপের দিকে বা ইউরোপ থেকে লন্ডন, আমেরিকা বা ক্যানাডার প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি হয়, কিন্তু সেখানেও জীবনের চাপ কমে না। এর ফলে তাঁরা ভাবেন, দেশে
হয়তো শখ ছিল, এভাবে সুখ নামের মরীচিকার পেছনে ছুটতে ছুটতে জীবনকে এক সময়ে ছুটি দিয়ে দেয়।
অথচ সবটা হওয়ার কথা ছিল কেবল অনুধাবনের বিষয়। আসলে সুখের সন্ধান যেন এক মরীচিকার মতো। যেখানে যাই না কেন, মনে হয় অন্য কোথাও হয়তো আরও ভাল ছিল। কিন্তু এই দৌড়ে আমরা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হই যে, সুখ আসলে কোন নির্দিষ্ট স্থান বা অবস্থার উপরে নির্ভর করে না, এটি আমাদের মনোভাব, দৃষ্টিভঙ্গি এবং চিন্তার উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে।
কিন্তু সুখের আসল সংজ্ঞা কী? সুখ মানে সব কিছু পাওয়া নয়, বরং যা আছে তার জন্য কৃতজ্ঞ থাকা। আমাদের জীবনে প্রতিদিন অসংখ্য ছোটখাটো ভালো জিনিস ঘটে, যা আমরা উপেক্ষা করি। অথচ সুখের মূল মন্ত্র হল, এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলোতে আনন্দ খুঁজে নেওয়া।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তা'আলা বলেছেন, 'যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও, তবে আমি তোমাদের আরও দান করব।' সুখের জন্য সৃষ্টিকর্তার শুকরিয়া আদায় করা এবং নিজের বর্তমান অবস্থাকে মেনে নিয়ে পরিশ্রম করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সুখ খুঁজে নেওয়ার উপায়।"
আসলেই সুখ কী?
এক নম্বর হল, মনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করুন। জীবন সব সময় মসৃণ হবে না, কিন্তু সমস্যার মাঝেও ভালো কিছু খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করুন।
দুই নম্বর হল, অন্যের সাথে তুলনা করা বন্ধ করুন। অন্যের জীবনের বাইরের দিক দেখে ঈর্ষান্বিত হওয়া বন্ধ করুন। প্রতিটি জীবনের গল্প আলাদা।
তিন নম্বর হল, বর্তমানে মনোযোগ দিন। অতীত বা ভবিষ্যতের চিন্তা বাদ দিয়ে, বর্তমান মুহূর্তে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করুন।
চার নম্বর হচ্ছে -কৃতজ্ঞ থাকুন, যা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে শিখুন।
সুখ আসলে কোনও বাহ্যিক বিষয় নয়। এটি আমাদের মানসিকতার উপর নির্ভরশীল। আমরা যদি সবসময় অন্য কোথাও সুখের সন্ধানে ছুটে চলি, তাহলে জীবনের সেরা সময়গুলো মিস করে ফেলি। সুতরাং, সুখের জন্য নিজেকে পরিবর্তন করুন, দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক রাখুন এবং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকুন। জীবনকে মরীচিকার পেছনে ছুটে নয়, বরং তা উদযাপন করে সত্যিকারের সুখ খুঁজে পাবেন।
সূত্র: https://tinyurl.com/bde4nt9r
আফরোজা