ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ মাঘ ১৪৩১

মনের শান্তি হারিয়ে ফেলেছেন? এই ৭ অভ্যাসেই ফিরবে প্রশান্তি

অনলাইন রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০৯:১৯, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

মনের শান্তি হারিয়ে ফেলেছেন? এই ৭  অভ্যাসেই ফিরবে প্রশান্তি

ছবিঃ সংগৃহীত

আজকের ব্যস্ত জীবনে মানসিক চাপ আর ক্লান্তি যেন নিত্যদিনের সঙ্গী। কাজের চাপে দম ফেলারও সময় পাওয়া যায় না, আর তার সঙ্গে যোগ হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহার, ঘুমের অভাব এবং ব্যক্তিগত সময়ের সংকট। ফলে আমাদের মন যেন সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকে।

তবে কিছু ছোট কিন্তু কার্যকর অভ্যাস দৈনন্দিন জীবনে আনতে পারলে এই মানসিক ক্লান্তি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সম্প্রতি বিশেষজ্ঞরা এমনই কিছু স্বাচ্ছন্দ্য আনার কৌশল তুলে ধরেছেন, যা আমাদের মনকে প্রশান্ত ও সুস্থ রাখতে সহায়ক হতে পারে।

১. দিন শুরু হোক mindfulness দিয়ে

অনেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠেই ফোন হাতে নিয়ে ই-মেইল, সোশ্যাল মিডিয়া ও নোটিফিকেশন দেখতে শুরু করেন। এতে দিনের শুরুতেই মানসিকভাবে চাপে পড়ে যাই। কিন্তু দিনের শুরুতে কয়েক মিনিট নিজের সঙ্গে সময় কাটানো, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা বা নিরবতা পালন করা আমাদের মনকে প্রশান্ত করতে সাহায্য করে।

গবেষণা বলছে, mindfulness অনুশীলন মনোযোগ বাড়াতে, মানসিক চাপ কমাতে এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। তাই সকালে এক কাপ কফি নিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করা, প্রকৃতির শব্দ শোনা বা ধ্যান করা অভ্যাসে আনতে পারেন।

২. সীমানা নির্ধারণ করুন—না বলতে শিখুন

আমরা অনেক সময় অতিরিক্ত কাজের চাপে পড়ে যাই, কারণ আমরা "না" বলতে পারি না। অতিরিক্ত যোগাযোগ, কাজের বাড়তি চাপ এবং চারপাশের প্রত্যাশা আমাদের মানসিকভাবে ক্লান্ত করে তোলে। তাই নিজের জন্য স্পষ্ট সীমানা নির্ধারণ করা জরুরি।

যেমন, নির্দিষ্ট সময়ের পর অফিসের কাজ না করা, রাতে ফোনের নোটিফিকেশন বন্ধ রাখা এবং নিজের জন্য সময় বের করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্রাম নেওয়া কোনো অপরাধ নয়, বরং এটি কাজের দক্ষতা বাড়ায়।

৩. ডিজিটাল ডিটক্স করুন

আমাদের ফোন যেন সারাক্ষণ আমাদের সঙ্গে লেগে থাকে, আর আমরা অবচেতনভাবেই এটি বারবার চেক করি। সোশ্যাল মিডিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

তাই সময় সময় ডিজিটাল ডিটক্স করা দরকার। যেমন, প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট সময় ফোন ও ল্যাপটপ থেকে দূরে থাকা, টেক-ফ্রি উইকেন্ড পালন করা বা অন্তত ঘুমানোর আগে এক ঘণ্টা স্ক্রিন থেকে বিরত থাকা। এতে মন হালকা অনুভব করবে এবং চিন্তার ক্ষমতা বাড়বে।

৪. প্রকৃতির সান্নিধ্যে যান

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১২০ মিনিট প্রকৃতির মাঝে কাটালে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। হাঁটতে বের হওয়া, পার্কে বসে কিছুক্ষণ সময় কাটানো বা খোলা বাতাসে এক কাপ চা পান করাও মানসিক প্রশান্তির জন্য বেশ কার্যকর।

সকালের সূর্যালোক গায়ে মাখা, গাছের সবুজ দৃশ্য দেখা বা পাখির ডাক শোনা—এগুলো শুধু আমাদের মনকেই শান্ত করে না, বরং শরীরের জন্যও ভালো।

৫. লেখার অভ্যাস গড়ে তুলুন

অনেক সময় আমাদের মাথার মধ্যে হাজারও চিন্তা ঘুরতে থাকে, যা আমাদের দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করে তোলে। কিন্তু যখন আমরা আমাদের ভাবনা ও অনুভূতিগুলো লিখে ফেলি, তখন তা সহজ হয়ে যায়।

জার্নালিং বা লেখা শুধু চাপ কমায় না, বরং এটি আমাদের আবেগ বুঝতে সাহায্য করে এবং আত্ম-উন্নতির পথ তৈরি করে।

৬. নিজের প্রতি সদয় হোন

আমরা অনেক সময় নিজের ভুলের জন্য নিজেদেরই দোষারোপ করি। অথচ আমরা যদি আমাদের বন্ধুদের মতো নিজেদের সঙ্গেও সহানুভূতিশীল হই, তাহলে মানসিকভাবে অনেক ভালো থাকবো।

যখন আত্মসমালোচনা আসে, তখন নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন—"আমি কি আমার বন্ধুকে এমনভাবে কথা বলতাম?" যদি উত্তর না হয়, তাহলে নিজের সঙ্গে আরও বিনয়ী হওয়া উচিত। ছোট ছোট ভুলকে শিক্ষা হিসেবে নেওয়া এবং নিজেকে ক্ষমা করা মানসিক সুস্থতার জন্য জরুরি।

৭. বিশ্রামের গুরুত্ব বুঝুন

আজকের সমাজে বিশ্রামকে অলসতা মনে করা হয়, কিন্তু এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। পর্যাপ্ত ঘুম, কাজের মাঝে বিরতি নেওয়া এবং মানসিক বিশ্রাম নেও

জাফরান

×